কুষ্টিয়ার হরিনারায়নপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান সম্রাটের রাজ্যে সকলে অসহায়। পরিষদের মেম্বার থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ অসহায় হয়ে গেছে সম্রাটের কাছে। তিনি কোন ইউপি সদস্যদের তোয়াক্কা না করে সবকিছু নিজে হাতে করে চলেছেন। ইউপি সদস্যদের চরম অসন্তোষ তৈরী হয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে মুখ খুললেই মামলা। আইনের ছাত্র হিসেবে দন্ডবিধির ধারা গুলো ভালমতো রপ্ত করেছে সম্রাট। তবে আদালতে প্যাকটিসে না, শত্রু ঘায়েল করতে মামলা দেওয়ানোয় বেশ পটু সম্রাট। নিজ পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যানও রেহাই পায়নি মামলা থেকে। প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী দিয়ে দেয়া হয়েছে ৩৮৫ ধারার মামলা। চাঁদাবাজি মামলা করিয়ে হয়রানী করিয়েছেন প্যানেল চেয়ারম্যান মহম্মদ আলী খাঁকে। মামলায় ৩ দিন কারাভোগ করেন প্যানেল চেয়ারম্যান মহম্মদ আলী খাঁ। জানা যায়, হরিনারায়নপুরে একটি তোহা বাজার আছে। ওই বাজারের ইজারাদার স্থানীয় ইউপি সদস্য কামরুল। প্যানেল চেয়ারম্যান মহম্মদ আলী খাঁর সাথে চেয়ারম্যানের শত্রুতা থাকায় তিনি তোহা বাজারের ইজারাদার ইউপি সদস্য কামরুলকে সাথে করে থানায় নিয়ে গিয়ে প্যানেল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তবে এর আগে ইউপি সদস্য কামরুল হরিনারায়নপুরের মহিলা মার্কেট সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন মহিলা মার্কেট দুস্থ্য মহিলাদের জন্য হলেও বর্তমানে এখন তা বিত্তশালীদের দখলে আছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়. ইউপি চেয়ারম্যান তার মা শরিফার নামে একটি দোকান বরাদ্দ নিয়ে তা রুবেল নামের একজন ব্যবসায়ীর কাছে ভাড়া দিয়েছেন। অভিযোগে ইউপি সদস্য কামরুল দাবী করেছেন সরকারী ভাবে আমার নামে হাট ইজারা দেয়া হলেও । জোরপূর্বক বিত্তশালীরা সরকারী ঘর দখল করে নিজের ইচ্ছে মতো বিত্তবানদের কাছে অগ্রিম মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ঘর ভাড়া দিচ্ছেন। হরিনারায়নপুরে ইউনিয়ন পরিষদে প্রায় ১৬শ দোকান রয়েছে। যার ট্রেড লাইসেন্স এবং ট্যাক্সের টাকা পরিষদ পেয়ে থাকে। সূত্র মতে ট্রেড লাইসেন্স থেকে বছরে আয় সাড়ে ৪ লাখ টাকা,হাট এবং বাজার থেকে আসে সাড়ে ৩ লাখ টাকা,বাড়ির ট্যাক্স থেকে আসে ১০ লাখ টাকা, বিশ^বিদ্যালয় থেকে ট্যাক্স আসে ৬০ হাজার টাকা, জুট মিল থেকে বছরে ট্যাক্স আসে ৩০ হাজার টাকা। বছরে পরিষদের সর্বনিম্ন আয় ১৪ লাখ টাকা। বিপুল পরিমান অর্থ আয় থাকার পরও চেয়ারম্যান বাজেটে ৩ লাখ টাকা রাজস্ব ঘাড়তি দেখিয়েছেন। শুধু তাই নয় ইউপি সদস্যদের দাবী চেয়ারম্যান কোন মাসিক সভা করেন না। বিভিন্ন বিষয়ে ১৩ টি কমিটি রয়েছে। আইনশৃংঙ্খলা কমিটির সভাপতি চেয়ারম্যান নিজে। কোন কমিটির কোন সভায় তিনি করতে দেন না বলে অভিযোগ ইউপি সদস্যদের। ১২ জন ইউপি সদস্যের মাসিক ভাতা পরিশোধ নেই। গত ৪ মাসের ভাতা এখনও ইউপি সদস্যরা পাবেন। মাসিক ভাতায় প্রতি সদস্যেও ৪ শ টাকা করে উপজেলার খরচ বাবদ কর্তন করেন ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান সম্রাট। কুষ্টিয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ কাবিখার ৩শ টন স্পেশাল চাল বরাদ্দ দেন। চেয়ারম্যান ১৫ টি প্রকল্পের মাধ্যমে ওই চাউলের টাকা খরচ দেখান। সব কয়টি প্রকল্পের জন্য পিআইসি গঠন হলেও চেয়ারম্যান নিজে সব কাজ করেন এবং পিআইসিদের কাছ থেকে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। কাজে ব্যাপক দুর্নীর্তি হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে। দুস্থ্য ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃকালীন ভাতা,বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি বিদ্যামান। ইউপি সদস্যের দেয়া তালিকা অনুযায়ী ভাতা দেয়া হয়নি। চেয়ারম্যানের নিজস্ব কিশোর গ্যাং রয়েছে তাদের মাধ্যমে নাম আসলে তারাই শুধু ভাতা পান। এব্যাপারে কথা বলার জন্য চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান সম্রাটকে ফোন দিলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে ফোন কেটে দেন।