মেহেরপুরের গাংনীতে চোরাই মোটরসাইকেল,মাদক,অপহরণ ও নানা অপকর্মে জড়িয়ে গত এক বছরে কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছে মোটরসাইকেল মিস্ত্রি জান্নাত(২৪)। জান্নাত উপজেলার বামন্দী ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের দক্ষিণ(বড় গোরস্থান) পাড়ার আজাদ আলীর ছেলে। জান্নাত গত ৫বছর আগে বামন্দী ফিরোজের মোটরসাইকেল গেরেজে মোটর সাইকেলের যন্ত্রপাতি সারানোর প্রশিক্ষণ শুরু করেন।
সেখানে প্রায় প্রায় দুই বছর ধরে প্রশিক্ষণ শেষে। প্রশিক্ষণ শেষে রামনগর বাজারের অদূরে ঘোনার উপরে দোকান দিয়েও তিনি লাভবান হতে পারেননি। গত এক বছর আগে লকডাউন এর সময় দোকানের স্থান পরিবর্তন করে তাকে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। জান্নাত গত এক বছরে জমি,দোকানস ১টি মাইক্রো,১টি প্রাইভেটকার ১টি হাইস,ও ১টি অ্যাপাচি আরটিআর মোটরসাইকেল। এত টাকার উৎস কোথায়?? সরেজমিন ঘুরে জানা যায়,মেহেরপুর-কুষ্টিয়া জেলায় চোরাইকৃত গাড়ি রাত রাতভর সংস্কার করে থাকেন জান্নাত ও তার দোকানের কর্মচারীরা।
এই সকল চোরাই গাড়ি গুলো সংস্কারের জন্য জান্নাতের কাছে পৌঁছায় দিতে একটি চক্র। জান্নাত তার নিজের গোডাউনে রং পরিবর্তন করে স্থানীয় কম্পিউটার দোকান ব্যবসায়ী নাসির মিয়ার ছেলে মিলন হোসেনের মাধ্যমে ভুয়া লাইসেন্স ও ভুয়া নাম্বার প্লেট তৈরি করে গাড়িগুলো চড়া দামে বাজারে বিক্রয় করে। এছাড়াও জান্নাত নিজের প্রাইভেটকার ব্যবহার করে মেহেরপুর গাংনী উপজেলার কাজিপুর ও কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদক সংগ্রহ করে তার দোকানের গোডাউনে রেখে তা বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করতো বলে জানান স্থানীয়রা।
গত এক মাস আগেও জান্নাতের প্রাইভেট কার গাড়ি ব্যবহার করে উপজেলার রামনগর গ্রামের গ্রাম আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলীর ছেলে খোকন ও সানোয়ার খাঁ’র ছেলে মিন্টু’র সহায়তায় সহড়াতলা গ্রামের ওজির আলীর মিনারুলকে অপহরণ করে আনে বলে জানা যায়। অপহরণের পরে বাদী হয়ে মিনারুল ইসলামের স্ত্রী বেবি নাজনিন গাংনী থানায় একটি অপহরণ মামলা করলে সানোয়ার খাঁ এর ছেলে মিন্টুকে আটক কর এবং পুলিশের সহায়তায় থানা থেকে পালিয়ে গেছে রামনগর গ্রাম আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলীর ছেলে খোকন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত এক বছর ধরে রামনগর গ্রামের খোকন,মিন্টু-ও উপজেলার বালিয়াঘাট গ্রামের মাহাতাব আলীর ছেলে মোটরসাইকেল চোর জিয়ার সহায়তায় মাদক অপহরণ সহ বিভিন্ন অপকর্ম করে কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছে জান্নাত। জান্নাতের গাড়ি অপহরণ কাজে ব্যবহার হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ তাকে আটক করছে না কেন তা জনমতের প্রশ্ন? প্রতিদিনের মতোই জান্নাত দোকান খুলছে অথচ পুলিশ সদস্যরা তার দোকানে আসছে আবার চলে যাচ্ছে তাকে আটক করছে না কেন? অপহরণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জহির রায়হান জানান,এই গাড়ি ব্যবহার হয়েছে কিনা তা তদন্ত চলছে,তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে কম্পিউটার দোকান ব্যবসাহী মিলন হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, জান্নাত মোটরসাইকেলের কাগজ লেমিনেটিং করার জন্য মাঝেমাঝে আমার দোকানে আসছে।
আমার কোনো কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নেই শুধুমাত্র ফটোকপিও ছবি প্রিন্ট করে আমি আমার সংসার চালায়। এ বিষয়ে মোটরসাইকেল মেকানিক জান্নাতের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, আমার উন্নতি দেখে সবাই হিংসা করছে। খোকন মিন্টু ও জিয়া আমার দোকানের কাস্টমার তারা প্রতিনিয়ত হয় আমার দোকানে গাড়ি সারাতে আসতো।সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান আমি যদি কোন অপরাধ করে থাকি তাহলে প্রমাণ করে দেন, বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।