গত ২১মে ২০২১ (বৃহস্পতিবার) রাত আনুমানিক দশটার দিকে কুষ্টিয়া শহরের মঙ্গলবাড়িয়া’তে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক গৃহবধূকে বটি দিয়ে কুপিয়ে জখম এর অভিযোগ উঠেছে কথিত সাংবাদিক রাকিব ও তার স্ত্রী খুশির বিরূদ্ধে।
আহত গৃহবধূর নাম রজনী। তিনি শহরের মঙ্গলবাড়িয়ার নাসির উদ্দিন রতনের স্ত্রী। আহত গৃহবধূ রজনী জানান, সাংবাদিক রাকিবের ভাড়াটিয়া বাসায় তার স্ত্রী খুশির কাছে ফ্রিজে ৩ পোয়া দুধ রাখতে গেলে ঘটনার সূত্রপাত হয়। খুশিরা আজীবন আমার বাড়ির ফ্রিজে সকল জিনিসপত্র রেখে আসছিল। গত কিছুদিন আগে তারা ফ্রিজ কিনেছে। আমি ওনার বাসায় দুধ রাখতে গেলে উনি আমাকে বলেন, আমার বেশি বিদ্যুৎ বিল উঠে যাবে আমি রাখতে পারব না। কথাটিতে কষ্ট পেয়ে সেটা আমি আবার আমার বোনকে ফোন করে বলি। কথাগুলো পাশ থেকে শুনে তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে।
এর কিছুক্ষণ পর তিনি তার ননদদেরকে ফোন করে ডেকে এনে আমাকে ধারালো বটি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপ মারে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে কামোর মারা সহ মাথায় জোরে আঘাত করে। তারা সাংবাদিক, তাদের অনেক ক্ষমতা। তাই তারা আমার উপর অমানুষিক নির্যাতন করেছে। তিনি আরো জানান, আমি চিকিৎসা নেয়ার জন্য স্বামীর সাথে করে হাসপাতালে গেলে সেখানেও তারা আমার স্বামীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হসপিটালের ইমার্জেন্সির সামনে এসে দলগতভাবে হামলা চালায় এতে আমার স্বামী মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। রজনীর স্বামী নাসির উদ্দিন রতন জানান, রাত আনুমানিক সাড়ে নয়টার দিকে আমার স্ত্রী আমাকে ফোন দিয়ে জরুরীভাবে বাসায় আসতে বলে।
আমি তৎক্ষণাৎ বাসায় গিয়ে দেখি দুধ রাখাকে কেন্দ্র করে পাশের বাড়ির কথিত সাংবাদিক রাকিবের স্ত্রী খুশির সাথে আমার স্ত্রীর কথা কাটাকাটি হচ্ছে। আমি দুজনকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি ঠান্ডা করে আবার বাইরে চলে আসি।
এর পরবর্তীতে খুশি তার ননদদেরকে ফোন করে তাদের বাসায় ডেকে আনে এবং আমার বাসার সামনে এসে পুনরায় আমার স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শুরু করে। গালিগালাজ সহ্য করতে না পেরে আমার স্ত্রী বাইরে গিয়ে তাদেরকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করলে তারা সংঘবদ্ধভাবে আমার স্ত্রীকে আক্রমণ করে এবং তাকে ধরে নিয়ে রাকিবদের বাসার ভেতরে নিয়ে যায়। তাদের বাসায় নিয়ে গিয়ে আমার স্ত্রীকে ধারালো বটি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানোর কারণে আমার স্ত্রীর কানের পাশে বড় ধরনের ক্ষত তৈরি হয়েছে এবং হাতের আংগুলে কামড় দেবার কারণে আঙ্গুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাছাড়া আমার স্ত্রীর মাথায় তারা জোরে আঘাত করায় বেশ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। বিষয়টি শোনার পরে আমি বাসায় গিয়ে দেখি আমাদের বাসায় নাই। ঠিক তখনই আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে থানাতে গিয়ে হাজির হই।
থানা থেকে আমাদেরকে বলা হয় আগে চিকিৎসা নিন এরপর থানায় আসলে আমরা মামলা নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এরপর আমার স্ত্রীকে সাথে করে চিকিৎসা দেবার জন্য আমি তাকে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। ইমারজেন্সি বিভাগে আমার স্ত্রীর চিকিৎসা চলাকালীন সময় হঠাৎ করেই রাকিব সহ অপরিচিত আরো ৫/৬ আমার উপরে অতর্কিত হামলা চালায়। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা আমাকে বেধড়ক মারপিট করে।
এ সময় আমার অসুস্থ স্ত্রী এবং উপস্থিত পুলিশের সদস্যরা এগিয়ে এসে ওদের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করে। তারপর তারা আমাকে বলে “বের হ, তারপর তোকে দেখছি” এবং “দেখ কোথা থেকে কোথায় নি, তারপর দেখি তুই কার বাল ছিরিশ” বলতে বলতে হুমকি দিতে দিতে বের হয়ে চলে যায়। এছাড়া তারা ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে “তার বউকে বিরক্ত করার” মিথ্যা বদনাম দিতে থাকে আমাকে। বর্তমানে আমি নিরাপত্তা হীনতায় আছি। আগামীকাল আমার স্ত্রী একটু সুস্থ হলো থানায় গিয়ে মামলা দায়ের করবো বলে তিনি জানান।