স্ত্রীর সাথে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে রঞ্জিতকে খুন করেন ছানোয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৯
  • ৫৬৪ বার পঠিত

 

এনজিও দিশা’র মাঠ কর্মকর্তা রঞ্জিত পাল (৪৭) খুন হওয়ার রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। স্ত্রীর সাথে পরকীয়া থাকায় তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে পরিকল্পিতভাবে রঞ্জিতকে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করে লাশ পুকুরে ফেলে দেন বলে ঘাতক ছানোয়ার হোসেন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

আজ সোমবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো: মিজানুর রহমান এবং ওসি (তদন্ত) মো: মোশারফ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত বুধবার (১৯ নভেম্বর) টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার দুল্যা বেগম এলাকার একটি পুকুর থেকে গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় রঞ্জিতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত রঞ্জিত কুমার পাল ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার কোষামন্ডল পল গ্রামের অতুল কুমার পালের ছেলে। তিনি দিশা’র মির্জাপুর উপজেলা শাখার সিনিয়র ক্রেডিট অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন। গত ১৮ নভেম্বর তিনি নিখোঁজ হন। পরদিন তার লাশ পাওয়া যায়।

দিশা’র ম্যানেজার ছাবেদুল হক জানান, এনজিওর সঞ্চয় ও কিস্তির টাকা উত্তোলনের জন্য সিনিয়র ক্রেডিট মাঠ কর্মকর্তা রঞ্জিত কুমার পাল গত মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) ভাদগ্রাম ইউনিয়নের দুল্যা বেগম ও ইচাইল গ্রামে যান। সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত অফিসে ফিরে না আসায় ওই দিন রাত আটটার দিকে মির্জাপুর থানায় এনজিওর পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। পরদিন বুধবার সকালে স্থানীয় লোকজন দুল্যা বেগম গ্রামের জয়নাল মিয়ার বাড়ির কাছে ব্রিজের পাশে পুকুরে ভাসমান অবস্থায় একটি লাশ দেখে স্থানীয় লোকজন খবর দিলে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।

পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, ঘটনার পর দিন রঞ্জিতের ভাতিজা সুদন চন্দ্র পাল বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ খুনের রহস্য উদঘাটনের জন্য তদন্তে নামেন। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে দুল্যা বেগম গ্রামের ছানোয়ার ও আনোয়ার নামে দুই যুবককে আটক করে। আটকের পর তাদের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে ছানোয়ার ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তার স্ত্রীর সাথে দিশা এনজিওর কর্মকর্তা রঞ্জিত পালের দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া চলে আসছিল। কিস্তি উঠানোর নাম করে তাদের বাড়িতে গিয়ে তার অনুপস্থিতিতে স্ত্রীর সাথে অবৈধ মেলামেশা করতেন। ঘটনার দিন রঞ্জিত পালকে আপত্তিকর অবস্থায় তার স্ত্রীর সাথে দেখে ক্ষিপ্ত হন ছানোয়ার। পরে তাকে হত্যা করে লাশ পাশের বাড়ির পাশে ব্রিজের নিচে পুকুরে ফেলে দেয়। ঘটনার পর থেকে তার স্ত্রী ও মা পলাতক রয়েছেন। ঘটনার সাথে আটক আনোয়ারে কোনো সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: গায়েদুর রহমান বলেন, নিহতের ভাতিজা সুদন চন্দ্র পাল বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় মামলা করেছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পর লাশ তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছানোয়ার আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। মামলার রহস্য উদঘাটন হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর