কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় ক্লিনিকের সিজারের বিল পরিশোধ করতে না পারায় নিজের নবজাতক সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মোছা. শিরিনা আক্তার (৩৬) নামের এক মায়ের বিরুদ্ধে। পরে ওই শিশুকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে উলিপুর থানা পুলিশ।
বুধবার (৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান থেকে নবজাতক শিশুটিকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, রাজারহাট উপজেলার মনারকুটি গ্রামের মো. হাবিবুর রহমানের সঙ্গে উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের কর্পুরা গ্রামের শিরিনার বিয়ে হয় প্রায় বছর খানেক আগে। বিয়ের তিনমাস পর শিরিনা গর্ভবতী হলে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে পারিবারিক দ্বন্দ্বে অভিমানে শিরিনা বাবার বাড়ি চলে যায়। সেই ক্ষোভে হাবিবুর রহমান স্ত্রীকে আর ঘরে তোলেনি। শিরিনার সঙ্গে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় হাবিবুর। গত ২৩ মার্চ উলিপুর উপজেলার ডক্টর’স ক্লিনিকে শিরিনা আক্তার সিজারের মাধ্যমে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। স্বামী খোঁজ-খবর না নেওয়ায় বাধ্য হয়ে সিজারের টাকা পরিশোধের জন্য গত ২৬ মার্চ অজ্ঞাত স্থানে একমাত্র নবজাতক সন্তানকে বিক্রি করে দেয় শিশুটির মা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ ঘটনা বাবা হাবিবুর রহমান জানতে পেরে বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরের দিকে নবজাতক সন্তানকে ফিরিয়ে পেতে উলিপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উলিপুর থানা পুলিশের একটি দল পার্শ্ববর্তী রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান ইউনিয়নের রামশিং মুন্সিপাড়া এলাকার নিঃসন্তান দম্পতি সেলিনা বেগমের কাছ থেকে নবজাতক শিশুটিকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়।
এ সময় জানা যায়, এক লাখ টাকায় নবজাতককে কিনে নিয়েছেন তারা। পরে নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্কের মাধ্যমে নবজাতককে উদ্ধার করে তার প্রকৃত পিতা-মাতার কাছে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ।
উলিপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মর্তুজা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শিশুটিকে উদ্ধারের পর পারভীন বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন। অন্যদিকে সন্তানকে ফিরে পেয়ে আনন্দিত তার বাবাসহ তাদের আত্মীয় স্বজনেরা। এছাড়াও তাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দীর্ঘদিনের বিবাদ ছিল। সেটিও মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে।