কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বিদ্যালয়ে ধুমপান করাকে কেন্দ্র করে জিনিয়া খাতুন নামের সপ্তম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার কয়া ইউনিয়ন এর সুলতানপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। এবং মঙ্গলবার শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মানববন্ধন করার সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে মারপিট করে এলাকাবাসী। নিহত শিক্ষার্থী কয়া ইউনিয়ন এর বানিয়াপাড়া গ্রামের জিল্লুর রহমান এর মেয়ে জিনিয়া খাতুন (১২)। সে সুলতানপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল।
নিহতের নানা সাবেক ইউপি সদস্য গাজিরুল ইসলাম জানান, গত সোমবার তার নাতনী জিনিয়া সহ তার সহপাঠী রিজিয়া নাজনীন আশা, অনামিকা খাতুন ও লিনা সুইটি প্রীতি সুলাতানপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাদে ধুমপান করার সময় শিক্ষার্থী সহ অফিসের কর্মচারী দেখে শিক্ষকদের জানায়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মশিউর রহমান লাল্টু সহ অন্যান্য শিক্ষকদের কাছে নিয়ে গেলে তাদের ভিডিও ধারণ করা হয় এবং অবিভাবকদের বিষয়টি জানানোর হুমকি দেওয়া হয়। এই ঘটনায় জিনিয়া বিদ্যালয় থেকে বের হয়ে পদ্মা নদীতে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে এলাকাবাসী উদ্ধার করে তাকে বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়িতে অবস্থানকালীন সময়ে সুযোগ বুঝে বিকেল ৫ টার দিকে জিনিয়া তার বসত ঘরের ডাবের সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। ময়নাতদন্তের পর বিকেলে মঙ্গলবার জিনিয়ার মরদেহ এলাকায় নিয়ে আসলে। এলাকাবাসী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে জিনিয়ার আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে মানববন্ধন করে। এসময় সুলতানপুর মাহাতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ বিশ্বাস ঘটনাস্থলে গেলে বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে মারপিট করে।
এ বিষয়ে সুলতানপুর মাহাতাবিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মশিউর রহমান লাল্টু জানান, স্কুলের শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের কাছে জিনিয়া সহ তার সহপাঠীদের ধুমপানের বিষয়টি জানার পর তাদের অবিভাবদের মোবাইল নাম্বার চাইলে না দেওয়ায় স্কুল ব্যাগ রেখে দেওয়া হয় এবং অবিভাবকের সাথে স্কুলে আসতে বলা হয়। পরবর্তীতে জানতে পারি যে জিনিয়া আত্মহত্যার করেছে। তবে ধুমপান করার ভিডিওর বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
কুমারখালী থানার ওসি মো. আকিবুল ইসলাম জানান, সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে ধুমপান করার বিষয় নিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী মানববন্ধন করাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঘটনাস্থলে আসলে তাকে মারপিট করা হয়। থানা পুলিশ তাৎক্ষনিক বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বর্তমানে পরিবেশ স্বাভাবিক আছে।