মেহেরপুরে রাতের আধারে অনৈতিক কাজে গিয়ে ৪ সন্তানের জনক গ্যাঁড়াকলে!

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ২০১ বার পঠিত

 

 

মেহেরপুরের গাংনীতে রাতের আধারে অনৈতিক কাজ করতে গিয়ে মিজানুর রহমান (৪০) নামের ৪ সন্তানের জনক গ্যাঁড়াকলে পড়েছে।
আজ রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি), মধ্যরাত আনুমানিক সাড়ে ১২ টার দিকে জেলার গাংনী উপজেলার কাজীপুর ইউনিয়নের হাড়াভাঙ্গা গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় ইন্তাজ মার্কেটে এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানায়, রাতের আধারে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হবার জন্য গ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান একই গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসি আব্দুস সালামের স্ত্রী তৌহিদা খাতুন (৩৫) এর বাড়িতে প্রবেশ করেন। এসময় আব্দুস সালামের ভাইয়ের ছেলেরা বাড়িতে বহিরাগতের প্রবেশ টের পেয়ে স্হানীয় জনতাদের সঙ্গে নিয়ে মিজানুর কে হাতেনাতে আটক করে।

গ্রামবাসীরা জানায়, রাতের আধারে প্রবাসীর স্ত্রীর কাছে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়ে ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ধরা পড়ছে এমন সংবাদে এলাকার শতশত মানুষে জড়ো হতে থাকে গ্রামের ইন্তাজ মার্কেটের পার্শে। রাত ১ টা হতে বেলা ১১ অবধি শতশত মানুষ সেখানেই অবস্থান নেয়। এবং দু’জনকে ধরে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে মধ্যরাত হতে বেলা ১১ টা অবধি। জনতা দু’জনকে আটকের পর উত্তম মধ্যমও দিয়েছে বলে কয়েকজন জানান।

এসময় অবৈধ কাজে লিপ্ত থাকা দু’জন বিয়ে করবে কিনা জানতে চাইলে তাতে কেউই রাজী হননি। এক পর্যায়ে স্থানীয় মেম্বার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিষয়টি ৩ লাখ টাকায় মীমাংসার চেষ্টা করলে মিজানুরের বাবা তা নগদ প্রদানে ব্যর্থ হলে অমীমাংসিত থাকে বলেও এলাকাবাসী জানায়।
তৌহিদা ও মিজানুর দু’জনের মধ্যেকার দোকানে গিয়ে ঢলাঢলির কথাও কয়েকজন বলেছেন। দু’জনে ফোনে মাঝে মধ্যে কথা বলেন বলে জানান তৌহিদা। সম্প্রতি বৈদ্যুতিক কাজে মিজানুর সহযোগিতা করলে দু’জনের মধ্যে আলাদা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে আজ মধ্যরাতে কি কাজে এসেছে জানতে চাওয়া হলে তৌহিদা সেই একই বৈদ্যুতিক কাজের কথা বলেন। যদিও এর কেন প্রমাণ মেলেনি। তবে রাতের আধারে ঘরে প্রবেশে অন্যায় হয়েছে এবং আগামীতে ভুল হবেনা বলে দু’জনে ক্ষমা চেয়েছেন স্হানীয় ইউপি সদস্য মহিবুল ইসলামের কাছে। তবে শারীরিক কোন সম্পর্কের কথা তারা স্বীকার করেননি।
এদিকে রাতভর দু’জনকে একই রশি দিয়ে বেঁধে রাখা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। মানুষে ভুল করতে পারে তাই বলে দীর্ঘ সময় কেন বেঁধে রাখা হলো এ প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষায় অনেকে।

ইউপি সদস্য মহিবুল ইসলাম জানান, বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষের মীমাংসা চলছে। থানা পুলিশে দেওয়ার কোন প্রয়োজন মনে করছি না আমরা। কারণ উভয়পক্ষই মীমাংসা করতে চান বিষয়টি নিয়ে।

কাজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলম হুসাইন জানান, অনৈতিক কাজে লিপ্ত হবার কথা শুনে পর্যবেক্ষণে আসেন তিনি। মেয়ে ও ছেলে দু’জনেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে অসম্মতি প্রকাশ করেছেন। তাছাড়া ২০১৯ সালে তৌহিদা তার স্বামী আব্দুস সালামকে তালাক দিয়েছেন বলেও তিনার বক্তব্যে এ তথ্য বেরিয়ে আসে। যেকারণে তিনি মীমাংসা না করে উভয়পক্ষের অভিভাবকদের উপরে ছেড়ে দিয়ে চলে যান। এর পূর্বে বেলা ১১টার পর থেকে অন্যের বাড়িতে বসে গোপনে মীমাংসা চেষ্টা অব্যাহত থাকে। সেসময় ২ লাখ টাকা নিয়ে মীমাংসা হয়েছে বলে জানায় মিজানুর রহমানে বাবা মতিয়ার রহমান। যদিও চেয়ারম্যান তা অস্বীকার করেছেন।
তবে সব থেকে মজার বিষয় হলো, মধ্যরাত থেকে বেলা ১১ টা অবধি দু’জনকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হলো। ২ লাখ টাকায় মীমাংসা হবার কথা হলেও মেম্বার ও চেয়ারম্যান তা অস্বীকার করলেন, অমীমাংসিত থাকলো। থানা পুলিশেও পাঠানো হলোনা। তবে কিভাবে বিকেল ৩ টার দিকে তারা দু’জন দু’জনের বাড়িতে ফিরে গেলেন?
সারারাত দু’জনকে একই ঘরে আটকে রাখার পর শতশত মানুষ এসেও যার মীমাংসা হলোনা। অবশেষে কিসের বিনিময়ে তা সম্ভব হলো? কি তার রহস্য? তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, আব্দুস সালামের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনের পূর্বে তৌহিদা অন্য একজনের সাথে সংসার করেছে। সর্বশেষে আব্দুস সালামের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবার পর তাকে তালাকের নোটিশ দিয়েও কিভাবে সালামের বাড়িতে অবস্থান করছেন এটা নিয়েও জনমনে নানা প্রশ্ন রয়েছে। যা আব্দুস সালাম প্রবাসে বসবাস করার কারণে উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর