ভারত মহাসাগরে গোপন সামরিক ঘাঁটি দিয়াগো গার্সিয়ায় ছয়টি বি-৫২ স্ট্রাটোফোরট্রেস দীর্ঘ-পাল্লার বোমারু বিমান পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
শুক্রবার ভোরে মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানের প্রভাবশালী জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার পরে উত্তেজনার মধ্যেই এমন খবর এসেছে।-খবর আরটির
সোমবার অজ্ঞাত কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের বারবারা স্টার এক প্রতিবেদনে বলেন, নির্দেশ দেয়া হলে ইরানের বিরুদ্ধে অভিযানে প্রস্তুত এসব বোমারু বিমান।
যদিও এই প্রতিবেদক বলেন, এই বোমারু বিমান মোতায়নে অভিযানের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে কোনো ইঙ্গিত বহন করছে না।
সামরিক বিমান পর্যবেক্ষকদের সহায়তায় এই ঘটনা সামনে চলে এসেছে। লুইজিয়ানায় বার্কসডালে বিমান বাহিনীর ঘাঁটি থেকে দুটি বোমারু বিমান উড়াল দেয়ার ঘটনা শনাক্ত করতে পেরেছেন তারা।
চলতি সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যে চার হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েনের পরে এই ছয়টি যুদ্ধবিমান মোতায়েনের খবর পাওয়া গেল। সোলাইমানিকে হত্যার ঘটনায় ইরান প্রতিশোধের ঘোষণা দিলে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা নতুন মাত্রায় চলে গেছে।
তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের এটাই একমাত্র বোমারু বিমান মোতায়েনের ঘটনা না। এর আগে গত বছরের মে-তে আল উদায়েদ বিমান ঘাঁটিতে চারটি দূরপাল্লার বোমারু পাঠিয়েছিল দেশটি।
পেন্টাগনের বরাতে মেইল অনলাইনের খবরে জানা গেছে, ইরানের নিকটবর্তী মধ্যপূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। কিন্তু ইরানের দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের আওতায় বাইরে রাখতেই দিয়াগো গার্সিয়ায় এসব বিমান মোতায়েন করা হয়েছে।
১৮ শতকে ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল দিয়াগো গার্সিয়া। নারিকেল চাষ করতে সেখানে আফ্রিকান দাসদের নিয়ে আসা হয়েছিল। ১৮১৪ সালে দ্বীপটি ব্রিটেনের কাছে ছেড়ে দেয়া ফ্রান্স। ১৯০৩ সালে এটি মরিশাসের সঙ্গে একীভূত করা হয়।
পরবর্তীতে ১৯৬৫ সালে মরিশাস থেকে চাগোস দ্বীপকে আলাদা করে ফেলে ব্রিটেন। বিনিময়ে তাদের তিন কোটি ডলার দেয়া হয়েছে। বছর তিনেক পরে দেশটি স্বাধীন হয়ে গেলে দ্বীপটি ব্রিটিনের নিয়ন্ত্রণেই থেকে যায়। যদিও এটির বৈধ মালিকানা মরিশাসের।
ব্রিটেন এটাকে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল নামে আখ্যায়িত করে। ১৯৬৬ সালে ৫০ বছরের জন্য দ্বীপটিকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইজারা দেয় ব্রিটিশরা। ১৯৬৮ থেকে ১৯৭৩ সালের মধ্যে দ্বীপটি থেকে দুই হাজার চাগোসকে উচ্ছেদ করে তাদের মরিশাস ও সিসিলিসে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।