ঋণের দায়ে নয়, অত্যাচার ও স্বামীর পরকিয়ায় আত্মহননের পথ বেছে নেয় শরিফা খাতুন

হরিণাকুণ্ডু ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃবাচ্চু মিয়া
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ১৪৪ বার পঠিত

 

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার গুপিনাথপূর গ্রামের গৃহবধু শরিফা খাতুন ঋণের দায়ে নয়, স্বামী সহ শশুর বাড়ীর লোকজন কতৃক মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনে এবং সৌদিআরবে থাকা কালীন তার স্বামী সাথে একটি চাকুরীরত প্রবাসী বাংলাদেশী মেয়ের পরকিয়ায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিলো শরিফা খাতুন। এ অভিযোগ সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরলেন মৃত শরিফার পিতা আমজেদ মন্ডল ও সম্পর্কে একাধিক ভাবী।
শরিফা খাতুন উপজেলার জোড়াদাহ মাঠপাড়া গ্রামের আমজেদ মন্ডলের মেয়ে এবং তাহেরহুদা ইউনিয়নের গুপিনাথপূর গ্রামের ওহাব লষ্করের ছেলে তুষার লষ্করের স্ত্রী ছিলেন।
শরিফার পিতা জানান, আমার মেয়ে শরিফা খাতুনের ১২ বছর পূর্বে গুপিনাথপূর গ্রামের তুষার লষ্করের সাথে বিবাহ হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই তার স্বামী তুষার সহ শশুর ওহাব লষ্কর শাশুড়ী রেবেকা খাতুন মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। একপর্যায়ে শিশির শরিফার মাথায় আঘাত করলে সে বেশী মাত্রায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। যে কারণে আমি আমার অসুস্থ মেয়েকে পাবনায় এক মানসিক ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করায় এবাং এ ঘটনায় আমার পরিবার ঝিনাইদহে আমলী আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে। এর মাঝে আমার জামাই বিদেশে পাড়ি জমাই। এক পর্যায়ে তার আংশিক সুস্থতা আসলেও কিছু দিন পরে আমার জামাই তুষার সৌদিতে থাকাকালীন সময়ে এক প্রবাসী বাংলাদেশি মেয়ের সাথে প্রেমের ঘটনা সহ ইমুতে তাদের একসাথে ছবি দেখে আবার বেশী মাত্রায় অসুস্থ হয়ে পড়ে,এবং মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। একপর্যায়ে আত্মহননের পথ বেছে নেয় আমার কলিজার টুকরো শরিফা। এই পরকিয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ইবি থানাধীন রাধানগর চরপাড়া গ্রামের সোহেল আহম্মেদ।
তিনি জানান ইমুতে ছবি দেখার পর শরিফা আমার বাড়ীতে তার নিজ ঘরে ঘুকে দরজা বন্ধকরে দেয়, একপর্যায়ে অনেক ডাকাডাকির পর দরজা না খুললে, আমরা বাড়ীর লোকজন দরজা ভেঙে ফেলি এবং আমার মেয়েকে ঘরের আড়াই ঝুলতে দেখি।
একই অভিযোগ তুলে ধরেন শরিফা থাতুনের একাধীক ভাবী,এছাড়াও ভাবীরা আরও জানায় চিকিৎসা পর প্রায় সুস্থতা আসলেও ইমুতে স্বামী তুষারের পরকিয়ার ছবি দেখে এবং তাদের প্রেমের কথা শুনে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে, তার অবস্থা এমনটি হয়েছিলো একপর্যায়ে তাকে লোহার শিকল দিয়ে বেধে রাখা হতো।

অপরদিকে তুষার সৌদিতে যাওয়ার সময় রেখে যাওয়া ঋণের বোঝায় অতিষ্ঠ হওয়ার কথা সহ ফলসী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান কতৃক সৌদিতে পাঠানো এবং সেখানে কোম্পানীর চুক্তি অনুযায়ী কাজ না পাওয়ার সপক্ষে বলেন, আমাকে প্যানেল চেয়ারম্যান মনির ভাই ঢাকায় অবস্থিত মেসার্স এম এস জামাদার এন্ড সাঈদ ওভার রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে সৌদিআরবে রিয়াদ শহরে জোসার আল ইমদাদ ক্লিনার সার্ভিসে পাঠায়, সেখানে চুক্তি অনুযায়ী একমাস আট দিন পর কাজে যোগদান করতে না পেরে একসাথে থাকা খলিলের সাথেনিয়ে ঐ কোম্পানী থেকে কাউকে না বলে চলে যায় এবং একই শহরে একটি পেন্টিং কোম্পানীতে রং করার কাজে যোগদান করি।
ওখানে মাসিক বেতনে নয় কাজ করলে পয়াসা দিত তারা,তেমন পোশাচ্ছিলো না।
প্রতিদিনের মত একদিন খাবার খেতে বাইরে হোটেলে যায় এবং সৌদি পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায়। পরে চলতি বছরে ১২ নভেম্বর ঐ দেশের পুলিশ আমাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়।

বিদেশ ফেরত তুষারের অভিযোগের বিপরিতে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ফলসী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মনির সাংবাদিকদের জানান,আমি নিজে বিদেশে কাউকে পাঠায় না, যেহেতু আমি দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলাম বিধায় তুষার আর্থীক উন্নয়নে বিদেশে চাকুরী করতে যাওয়ার জন্য আমাকে ধরে, অনেকদিন ঘোরাঘুরির পর আমি তুষারকে ঢাকায় নয়াপল্টনে অবস্থিত মেসার্স এম এস জামাদার এন্ড ওভারসিজ রিক্রুটিং এজেন্সির সাথে যেগাযোগ করিয়ে দিই।
মেসার্স এম এস জামাদার এন্ড সাঈদ ওভারসিজ রিক্রুটিং এজেন্সির আর এল নং-১৭৯৩
তিনি আরও জানান তুষার সৌদিতে রিয়াদ শহরে জোসার আল ইমদাদ ক্লিনার সার্ভিসে চুক্তি অনুযায়ী নব্বই(৯০) দিনের মধ্যে আকামা সহ কাজে যোগদান করবে, কিন্তুু তার আগেই আঠাশ(২৮) দিনের মাথায় সে খলিলকে নিয়ে ঐ কোম্পানীর কতৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে পালিয়ে যায়, এরপর কয়েকদিন যেতে না যেতেই তুষার সৌদি পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর খলিল পূর্বের কেম্পানী জোসার আল ইমদাদ ক্লিনার সার্ভিসে ফিরে আসে এবং চুক্তির নির্ধারিত সময়ের আগেই আকামা সহ একই শহরে ঐ কোম্পানীর আন্ডারে বার্গার সপে ক্লিনার হিসাবে যোগদান করে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর