মেহেরপুরের গাংনীতে নির্বাচনি সহিংসতায় জাহারুল ইসলাম ও সাহাদুল ইসলাম হত্যা মামলার ৬৬ জন আসামির জামিন না মন্জুর হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১ মার্চ), দুপুরের দিকে মেহেরপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিচারক তারিক হাসান আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ নভেম্বর ২০২১ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের লক্ষ্ণীনারায়ণপুর গ্রামে দুই ইউপি সদস্য পদপ্রার্থী আতিয়ার রহমান ও আজমাইন হোসেন টুটুলের মধ্যে বিবাদের জের ধরে ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। সংঘর্ষে জাহারুল ইসলাম এবং সাহাদুল নামের দুই সহোদর নিহত হন। উক্ত ঘটনায় নিহত জাহারুল ইসলাম ও সাহাদুল ইসলামের ফুপাতো ভাই লাল্টু বাদী হয়ে আতিয়ার রহমানকে প্রধান করে মোট ৬৬ জনের নামে গাংনী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ৯। সংঘর্ষ ঘটনার পরপরই গাংনী থানা পুলিশ লক্ষ্ণীনারায়ণপুর গ্রাম থেকে ১০/১২ জনকে আটক করলেও শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ৭ জনকে রেখে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
পরে গত ৬ জানুয়ারি ২০২২ মামলার প্রধান আসামি আতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে ৫৭ জন আসামি মেহেরপুর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিরিন নাহারের আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলার অপর দুই আসামি পলাতক রয়েছে। এ দু’জনের মধ্যে ১ জন সুকৌশলে দেশের বাইরে পালিয়ে যায় এবং বর্তমানে প্রবাসেই অবস্থান করছে বলে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে।
আজ মঙ্গলবার আদালত কর্তৃক জামিন না-মঞ্জুর হওয়া ৫৭ জন হলো গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের লক্ষ্ণীনারায়ণপুর গ্রামের ছৈফতুল্লাহ’র ছেলে গাংনী উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রহমান, গোলাম হোসেনের ছেলে আব্দুল খালেক, জফের আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম, হুরমত আলীর ছেলে ছমির, মহব্বত আলীর ছেলে শেখ হামিদুল, সাহার আলীর ছেলে টিপু, জার্মান আলীর ছেলে মানা, নূর ইসলামের ছেলে মিনা, পাতুর ছেলে সিরাজুল ইসলাম, সহিদুলের ছেলে বাবলু, আকছাদ আলীর ছেলে মাদার আলী, মোহাম্মদ আলীর ছেলে রুহুল, হেলুর ছেলে জাহিদ, আকছাদ আলীর ছেলে মিনহাজুল ইসলাম, চাঁদ আলীর ছেলে এনামুল, জানবারের ছেলে এনামুল হক, জফেরের ছেলে নুর ইসলাম, এরশাদের ছেলে আনোয়ার, সৈয়ফতুল্লাহর ছেলে পাতু, রহমতের ছেলে সাহার, জার্মান আলী হানা, মোজাম এর ছেলে রবিউল, আলেফের ছেলে বিপ্লব, আলিফের ছেলে জামারুল, মোহাম্মদ আলীর ছেলে আলিফ, আকছাদের ছেলে ইন্তাজ, মান্নানের ছেলে জসীম, জানবারের ছেলে আনারুল, আকছাদের ছেলে বোরহান, মহিদুল এর ছেলের রহিদুল, মেগুরের ছেলে মেজের, মহিবুর এর ছেলে বাবু, দিলুর ছেলে নজরুল, জেলহাজের ছেলে রাশিদুল, আক্তারের ছেলে জাহিদ, গোলাম মোস্তফার ছেলে দুলাল, হানিফের ছেলে হাসান, দেলবারের ছেলে মহিবুল, সফি, হারেজ আলীর ছেলে টোকন, আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে আশানূর, কলিমুদ্দিনের ছেলে পালু, আকসাদের ছেলে লুৎফর, আজমত আলী আরমান, নজিম উদ্দিন এর ছেলে গোলাম, রহমতে ছেলে সিফাত, হক আলীর ছেলে ওয়াদুদ, ফজলু রহমানের ছেলে মজনু, মুকসাদ আলীর ছেলে আজমত, চাঁদ আলীর ছেলে সাহাবুল, রমজান আলীর ছেলে মুজাম, আবুল কাশেমের ছেলে গিয়াস, আতর আলীর ছেলে মুসা, সিরাজুল ইসলামের ছেলে পিন্টু, নজরুল ইসলামের ছেলে নাহিদ, এছের আলীর ছেলে এরশাদ আলী, হাসান আলীর ছেলে ফুকু ও কাদের মণ্ডলের ছেলে আজমত।
এর পূর্বে আসামিদের জেলখানা থেকে কোর্ট হাজতে নেওয়া হলে সেসময় আসামিদের নিকট আত্মীয় ও এলাকাবাসীর শতশত লোকজন ভীড় জমান।
এদিকে পরিকল্পিত সংঘর্ষের ঘটনায় জাহারুল ইসলাম ও সাহাদুল ইসলামসহ ইউপি সদস্য আজমাইন হোসেন টুটুলের ভাই লোইলকে নৃশংসভাবে হত্যার বিচারের দাবিতে দু-দুবার মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী জনগণ। একইসাথে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত পরিবারের সদস্যরা এ হত্যাকান্ডে জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।