কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে জাসদ ছাত্রলীগ নেতা নাইফ আহমেদ তুষারকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। ৫ এপ্রিল শুক্রবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়নের গোলাপনগর বাজারে প্রকাশ্যে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে রাত সাড়ে ১০টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত নাইফ আহমেদ তুষার মোকারিমপুর ইউনিয়ন জাসদ ছাত্রলীগের সহসম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন ও গোলাপনগর কদমতলা এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ড জাসদের সভাপতি রবিউল ইসলামের ছেলে। ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহুরুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, নাইফ আহমেদ তুষার গোলাপনগর বাজারে রাত ৮টার দিকে দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় ১২ থেকে ১৫টি মোটরসাইকেল চায়ের দোকানে সামনে এসে দাঁড়ায়। প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ জনের একদল দুর্বৃত্ত মোটরসাইকেল থেকে নেমেই তুষারকে চায়ের দোকানের মধ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপাতে থাকে। একপর্যায়ে তুষার দৌড় দিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে বাজারের মধ্য প্রকাশ্যে তারা আবারও কুপাতে থাকে। এ সময় স্থানীয়রা ছুটে আসলে রাস্তায় ফেলে রেখে দুর্বৃত্তরা চলে যায়। এতে তুষারের পায়ে, হাতে, বুকে ও মাথাসহ ও শরীরের বিভিন্ন অংশে রামদার আঘাতে মারাত্মক যখম হয়। পরে স্থানীয়রা আহত তুষারকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানের চিকিৎসকরা আহতের অবস্থা অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১০ টার দিকে নাইফ আহমেদ তুষার মারা যান।
ভেড়ামারা উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়ন জাসদের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান বেনজির আহমেদ বেনু বলেন, রাত ৮টার দিকে নাইফ আহমেদ তুষার গোলামনগর বাজারের একটি চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় প্রায় ১৫ টি মোটরসাইকেলে ৪০ থেকে ৪৫ জনের একদল সন্ত্রাসী এসে তুষারকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে চলে যায়। জানতে পেরেছি, তারা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাজাহান আলীর ফকিরাবাদ বাসভবনে ইফতার মাহফিল থেকে এসে হামলা চালিয়ে আবার সেখানেই ফিরে যায়। তিনি আরও বলেন, আসামিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ঘটনা তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাজাহান আলীর মোবাইল ফলে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। ওসি মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনা খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। তিনি আরও বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত বলতে পারব। পুলিশ এলাকায় সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।