কুষ্টিয়ায় জেলাতে প্রথম বারের মতো তৃতীয় লিঙ্গের কোনো মানুষ জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হলেন। গত বুধবার অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য পদে নির্বাচিত হন মোছা: পায়েল খাতুন। তিনি ১ হাজার ৬২৩ ভোট পেয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিলকিস নাহার পেয়েছেন ১ হাজার ৩৬০ ভোট। নির্বাচিত পায়েল খাতুন কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের বেলঘড়িয়া গ্রামের মো. লিয়াকত আলীর সন্তান।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, পায়েল আগে পুরুষ ছিলেন। পুরুষ থাকাকালীন তার নাম ছিল হেলাল। হঠাৎ করেই পায়েলের শরীরে পরিবর্তন দেখা দিলে ২০১০/২০১১ সালে কলকাতায় গিয়ে লিঙ্গ পরিবর্তন করেন। পায়েল সব সময় মানুষের বিপদে পাশে থেকে সহযোগীতা করে গেছেন। যে কারণে এলাকায় তার জনপ্রিয়তা অনেক বেশী থাকায় নির্বাচনে ব্যাপক ভোটে জয়লাভ করেছেন।
নব নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি পায়েলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার মনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, যারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি অনেক আগে থেকেই সমাজের গরীব দুখী মানুষের সেবা করে আসছি। এই নির্বাচনে জনগন ভোট দিয়ে আমাকে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করেছেন। আমি সুখে-দুঃখে সব সময় এলাকাবাসীর পাশে থাকার চেষ্টা করব। এলাকার উন্নয়নে যথাসাধ্য চেষ্টার পাশাপাশি সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের জীবন-যাত্রার মানোন্নয়নে যথাসাধ্য চেষ্টা থাকব।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইদুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, কুষ্টিয়া জেলায় তৃতীয় লিঙ্গের কোনো মানুষ নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম। তবে ইতিপূর্বে ঝিনাইদহ জেলার কোন এক ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থী চেয়ার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিল। তবে পায়েল খাতুনের নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।