কুষ্টিয়ার হরিপুরের দি ওল্ড কুষ্টিয়া হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক হেলাল উদ্দিন ঐ স্কুলের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রীর সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকা অবস্থায় এলাকাবাসীর হাতে ধরা খেল। কিন্তু বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে গেল, কিন্ত কেন ধামাচাপা পড়ল? বিষয়টি নিয়ে গত দু’দিন ধরে সরেজমিনে অনুসন্ধান করে যেটি পাওয়া গেল তা হল অর্থ। গত শুক্রবার রাত ৯টার সময় হরিপুর ঐ ছাত্রীকে পড়াতে গিয়ে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাকে আটকে ফেলে। তাৎক্ষনিকভাবে শিক্ষক হেলাল ইউপি চেয়ারম্যান মাছুদের সহযোগীতায় ১১ লক্ষ টাকায় দফারফা করেন। উক্ত অর্থ প্রদানের জন্য তিনশত টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করেন যা ভিডিও ফুঁটেজের মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে তাৎক্ষনিকভাবে এবং তাকে মারধর করা হচ্ছে সেটিও দেখা যাচ্ছে।
শিক্ষক হেলালের বাড়ী হরিপুর ইউনিয়নের শালদহ গ্রামে সে দীর্ঘ দিন ধরেই প্রাইভেট পড়ার অন্তরালে বিভিন্ন উঠতি স্কুল পড়ুয়া মেয়েদের নিজের লালসার ফাঁদে ফেলে সর্বস্ব লুটে নেওয়ার একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার এই কু অভ্যাসটা দীর্ঘদিনের। এর আগেও একাধিক বার এই ধরণের কুকর্ম করলেও প্রমাণের অভাবে ধামা চাপা পড়ে যায় এবং টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দেয়া হয়। ১১ লক্ষ টাকার বিনিময়ে আবারও এই ঘটনা ধামা চাপা দেওয়ার পাঁয়তারা করছে এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল। এখনো চলছে দর কষাকষি বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় নানা গুঞ্জন চলছে। ঐ স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আশরাফুল হক স্যারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, হেলাল বিজ্ঞানের একজন মেধাবী শিক্ষক ঐ মেয়ের সাথে তার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল বলে জানতে পারি। উঠতি বয়সি মেয়েরা একটু আবেগ প্রবন হয়, সেই থেকেই হয়তো এমনটা ঘটেছে। তবে আজ তাকে আমরা শোকজ নোটিশ দিয়েছি।
এ বিষয়ে ভিক্টিম শিক্ষক হেলালের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি পরিস্থিতির স্বীকার, আমি মেয়ের ভাই এর মোটরসাইকেলে করেই তাদের বাড়ীতে গেছি। তার কিছুক্ষন পর আমাকে আটকিয়ে মারধর শুরু করে, তাৎক্ষনিক আমি চেয়ারম্যান মাছুদকে ফোন করি তিনি এসে ১১ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে মেয়ের বাড়ী থেকে আমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। উক্ত ঘটনার ভিডিও তাৎক্ষনিকভাবে বিশ^ব্যাপী ভাইরাল হয়ে যায়। এখানেও তিনি অনেক তথ্য গোপন করলেন। এলাকার সচেতন মহল প্রতিবেদককে জানান, ঐতিহ্যবাহী দি ওল্ড কুষ্টিয়া হাইস্কুলের সুনাম, শিক্ষার পরিবেশ ও ছাত্রীদের নিরাপত্তায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এই ধরণের শিক্ষকদের সামাজিক ভাবে বয়কট বা স্কুল থেকে স্থায়ী ভাবে বহিষ্কার করা উচিৎ। তারা গত দু’দিন ধরে ফুঁসে উঠেছে তাকে স্কুল থেকে বিতাড়িত করার জন্য অন্যদিকে ফায়দা লুটাসহ আখের গোছাতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে একটি প্রভাবশালী মহল।
স্কুলের বর্তমান সভাপতি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মুঠোফোনে শিক্ষক হেলালের কুকর্মের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি জানি, তাকে নিয়ে তদন্ত চলছে, সত্য প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।