মেহেরপুরের গাংনীতে প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে সোহেল রানা (৩৫) নামে এক যুবক অনৈতিক কাজ শেষে ঘর থেকে বেরোনোর সময় হাতেনাতে আটক করেছে স্থানীয় লোকজন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামের ঈদগাহ পাড়াতে। দুই সন্তানের জনক সোহেল রানা উপজেলার মটমুড়া গ্রামের নজরুল ইসলাম ছেলে এবং বাওট বাজারের রানা ফার্মেসীর মালিক। নজরুল ইসলাম বাওট সোলামানি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক। এক সন্তানের জননী মেরিনা খাতুন (২৭) ছাতিয়ান গ্রামের ঈদগাহ পাড়ার জালাল উদ্দীনের ছেলে বাহারাইন প্রবাসী সোহেল রানার স্ত্রী ও বাওট গ্রামের মৃত একরাম আলীর মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, সোহেল রানার সাথে প্রবাসী সোহেল রানার স্ত্রী মেরিনা খাতুনের সাথে দীর্ঘ দিনের পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। মাঝে মাঝেই বিভিন্ন অযুহাতে সে মেরিনা খাতুনের বাড়িতে আসত। এই পরকিয়া সম্পর্কের জেরে সোমবার দিবাগত রাতের কোন এক সময় মেরিনা খাতুনের ঘরে আসে সোহেল। আনুমানিক ভোর ৪টার দিকে মেরিনার ঘর থেকে বের হতে দেখে তাকে আটক করা হয়। এ সময় উত্তেজিত জনতা সোহেল রানাকে কয়েকটি চড় থাপ্পর কিল ঘুশি মেরে পুলিশে খবর দেয়।
পরে কুমারীডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আব্দুর রাজ্জাক সংগীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছায়। পরে মটমুড়া ইউনিয়ন পরিষদের মটমুড়া ৯নং ওয়ার্ড সদস্য সাজাহান আলী, মটমুড়া গ্রামের রশিদুল ইসলাম, তাহাজ আলী, ছাতিয়ান ৮নং ওয়ার্ড সদস্য জাহাঙ্গীর আলম লিটন, একই গ্রামের মাহবুব আলম মাস্টার, জিল্লুর রহমানসহ উভয় গ্রামের বেশ কিছু লোকজন সোহেল রানা ও মেরিনার কাছ থেকে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে তাদের নিজ নিজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।
তারা আরো জানান, বছর খানেক আগেও সোহেল রানাকে মধ্যরাতে ওই বাসা থেকে বেরিয়ে চলে যাওয়ার সময় বাড়ির পাশের বাগানের মধ্যে আটক করেছিল স্থানীয়রা। মান সম্মানের দিকে তাকিয়ে উত্তম মধ্যম দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় সেদিন।
ছাতিয়ান গ্রামের মাহাবুব আলম মাস্টার জানান, ফাঁকা স্ট্যাম্পে উভরের স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। ইউপি সদস্য ও মুহুরারকে লিখে নিতে বলা হয়েছে।
ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান, উভয় পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় ফাঁকা স্ট্যাম্পে ছেলে ও মেয়ের স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ইউপি সদস্য সাজাহান আলী জানান, আমরা উভয় গ্রামের মেম্বার ও গন্যমান্য ব্যাক্তিরা একত্রে বসে মিমাংসা করে দিয়েছে।
মটমুড়া গ্রামের রশিদুল ইসলাম জানান, এ আর নতুন কী। তাদের অনেক আগে থেকেই প্রেম সম্পর্ক রয়েছে। কোন পরিবারের অভিযোগ না থাকায় স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
কুমারীডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই লিয়াকত আলী জানান, অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ওই যুবককে আটক করে ৯৯৯ ফোন দেয় স্থানীয়রা। ঘটনা জানার পরপরই এএসআই আব্দুর রাজ্জাককে সংগীয় ফোর্স দিয়ে পাঠানো হয়েছিল। পরে শুনেছি তারা স্থানীয়ভাবে মিটিয়ে ফেলেছে।
গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ বজলুর রহমান জানান, ঘটনা শুনার পর সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আইনজীবি জনান, যদি ছেলে ও মেয়ে উভয় বিবাহিত হয় এবং তারা যদি উভয়ের সম্মতিতে অথবা অসম্মতিতে যৌন কাজে লিপ্ত হয় তাহলে দন্ডবিধি ৪৯৭ ধারা মোতাবেক ব্যাভিচারের দায়ে ৭ বছর মেয়াদে সশ্রম বা বিনাশ্রম বা অর্থ দন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। এছাড়া স্থানীয় জনগন আটক করলে দন্ডবিধি ২৯০ অথবা ৫৪ ধারায় মামলা দিতে পারে পুলিশ।