মেহেরপুরের গাংনীতে তহহাটের চাউল পট্টি ও এর আশে পাশের ব্যবসায়ীদের পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের স্বাক্ষরিত গত ২২ অক্টোবর ২০১৯ ইং তারিখে নোটিশ দিয়ে তাদের দোকানঘর ও স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ওই নোটিশের ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টার দিকে পৌর সভার কিছু লোকজন তহহাট এলাকায় উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
এ সময় ভুক্তভোগী দোকানদাররা গাংনী বাজার কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহামন স্বপন ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেককে অবহিত করেন। এ সংবাদে তাঁরা স্থানীয় দোকানদারদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ঘটনার সত্যতা পেয়ে তাঁরা আপাতত উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করে দেন এবং দোকানদারদের পূর্বের ন্যায় ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে গাংনী বাজার কমিটির সভাপতি অভিযোগ করে বলেন, আমার বাজারের ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে অথচ আমাকে কোন কিছু জানানো হয়নি। তিনি আরও বলেন, সরকারি কোন স্থানে স্থাপনা তৈরী করতে হলে সরকারি নিয়মনীতি অনুসরণ করতে হবে। তবে এখানে ব্যক্তিগত উদ্যোগে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা ঠিক না। তিনি নগর উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে সমন্বয় করার জন্য আহবান জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ খালেক জানান, ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানঘর পৌরসভার লোকজন এসে ভেঙ্গে দিচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি ঘটনাস্থলে এসে এর সত্যতা পান। তিনি উচ্ছেদ কাজ বন্ধ করে দেন। তিনি আরও বলেন, উচ্ছেদের ব্যাপারে রাষ্ট্রীয় কিছু নিয়মনীতি আছে তা উপেক্ষা করে মনগড়া ও দূরবিসন্ধী করে কারো ব্যক্তিগত উদ্যোগে দোকানঘর উচ্ছেদ করা যাবে না।
গত দুই বছর আগেও মেয়র আশরাফুল ইসলাম এমন একটি ভুল করেছিলেন। আবারো তিনি তার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে যাচ্ছেন। নাম পৌরসভা হলেও তিনি প্রায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিল নকশা তৈরী করে চলেছেন। তিনি আরও বলেন, সরকার দুর্ণীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কোন রকমের দুর্ণীতি সরকার ও জনগন মেনে নেবেনা এবং জনগন তার কঠিন জবাব দেবে।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম ইসলাম বলেন, আমি সকল নিয়ম-কানুন মেনেই স্থাপনা উচ্ছেদের উদ্যোগ নিয়েছি। আমি আমার স্ব-পক্ষের নথিপত্র দেখানোর জন্য উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দপ্তরে গিয়েছিলাম। তিনি বলেছেন জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা করেই এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা রহমান জানান, পৌরসভা বা ইউনিয়নের হাটবাজারের স্থাপনার ব্যাপারে নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা হলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)। তিনি জানেন না অথচ উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে কিভাবে এটা আমার বোধগম্য না। উচ্ছেদের নোটিশ প্রাপ্ত কয়েকজন দোকানদার তাদেরকে উচ্ছেদ না করার আবেদন করে ইতিমধ্যেই তাঁর নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।