ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ১ নং ভায়না ইউনিয়নের বাকচুয়া গ্রামের আকুল মন্ডলের ১০০ টি ইন্ডিয়ান সাগর (জয়েন্ট) কলাগাছ রাতের আধারে কে বা কাহারা কেটে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার গভির রাতের আধারে দূর্বৃত্তরা আকুল মন্ডলের ৪০ শতাংশ জমির উন্নত জাতের কলা গাছ কাঁটে দিয়েছে। এতে প্রায় ষাট হাজার টাকার ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন এই আধুনিক কৃষক। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আকুল মন্ডল জানান,বাকচুয়া গ্রামের সিরাজ মণ্ডলের ছেলে শাহিন সাকালে আমার জমির পাশ দিয়ে কৃষি ক্ষেতে কাজের জন্য যাচ্ছিলো। তখন আমার ইন্ডিয়ান সাগর (জয়েন্ট) কলা গাছ কাঁটা দেখে আমাকে ফোন করে জানান যে, আপনার কলা গাছ কারা যেন কাঁটে দিয়েছে।
আমি শুনে হতবাক। আমি তো কারোর কোনও ক্ষতি করেনি তাহলে আমার এমটি কে করলো? তিনি আরও জানান, আমি বিভিন্ন সময়ে নানা জাতের উন্নতমানের কলাগাছ সংগ্রহ করে চমৎকার ফসল উৎপাদন করে থাকি। এ ব্যাপারে সরকারীভাবে কোনও সহায়তা আমি পায় না। সরকারী সহায়তা পেলে আমি এই অঞ্চলের একজন মডেল কৃষক হিসেবে দেখিয়ে দিতাম যে কিভাবে চাষ করতে হয়। আমার খুব ইচ্ছা ছিলো এই ইন্ডিয়ান সাগর (জয়েন্ট) কলাগাছ প্রদর্শনী করার। আমার সে আশাও পুরণ হলো না। তার আগেই দূর্বৃত্তরা আমার ৪০ শতক জমির ফসল কেটে দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
একই গ্রামের তুরাব আলী জানান,যেই কাজটি করুক কাজটি ভালো করেনি। ফসল কেটে দিয়ে খুব ক্ষতি করেছে। এদিকে “আই ইউ বি এ টি” ইন্সটিটিউটে কৃষি বিভাগের এগ্রিকালচার জেনেটিক্স প্রশিক্ষণার্থী স্বাধীন জানান, আমাদের গ্রামের মানুষের জান এবং মাল কোনোটাই নিরাপদ নাই। এইতো কিছুদিন আগেও আমাদের প্রতিবেশীকে তাঁরা কুপিয়েছে। এ নিয়ে বিচার শালিস ও হয়েছে। কেন এমনটি বার বার হচ্ছে? সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান আমাদের পাশবর্তী গ্রামের (নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক) এক প্রার্থী ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে ভোট করেছিলেন। নৌকার কাছে পরাজিত হয়ে এখন নানা উপায়ে তার লোকজন দিয়ে জনগনের জান-মালের উপর নানারকম ক্ষতিসাধন করেই চলেছে।
দুঃস্কৃতরা একের পর এক এই বাকচুয়া গ্রামে ক্ষতি করতেই আছে। কলাগাছ কেটেই শেষ নয় একই গ্রামের মৃত্যু মনির উদ্দীন মণ্ডলের ছেলে মোঃ রিয়াজুল ইসলামের ২২ শতক পানের ৫৬ টি সারির পান ক্ষেত কেটে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা। আমি পরের ক্ষেতে (পানের আড়তে) কাজ করে যে টাকা আয় হতো তা দিয়ে আমার সংসার খুব কষ্টে চলতো। একটু ভালো থাকার জন্য পান ক্ষেত চাষ করেছিলাম। তাও আবার কেড়ে নিলো দূর্বৃত্তরা আমি অনেক টাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গেলাম বলে জানান এই পান চাষী। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভায়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজমুল হোসেন তুষার বলেন, হরিণাকূণ্ডুতে অনেক ঘটনাই ঘটেছে কিন্তু এখন বাকচুয়া গ্রামে যা হচ্ছে সেটা নজিরবিহীন ঘটনা।
বিষয়টি আমি শুনেছি এবং সরজমিনে গিয়ে দেখে এসেছি, যা অত্যান্ত দুঃখজনক। এদিকে হরিনাকুণ্ডু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, যদিও ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা কোনও লিখিত অভিযোগ দেয়নি, তারপর ও মৌখিক ভাবে জানার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠিয়েছি। বিষয়টা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।