মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রামনগর গ্রামের আনছার আলীর ছেলে সাজেদুল ইসলাম ও ভোলারদাড় গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে কালামের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন মিলে কৃষকের ২২বিঘা জমির কলাই জোর পূর্বক কেটে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার ভোরে সাজেদুল ও কালামের নেতৃত্বে ক্ষেতের কলাই কেটে নিয়ে গেছে বলে জানান ভুক্তোভোগি গাংনীর মৃত ইয়াকুব মোল্লার ছেলে জাকির হোসেন ও গাড়াডোব হঠাৎপাড়ার মৃত পাঞ্জাব আলি বিশ্বাসের ছেলে আবেদুল হক।
আনুমানিক আড়াই লাখ টাকার ফসল কর্তন করে প্রতিপক্ষরা নিয়ে যায় বলে তারা অভিযোগ করেন।
উপজেলার বালিয়াঘাট,ব্রজপুর গ্রামের জনৈক মৃত রজব আলী,ও রহমান বিশ্বাস,হারেজ বিশ্বাসের নামে রামনগর মৌজায় তাদের নামীয় আর এস খতিয়ান ১৭২, ১২৮৩, ১৭৩ ও ৩৫২,আর এস দাগ নং ২৯৫৬, ৩২৭১, ২৯৫৮, ৩১৫৮ এই দাগে ৯ একর ১৪ শতক জমি হারেজ আলীর ওয়ারিশ ইনতাদুল হকের নামে প্রচলিত আছে বলে জানান ভুক্তোভোগিরা ।
ভুক্তোভোগি জাকির হোসেন জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ আমাদের রেকর্ডীয় সম্পত্তিতে ফসল চাষ করলে
উপজেলার রামনগর গ্রামের সাজেদুল ইসলাম,ও কালামের নেতৃত্বে মোবারক মন্ডলের ছেলে আবুল কাশেম,আজিজুল ইসলামের ছেলে আমজাদ হোসেন,হামিদুল ইসলাম,আঃ সাত্তারের ছেলে আরিফহোসেন,আফসার আলীর ছেলে নাজিমুদ্দিন চৌকিদার, মল্লিক মিয়ার ছেলে আফফান আলী, মনজেত কামারের ছেলে আব্দুল মান্নান, সমের আলীর ছেলে সমসের আলী, চাঁদ চৌকিদারের ছেলে আব্দুল বারী, ইয়াছিন আলীর ছেলে কামাল হোসেন, নিয়াত আলির ছেলে আঃ ছাত্তার ও তার ছেলে আশরাফুল ও আবদুল, কলিমদ্দিনের ছেলে আলমগীর, আবুল কাশেমের ছেলে রবকুল, আনছারের ছেলে সাজেদুল, মোফাজ্জেল মিয়ার ছেলে লাভলু, আফ্ফানের ছেলে কুদরত, শরিফুল ও ইনতাজ, খইমদ্দিনের ছেলে মন্টু, হাশেম আলির ছেলে লালন, আমজাদের ছেলে মামুর এবং শমসেরের ছেলে রুবেল প্রতিদিন রাতে ফসল তসরুপাত ও ফসল চুরি করে কেটে নিয়ে যায়। এর প্রতিবাদ করলে তারা হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে।
ভুক্তোভোগিরা আরও বলেন, আমাদের জমি সাজেদুল ও কালাম গংদের গ্রামে এবং বাড়ীর পাশে হওয়ায় প্রতিবার তারা জমির ফসল কর্তন ও জমির উপর নানা প্রকার অত্যাচার করেন।
ফসল কাটার বিষয়টি নিষেধ করলে তারা হত্যার হুমকি দিয়ে বলে,এটা সরকারী খাস জমি এই জমিতে আসলে খবর আছে।
ফসল কর্তন ও জমির উপর নানা অত্যাচারের কারণে ইতিপৃর্বে গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করা হয় বলে জানান ভুক্তোভোগিরা। অভিযোগের ভিত্তিতে উভয় পক্ষকে নোটিশ করে বিষয় নিয়ে শুনানী ও তদন্ত হয়।
তদন্তে বিনিময় দলিল,ভিপি অবমুক্তিপত্র আর এস রেকর্ড আনুসাঙ্গীক কাগজপত্র বিবেচনা করে নালিশী জমিতে আরএস রেকর্ডীয় মালিকগণের স্বত্ত¦ বিদ্যমান থাকায় এ বিষয়ে গাংনী থানায় উভয় পক্ষে ৩শ’ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে আপোষ মিমাংসার পরিপ্রেক্ষিতে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ১১জুলাই ২০১৯ইং তারিখে স্মারক নম্বর ০৫.৪৪.৫৭৪৭.০০০.০৪.০১৭.১৯- নিদের্শ দেন তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষ্ণু পদ পাল।
গাংনী থানার তৎকালীন ওসি হরেন্দ্রনাথ সরকার উভয় পক্ষকে গাংনী থানায় ৩শ’ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করত আপোষ মিমাংসায় কোন ধরণের ফসল কর্তন বা অত্যাচার করবেনা মর্মে অংগীকারবদ্ধ করেন।
সে অঙ্গিকার ভঙ্গ করে সাজেদুল ও কালাম গংরা আবারও বৃহস্পতিবার ভোরে ২২বিঘা জমিতে থাকা কলাই ক্ষেত জোর করে কেটে নিয়ে গেছে।
এ ব্যপারে গাংনী থানায় অভিযোগ করলে ওসি ওবাইদুর রহমান উভয় পক্ষকে নিয়ে শালিস করে ক্ষেতের কলাই ফেরত দেওয়ার জন্য সাজেদুল ও কালাম গংদের নির্দেশ দেন।
এ নির্দেশনার পরও তারা ফসল এখন পর্যন্ত ফেরত দেয়নি বলে জানান ভুক্তোভোগিরা।
জানতে চাইলে গাংনী থানার ওসি ওবাইদুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এব্যাপারে গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা রহমান বলেন, জমির মিমাংসার বিষয়ে অবগত নই।
তবে আগের কর্মকর্তা যদি ফসল কর্তন বা ফসল তসরুপাত করবে না মর্মে আপোষ মিমাংসার নির্দেশ দিয়ে থাকে এবং আবারও যদি কেউ ফসল কর্তন করে তাহলে বিষয়টি তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুত্রঃ মেহেরপুর প্রতিদিন