কুষ্টিয়ায় ৪টি আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরী ও কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রউফ। মিরপুর উপজেলার চেয়ারম্যান পদ থেকে ত্যাগ করে কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র নিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিন। এদিকে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য মনোনয়নপত্র নিয়েছেন কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা আনোয়ার আলীর ছেলে পারভেজ আনোয়ার তনু। বিশ^স্ত সূত্রে জানা গেছে কুষ্টিয়ায় ৪টি আসনেই নৌকার মাঝিদের পরাজিত করতে দলীয় নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন তুলেছেন। তবে দলীয় কোন্দলে বিপাকে পড়তে পারেন নৌকার মাঝিরা।
জেলা আওয়ামীলীগ সুত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম সারোয়ার জাহান বাদশাহ। তিনি আসন থেকে একবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। তিনি আবারও নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন। অপরদিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল হক চৌধুরী ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আফাজ উদ্দিনকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তিনি এই আসনে টানা তিনবার মহাজোটের শরিক থেকে সংসদ সদস্য হয়েছেন। অপরদিকে এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে সদ্য পদত্যাগ প্রাপ্ত কামারুল আরেফিন। তিনি এবারই প্রথম দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।
কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসন থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। তিনি এই আসন থেকে টানা দুইবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। অর্থাৎ তিনি ২০১৪ সালের ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৩ আসন থেকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে প্রথম বারের মত জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত ১১তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ১৮তম কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রথম বারের মত তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদ লাভ করেন। ২০১০ সাল হতে ২০১৩ সাল পর্যন্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আবারও নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন। অপরদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ার তনু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন তুলেছেন। তিনি ছাত্রলীগ ও যুবলীগের রাজনীতি করেছেন। বর্তমানে কোনো পদে নেই। তিনি এবারই প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। তবে তাঁর বাবা আনোয়ার আলী আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ও তুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র।
কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ এই আসন থেকে একবার সংসদ সদস্য হয়েছেন। তিনি আবারও নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন। অপরদিকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রউফ কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসন থেকে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। আবদুর রউফ কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা।