মেহেরপুরের গাংনীতে কানাডায় লোক পাঠানোর নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা চলছে। গাংনী উপজেলার সিন্দুরকোটা গ্রামের ন্যাড়া বিশ্বাসের ছেলে এরশাদ আলী এই পায়তারা করছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
নাম প্রকাশ করা যাবে না এমন শর্তে সিন্দুরকোটা গ্রামের একাধিক ব্যাক্তি জানিয়েছে, মাত্র ১২ হাজার টাকা খরচে কানাডায় পাঠানোর কথা বলছে এরশাদ। কিছুদিন আগে দুইটা মাইক্রোবাসে করে প্রায় ২০ জনকে ঢাকা থেকে মেডিকেল করিয়ে এনেছে। সে আরো বলছে ৬ লক্ষ টাকা কানাডায় গিয়ে দিতে হবে।
এমন তথ্যের ভিত্তিতে কানাডা যেতে আগ্রহীর ছদ্ববেশে কথা হয় এরশাদের সাথে।
সাক্ষাতে এরশাদ আলী বলেন, কানাডা যেতে সর্বনিম্ন অষ্টম শ্রেণি পাশ হওয়া লাগবে। মোট খরচ হবে ৬ লক্ষ টাকা যা কানাডা গিয়ে মাসে মাসে বেতন থেকে পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া মেডিকেল করতে ১২ হাজার টাকা লাগবে যা এখন দিতে হবে।
এরপর সাংবাদিকের পরিচয় দিলে গড়িমসি শুরু করে এরশাদ আলী। তখন সে ২০ জনের মেডিকেলের কথা অস্বীকার করে বলে এ পর্যন্ত মাত্র ৭ জনের মেডিকেল করিয়েছি এবং তারা সবাই আমার নিকট আত্মীয়। আপনি অফিসের সাথে কথা বলেন বলে সিভিএস কানাডা ভিসা সার্ভিসেস নামের একটি ফেসবুক লাইক পেজের ঠিকানা দেয়।
ওই লাইক পেজে দেওয়া নম্বরে যোগাযোগ করলে ইকবাল হোসেন নামের একজনের সাথে কথা হয়। ইকবাল হোসেন জানান, কানাডা যেতে মোট ৬ লক্ষ টাকা লাগবে। ৩ লক্ষ টাকা ভিসা হাতে পাওয়ার পর দিতে হবে এবং বাকি ৩ লক্ষ টাকা কানাডায় গিয়ে দিতে হবে। মেডিকেলের জন্য সাড়ে ৮ হাজার টাকা দিতে হবে। বেতনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতি মাসে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা বেতন হবে। আবেদনকারী প্রত্যেকে কানাডা যেতে পারবে ৯৯% নিশ্চিত।
তবে কানাডা যাওয়ার তথ্য সংগ্রহের জন্য অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েব সাইট ঘাটলে এমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রত্যাকটি ওয়েব সাইটেই কানাডা যেতে অনেক জটিলতা ও সতর্কতার তথ্য পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে আরো তথ্য জানার জন্য এরশাদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি স্থানীয় আ.লীগ নেতা কামাল হোসেন সাথে ফোন ধরিয়ে দেয়।
কামাল হোসেন মুঠোফোনে বলেন, আমরাই লোক পাঠায়। কে তুমি, তোমার বাড়ি কোথায়? তুমি আর কখনও এই নম্বরে ফোন দিবা না। আপনারা নিউজ করে আমার কী করবেন?
স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর জন্যই কিছু আত্মীয় স্বজনের মেডিকেল করিয়েছে। এরশাদের এই ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্যও অনুরোধ করেন তারা। সেই সাথে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন সচেতন মহলের অনেকে।
গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ বজলুর রহমান জানান, ভুক্তভোগী কেউ লিখিত অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।