দীর্ঘ ২২ বছরের সংসার জীবনে একটি দিনের জন্যও স্বামী স্বাধন দাস(কালু) তার স্ত্রী অনিতা বিশ্বাসকে একটি দিনের জন্যও শান্তিতে থাকতে দেননি বলে অভিযোগ করেছেন অনিতা বিশ্বাস। ২২ বছর সাংসারিক জীবনে তাদের গোল জুড়ে আসে দুটি সন্তান। বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে ও ১৫ বছরের একটি ছেলে আছে। কিন্তু যৌতুকলোভী, শারীরিক নির্যাতনকারী ও মাদক সেবী মোটরসাইকেল মেকানিক স্বামী কালুর অত্যাচারে ঘর ছাড়তে বাধ্য হয় অনিতা বিশ্বাসকে। ২২ বছর ধরে কালু তার স্ত্রীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেন তার স্ত্রী। এমনকি কালো তার পরিবারের সদস্য মিলে মেরে হাসপাতালে পাঠিয়েছিল একসময় তার মাথায় ৪৬ টি সেলাই পর্যন্ত লেগেছিল বলে অনিতা বিশ্বাস প্রতিবাদককে জানায়।
অবশেষে কোন উপায়ান্তর না পেয়ে সুষ্ঠু বিচারের আশায় অনিতা বিশ্বাস মোকাম কুষ্টিয়াবি ও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে গত ১৪/০৩/২৩ তারিখে ২০১০ সালের পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইনে ১৩, ১৪, ১৫ (৭), ১৬ (৫), ২১, (২) ধারায় মোতাবেক নালিশি মোকাদ্দমা দায়ের করেন। মামলা করার পরে তার ওপর নেমে আসে আরও বিপর্যয়। তৎকালীন হিন্দু আইনে তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিল। মামলা চলমান থাকা অবস্থায় এরই মাঝে গত ২৯/০৫/২৩ তারিখে কালু নতুন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করেছিল মামলা চলমান থাকা অবস্থায় স্ত্রী অনিতা বিশ্বাস মেনে নিতে না পেরে দুপুরে ছুটে যান তার বাড়ি কুষ্টিয়া শহরের বাবর আলী গেট এর নিজ বাসভবন।
কালুর বাসায় গেলে তার শারীরিক নির্যাতন চালায় তার পরিবারের লোকজন। অনিতা বিশ্বাসের গত ২৯/০৫/২৩ তারিখের অভিযোগের কপি হুবহু তুলে ধরা হলো, আমি অনিতা বিশ্বাস (৩৩), স্বামী- স্বাধন দাস(কালু), সাং- বাবর আলী গেইট, থানা ও জেলা- কুষ্টিয়া। অত্র থানায় হাজির হইয়া এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করিতেছি যে, বিবাদী ১) স্বাধন দাস কালু (৩৭), ২) বাবুল দাস (৪২), উভয়পিতা- মৃত দেবেন্দ্র নাথ দাস, ৩) তাপস দাস (২৫), পিতা- গোপাল চন্দ্র দাস, সর্ব সাং- বাবর আলী গেইট, থানা ও জেলা- কুষ্টিয়া। উক্ত ১ নং বিবাদী সম্পর্কে আমার স্বামী এবং ২ নং বিবাদী সম্পর্কে আমার ভাসুর, এবং ৩নং বিবাদী প্রতিবেশী দেবর, উক্ত ২ নং এবং ৩নং বিবাদীর কু-পরামর্শে আমার স্বামী ২য় বিবাহ করতে চায় এই মর্মে আমি তাকে বাধা দিলে সে আমার উপর অত্যাচার করে এবং আমার মারধর করে। আমার ০১ টি ছেলে এবং ০১ টি মেয়ে রয়েছে। আমাকে তালাক দিয়ে পূনরায় বিবাহ দিতে চাই। এই মর্মে বিগত ০৩ (তিন) মাস পূর্বে আমি কোর্টে একটি মামলা দায়ের করিয়াছি। তারই ধারাবাহিকতায় ইং ২৯/০৫/২০১৩ ইং তারিখে আমার স্বামীকে বিবাহ করার জন্য মেয়ে পক্ষ বাড়িতে আসলে আমি সেখানে গিয়ে বিবাহ ভঙ্গ করে দিতে গেলে উপরোক্ত ১, ২ ও ৩নং বিবাদী আমাকে অনেক মারধর করে, আমার গলায় থাকা ০৬ (ছয়) আনি সোনার চেইন তারা কেড়ে নেয় এবং আমার সাথে থাকা ব্যাগ ছিড়ে ফেলে এমনকি আমাকে গলা ধরে বাড়ি থেকে ধাক্কা মেরে বের করে দেয়। এমতাবস্থায় আমি নিরুপায় হয়ে বিবাদীর বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করিলাম। বিষয়টি নিয়ে অনিতা বিশ্বাস এর একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে।
তিনি সদর থানার কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, উপরোক্ত বিষয়ের উপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে আপনার সদয় মর্জি হয়। এ বিষয়ে আজকে মডেল থানায় যোগাযোগ করা হলে তদন্ত কর্মকর্তা জানান বিষয়টি নিয়ে আমরা অতি দ্রুতই বসব সমাধানের লক্ষ্যে।