কথা কাটাকাটির জেরে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা একই কলেজের এক ছাত্রকে দফায় দফায় মারপিট করে। এসময় ওই ছাত্র প্রাণ ভয়ে কলেজ মধ্যে থেকে পালিয়ে কলেজের সম্মুখে অবস্থিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রবেশ করে পিছনের গেট দিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় ছাত্রলীগের ২০ থেকে ২৫ জন নেতাকর্মী সেখানে প্রবেশ করে এবং ওই ছাত্রকে না পেয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভাংচুর করে। ২৭ তারিখ মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের সামনের ন্যাশনাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড মেডিকেল সার্ভিসেস নামের প্রতিষ্ঠানে এঘটনা ঘটে।
কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা বলেন, কথা কাটাকাটির জেরে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ভিতরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সামনে এক ছাত্রকে মারপিট করছিলেন কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় ওই ছাত্র দৌড়ে ন্যাশনাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভিতরে আশ্রয় নেয়। তার পিছু নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রবেশ করলে ওই ছাত্র পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পদ প্রত্যাশী ফেরদৌস, সিনিয়র সহ সভাপতি শাওন, চিত্র, ফারদিন, শাওন, টিপু, হৃদয়ের নেতৃত্বে প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন ২০ থেকে ২৫ জন ক্ষিপ্ত হয়ে ডায়াগনস্টিকের চেয়ার-টেবিল, দরজা ভাঙচুর করে।
ক্লিনিক মালিক সজল পাল বলেন, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ লীগের কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন আমাদের ডায়াগনস্টিকে প্রবেশ করে এবং ব্যাপক ভাংচুর করে। এতে আমাদের প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ডায়াগনস্টিক এসোসিয়েশনের সভাপতি রতন ডাক্তার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আমরা তিনজন। চিকিৎসক সাইদুল হাসান জনি আমাদের ডায়াগনস্টিকের চেয়ারম্যান, ডায়াগনস্টিক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আরাফাত জামান তপন এবং আমি সজল পাল। যারা আমাদের ক্লিনিকে ভাঙচুর করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব।
কুষ্টিয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টার এসোসিয়েশনের সভাপতি আমিনুল হক রতন বলেন, যারা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ভাঙচুর করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার সুজন বলেন, দুপুর দেড়টার-দুইটার দিকে ছাত্রলীগের ২০ থেকে ২৫ জন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রবেশ করে এবং ২০মিনিট ধরে কাচের দরোজা, চেয়ার, টেবিল সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাংচুর করে। অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজ ছাত্রলীগ নেতা ফেরদৌস বলেন, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের দুই ছাত্রের কথা কাটাকাটি হয়েছে। ভাংচুরের বিষয়টি আমি জানি না। এ ঘটনার সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নাই। আমি বাইরে আছি।
এবিষয়ে কথা বলার জন্য কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কাজী মনজুর কাদির ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ এর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তারা রিসিভ করেননি। কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ফিজিক্স বিভাগের প্রাধান অধ্যাপক লাল মোহাম্মদ এবং ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রধান অধ্যাপক রেজাউল করিম জানান, তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের দুই ছাত্রের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। পরে এঘটনায় এক ছাত্রকে মারপিট করা হয়। তবে ওই ছাত্রদের নাম আমাদের জানা নেই। পরে জানা যাবে। কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ভিডিও ফুটেজ দেখা হয়েছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।