ঢাকা, ২২ জুলাই- বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানকে বয়কট করেছে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১৮টি সংগঠন। এখন থেকে চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট কোনো অনুষ্ঠানে জায়েদকে কেউ আমন্ত্রণ জানাতে পারবেন না, তিনিও কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবেন না। যে আমন্ত্রণ করবেন, তাকেও একঘরে করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে ১৮ সংগঠন।
গত বুধবার (১৫ জুলাই) দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের জহির রায়হান কালার ল্যাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান চলচ্চিত্রের উন্নয়নে কাজ না করে ব্যক্তিস্বার্থে নিজের পরিচয় ব্যবহার করছেন।
চলচ্চিত্র পরিবারের দাবি, জায়েদ খান অন্য শিল্পীদের হয়রানি করেন, মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে ক্ষমতার দাপট দেখান। তার কাজের সমালোচনাকারীকে সমিতির সদস্যপদ বাতিলসহ নানাভাবে ক্ষতির চেষ্টা করেন।
এদিকে রোববার (১৯ জুলাই) বিএফডিসির গেটের সামনে মিশা-জায়েদের পদত্যাগ চেয়ে রাস্তায় নামেন শিল্পী সমিতির ভোটাধিকার হারানো ১৮৪ জন শিল্পী। সেদিন বেলা সাড়ে ১১টায় এসব শিল্পী এফডিসির গেটে মানববন্ধন করেন। সেই সঙ্গে ‘যে নেতা শিল্পীদের সম্মান করে না, তাকে আমরা চাই না’ স্লোগান দিয়ে ভোটাধিকার ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি মিশা-জায়েদের পদত্যাগ দাবি করেন।
মিশা-জায়েদের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন শিল্পী সমিতির বর্তমান কমিটির সব সদস্য। দুই ভাইস প্রেসিডেন্ট রুবেল ও ডিপজল ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারির পাশে থাকার। মিশা-জায়েদকে সমর্থন দিয়ে চলচ্চিত্রের স্বার্থে সবরকম বিভাজন ত্যাগ করে সবাইকে মিলেমিশে চলার পরামর্শ দিয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন, অঞ্জনা সুলতানা, সাদেক বাচ্চু, নৃত্য পরিচালক মাসুম বাবুলসহ আরও অনেকে।
ইন্ডাস্ট্রি ক্রমেই এই ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। এর সমাধান কী? কোথায় গিয়ে শেষ হবে চলচ্চিত্রের মানুষদের দ্বন্দ্ব, সেটাই এখন ভাবছেন সবাই। একে একে এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে মুখ খুলছেন অনেক তারকা। সে ধারাবাহিকতায় এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেন একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী ও শিল্পী সমিতির সাবেক নেতা চিত্রনায়িকা পপি। লিখেছেন অরণ্য শোয়েব-
কথার শুরুতেই পপি জানান শিল্পী সমিতির নেতৃত্বে থাকার সময়কার চাপা কিছু কষ্টের কথা। অতীতের স্মৃতিচারণও করলেন। তিনি বলেন, এফডিসি নির্মাণ করেছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার স্বপ্নের জায়গায়ই আজকের এই ফিল্ম ইন্ড্রাস্টি দাঁড়িয়ে। অথচ সেখানে আজ অযোগ্য লোকের নেতৃত্বে জিম্মি চলচ্চিত্রের শিল্পী ও তাদের সমিতি।
দেখুন আমরা সবাই স্বাধীন দেশের নাগরিক। কেউই কিন্তু পরাধীন নয় এবং স্বৈরাচারী বিষয়টির সাথে কোনোভাবেই রিলেটেড না। তাহলে পরাধীনতা কিংবা স্বৈরাচারিতা সিনেমায় চলছে কেন? এই দুটি শব্দ যেন আর এখানে উচ্চারিত না হয় সেটাই আমার প্রথম চাওয়া।
গত কয়েক দিন ধরেই মনটা ভিষণ খারাপ। ইন্ডাস্ট্রি এমনিতেই ভালো না। তার ওপর শুরু হয়েছে স্বৈরাচারদের মানসিক অত্যাচার। চলছে বিক্ষোভ। একজন শিল্পী থাকবে নরম মনের। এখানে দেখা যাচ্ছে পাষণ্ডদের রাজত্ব। যারা নিজেদের স্বার্থকেই বড় করে তুলেছে, সিনেমা হয়ে গেছে গৌণ।