মুক্তিযোদ্ধার লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরও ব্যবস্থা নিল না গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা আরএম সেলিম শাহনেওয়াজকে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রকার ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা (অবঃ সার্ভেন্ট) মোহাম্মদ আতাউল হক। তিনি গত ২৩ নভেম্বর গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগে তিনি যা লিপিবদ্ধ করেন,(তার হুবহু কপি) বরাবর,গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, গাংনী মেহেরপুর। বিনীত নিবেদন এই যে, আমি সার্জেন্ট মোঃ আতাউল হক(অবঃ) বীর মুক্তিযোদ্ধা, মৃত ইউসুফ আলী, সাংঃচর গোয়াল গ্রাম, ডাকঘরঃমটমুড়া থানাঃগাংনী,জেলাঃমেহেরপুর। এই মরা নদীর উত্তর সীমানায় আমার প্রায় ২ একর জমি আছে। এছাড়াও চরগোয়াল গ্রাম,নওদা মটমুড়া, ছাতিয়ান,বাওট, পুরাতন ও মোহাম্মদপুর এই ছয় গ্রামের লোকজন নদীর তীরে প্রায় ১’শ একর জমিতে চাষাবাদ করে। কিন্তু বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে নদীর পানি ভরপুর হয়ে ইরি আবাদ পানির নিচে তলিয়ে যায় এবং বোরো আবাদ করা সম্ভব না। মরা নদী ও মাথাভাঙ্গা নদীর সাথে চেঁচনিয়া খাল সংযুক্ত থাকায় খালের পশ্চিম সীমানায় একটি সুইচ গেট আছে। এই মরা নদী বর্ষাকালে খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশন করে মাথাভাঙ্গা নদীতে পড়ে। কিন্তু অবৈধ মৎস্য শিকারের প্রতিবন্ধকতায় সুইচ গেট দিয়ে পানি নিষ্কাশন করতে পারছে না। যাহার ফলে চাষিরা আমন বীজতলা,তোলা ওবোরো আবাদে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে আসছে। এমত অবস্থায় আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করি। অতএব, হুজুরের নিকট আমার আকুল আবেদন উপরোক্ত বিষয়ের আলোকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আপনার সদয় মর্জি হয়। নিবেদক,মোঃ আতাউল হক(অবঃ সার্জেন্ট), বীর মুক্তিযোদ্ধা, চর গোয়াল গ্রাম,গাংনী,মেহেরপুর মোবাইল নম্বর…….
মোঃআতাউল হক(অবঃ সার্জেন্ট)বীর মুক্তিযোদ্ধা জানান, নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর দেশকে স্বাধীন করেছিলাম একটু শান্তিতে বসবাস করার জন্য। এই দেশের জন্য আমরা যুদ্ধ করে এনেছি স্বাধীনতা কিন্তু সে স্বাধীনতার স্বাদ এখন আমরা আর পারছি না এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে আমার লিখিত অভিযোগে কোন প্রকার কর্ণপাত করেনি।তিনি আরো জানান মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ব্যবস্থা নেয়নি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তাই আশা ছেড়ে দিয়েছি।
মোঃআতাউল হক(অবঃ সার্জেন্ট)বীর মুক্তিযোদ্ধা এর কথা মত সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, চেঁচনিয়া খালে কিছু অবৈধ মৎস্যশিকারি মাটি দিয়ে ভরাট করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে যাতে পানি বের না হয়ে যেতে পারে। একদিকে যেমন হাজার হাজার কৃষকের ইরি-বোরোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন আবাদি জমি পানির নিচে তলিয়ে আছে। এই বাঁধ অপসারণ এখন সময়ের দাবি।
নাম প্রকাশ করা যাবে না এমন শর্তে একজন জানান, মোহাম্মদপুর গ্রামের অবৈধ মাত্র চাষিরা রাজনৈতিক দলের ক্ষমতাধারী হয় তাদের বিরুদ্ধে কথা বলাও সম্ভব হয় না। তিনি আরো জানান পুরাতন বড়াইগ্রামের মৎস্যচাষী তোফায়েল হোসেন নদীর মাঝে মাটি দিয়ে ভরাট করে বা তৈরি করেছে। যাতে এক স্থানের পানি অন্য স্থানে যেতে না পারে। আর এসব বলে কি লাভ ওদের বিরুদ্ধে কেউ কখনো ব্যবস্থা নিতে পারবে না।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরএম সেলিম শাহনেওয়াজ জানান,এটা তো মনে হয় এসিল্যান্ডকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল, পরে আর আমি ফিডব্যাক পাইনি।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ডঃ মনজুর আলম খান জানান, আপনার এলাকার জনপ্রতিনিধিরা কই বললে নাতো আপনাদের ওখানে এত জলাবদ্ধতা আছে, আপনি আমাকে মেসেজ করে দেন দেখি ব্যবস্থা নিব।