ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ৩নং তাহেরহুদা ইউনিয়নে বয়স্ক-বিধবা ভাতার কার্ড তৈরিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগীরা বলেছেন,এমনকি টাকার বিনিময়ে সে মৃত হলেও চলবে।
জানা যায়, বয়স্ক ভাতা পেতে পুরুষের ক্ষেত্রে বয়স সর্বনিম্ন ৬৫ বছর এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে বয়স সর্বনিম্ন ৬২ বছর হতে হবে,তবে সর্বোচ্চ বয়স্ক ব্যক্তিকে অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে। শুধু তাই নয় বিধবা, তালাক প্রাপ্তা, বিপত্নীক,নিঃসন্তান,পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ব্যক্তিদেরকেও অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
ডিজিটালের মারপ্যাঁচে,ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সমাজের কঠোর বাস্তবতায় মেলে-নি পোলতাডাঙ্গা গ্রামের তালাক প্রাপ্তা পাখীর একটি পরিতাক্তা ভাতার কার্ড। আবার যখন সন্ধান পেল দিতে হলো টাকা,
২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার নোট।
টাকা দিলেই মিলে যাবে ভাতার কার্ড এমনটাই জানালেন ভুক্তভোগী স্বামী পরিতাক্তা পাখী খাতুন।
পোলতাডাঙ্গা গ্রামের মৃত গঞ্জের মন্ডলের সহধর্মিণী ফাতেমা খাতুন দেশের কন্ঠ প্রতিনিধিকে জানান,
একটি কার্ডের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেও যখন কোনও সুফল মেলেনি তখন অনলাইনে আবেদন নেয়া হচ্ছে শুনে আমিও একটা আবেদন করলাম। কিছুদিন পরেই ইউপি চেয়ারম্যান জানান কাগজপত্র জমা দিতে হবে,আমাদের ডাকলেন,আমি গেলাম,কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের গেলে সচিব আমার কার্ড লেখার জন্য ১৫০ টাকা এবং অনলাইনের নামে ৫০ টাকা দিতে হবে বলে জানান। কোনও উপায়ান্তর না পেয়ে একটি কার্ডের আশায় এই টাকা দিলাম।তবে আজ থেকে আনুমানিক ৬ -৭মাস আগে হাঁস-মুরগী বিক্রি করে ৫০০ টাকা দিয়েছিলাম,দিনের পর দিন শুধু টাকা আর টাকা দিলাম আমার কার্ড হবে কিনা যানি না।
পোলতাডাঙ্গা গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী হালিম খাতুন জানান, আমার স্বামী মারা গেছে ১৩ বছর,একটি বিধবা ভাতা কার্ডের জন্য আমি পদক্ষেপ এনজিও থেকে টাকা তুলে ৫০০ শত টাকা দিয়েছিলাম,আবার আজ ও কার্ড লেখার জন্য ১৫০ টাকা এবং অনলাইনের নামে ৫০ টাকা দিতে হলো।আমার কার্ড হবে তো? এমনটা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে অশ্রুঝরা কণ্ঠে কান্নায় ভেংগে পড়েন এই অসহায় নারী।
করিম মণ্ডলের ছেলে পাখী ভ্যান চালক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন,বয়স্ক ভাতা একটি কার্ডের জন্য আমি পরিষদে গেলে আমাকে বলেন, মরা লোকের কার্ড দেবো বলে সচিব আমার কাছ থেকে ৫০০ টাকা চাইলে আমি রেগে ক্ষোভে চলে আসি।
পোলতাডাঙ্গা গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তার আলী বলেন,ঘুষ খেয়েও আমাদের নামে কার্ড করে,আবার অনেকেই আছে অর্থ সম্পত্তি থাকা সত্তেও ভাতা কার্ড বহন করছে।শুধু ৫ জন ভুক্তভোগীই নয় ৩নং তাহেরহুদা ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে রয়েছে এমন দূর্নীতির ছোয়া ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের দাবী,অনিয়মের দিক থেকে তাহেরহুদা ইউনিয়ন রয়েছে শীর্ষে।
ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মনজুর আলম( মনজের)এসব অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করে বলেন, ফাতেমা খাতুনের অভিযোগের কোন সত্যতা নেই।কিছু লোক আছে সামনে ভোট তারা আমার কাছ থেকে টাকা- পয়সা,সুযোগ- সুবিধা না পাওয়ায় এমন অভিযোগ করে বেড়াচ্ছে,যা ভিত্তিহীন।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শিউলী রানী বলেন, এখনো পযন্ত কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বয়স্ক-বিধবা ভাতার ক্ষেত্রে দূর্নীতি মেনে নেওয়া যাবে না