শিক্ষা অফিসার রমজান আলী আকন্দ গত ছয় মাস আগে যোগদান করেন কুষ্টিয়া জেলা শিক্ষা অফিসে। জেলা শিক্ষা অফিসে যোগদান করেই দূর্ণীতির আতুরঘর বানিয়েছেন অফিসটিকে। ইতি মধ্যেই তার বিরুদ্ধে পাহাড় সমান দূর্ণীতি তৈরী করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি সপ্তাহে দুই-তিন দিন অফিস করেন অবশিষ্ঠ দিনগুলো অফিস করেন তারা নিজ বাড়ী বগুড়ায়। তার এই অনুপস্থিতির জন্য হয়রানীর শিকার হচ্ছেন বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষক, শিক্ষিকা ও কর্মচারীরা। যে কারনে সরকারী নির্দেশনা মেনে কাজ নির্দিষ্ঠ সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারছেন না ভুক্তভোগী শিক্ষক শিক্ষিকা ও কর্মচারীরা। সম্প্রতি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মনোহরদিয়ায় একটি স্কুলে বেশ কয়েকটি পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ৪ লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহনের বিষয়টি নিয়ে মিডিয়াতে সংবাদ প্রকাশিত হলে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। শুধু একটি স্কুলেই নয় প্রতিটা স্কুলের শিক্ষক, কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে ডিজির প্রতিনিধি হিসাবে জন প্রতি লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি।
তিনি যে দুই-তিন দিন কুষ্টিয়াতে থাকেন ঐ দিন গুলোতে তিনি বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। বিদ্যালয়ে গিয়ে তার ড্রাইভারের মাধ্যমে তেল খরচ বাবদ ৫/৬ আদায় করেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। অন্যদিকে বিদ্যালয়ের ক্লাস রুমে ঢুকে ছাত্র-ছাত্রীদের সংগে অশ্লীল ভাষায় কথা বার্তা বলেন এবং শিক্ষদের সংগে খারাপ আচরন করেন। ইতি মধ্যে অনেকে তাকে পাগল ডিইও বলে আখ্যায়িত করেছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। একজন জেলা শিক্ষা অফিসারের যদি এমন আচরণ হয় তাহলে তার অধীনে প্রধান শিক্ষক, শিক্ষক ও কর্মচারীর মান সম্মান বজায় রেখে কাজকর্ম করা নিয়ে নানা রকম প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ রমজান আলী আকন্দ মাস ছয় হলো এখানে এসেছে। প্রথম থেকেই তিনি অফিস করেন না। সপ্তাহে দুই তিনদিন অফিস করেন কিন্তু ঐ দুই তিনদিন সে বিভিন্ন স্কুলে টুরে যায়। সেখানে গিয়ে তিনি বিভিন্ন তদন্তের কথা বলে হুমকি দিয়ে ড্রাইভারের মাধ্যমে প্রতি স্কুল থেকে ১০ থেকে ২০ হাজার আদায় করেন। এনটিআরসির মাধ্যমে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীদের অনলাইনের বেতনের আবেদনে মোটা অংকের অর্থ গ্রহনেরও অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয় বিকেল ৪ ঘটিকার পর থেকে তিনি আর অফিসে বসেন না।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষা অফিসের তৃতীয় তলায় অতিথিদের রাত্রি যাপনের জন্য যে রুমগুলো আছে সেখানেই তিনি একটি কক্ষে কোনভাবে দুই তিন দিনের জন্য থাকেন বাকি দিন থাকেন বগুড়ায়। সরকারি অফিসে থেকেও তিনি মূল বেতনের সাথে বাসা ভাড়ার টাকাও তুলে নিচ্ছেন। একাধিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে জেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সচিব বরাবর দরখাস্ত দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। খুব শীঘ্রই কুষ্টিয়া জেলার সব প্রধান শিক্ষক নিয়ে একটি মিটিং করবো জেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে তার অবৈধ কার্যকলাপের ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য।
সরেজমিনে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করতে ৫/৬ দিন ধরে জেলা শিক্ষা অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি সব সময় বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষা অফিসের কর্মচারীরা। অবশেষে না পেয়ে তার মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি অফিসেই আছি আপনারা আসেন। এমন উত্তরে জানানো হয় আমরা আপনার অফিসে বসে আছি, তখন তিনি জানান, আমি ভিজিটে আসছি মিরপুর ও কুমারখালীতে। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায় নাই।