৯০ সালের আগে ও পরে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণ করেছে তাদের সবাইকেই স্বৈরাচার নামে অভিহিত করা হয়েছে- গোলাম মোহাম্মদ কাদের
ঢাকা, শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর-২০১৯ : জাতীয় পাটির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, ’৯০ সালের আগে ও পরে যারা রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণ করেছে তাদের সবাইকেই স্বৈরাচার নামে অভিহিত করা হয়েছে। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী প্রকৃত গণতন্ত্রের স্বাদ গ্রহণ করা সম্ভব নয়। এই সংবিধান অনুযায়ী সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক চর্চা আমরা করতে পারছিনা। তিনি বলেন, আমরা সংসদীয় পদ্ধতির মূল স্পিরিট বা আসল ধারণা গ্রহণ করতে পারিনি। ৭০ ধারা অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা নিজেদের বিবেক বুদ্ধি বা বিবেচনার ওপরে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা। দলের সঙ্গেই তাদের থাকতে হবে, দলের বাইরে তারা যেতে পারেনা। সংসদকে সকল কর্মকান্ডের আসল কেন্দ্রবিন্দু করা আমাদের সংবিধান এ্যালাও করেনা এবং সংসদের কাছে মন্ত্রীদের জবাবদিহিতা এটাও আমাদের সংবিধান এ্যালাও করেনা। সরকার দলীয় সংসদ সদস্যরা মন্ত্রীদের কর্মকান্ডের বিরোধীতা করতে পারেনা। তিনি বলেন, বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী সরকার প্রধান সকল কর্মকান্ডের কেন্দ্র বিন্দু থাকেন। এই কারণে, আমাদের দেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক ধারা অর্জিত হচ্ছেনা। আর এ কারণেই আগে পিছে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন তাদের সবাইকে স্বৈরাচার বলা হয়েছে। কিন্তু সবাই মিলে দোষ দিয়েছেন শুধু একজনকে তিনি হচ্ছে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এই অপবাদ দিয়েই হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও জাতীয় পার্টির ওপর চরম অন্যায়-অবিচার করা হয়েছে।
আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী অফিসে সংবিধান সংরক্ষণ দিবস উপলক্ষে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তর-এর সভাপতি ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এস.এম. ফয়সাল চিশতীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, যদি সংবিধানের ৭০ ধারা উঠিয়ে দেয়া হয় এবং এমপিরা সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারে তাহলে সরকারের স্থায়ীত্ব কম হবে। এতে প্রতি মাসেও সরকার পরিবর্তন হতে পারে, কোন বিল পাস করতেও সমস্যা হবে সরকারের। এমন আর্থসামাজিক পরিস্থিতিতে আমরা পূর্ণ গণতন্ত্র চর্চার জন্য উপযুক্ত হতে পেরেছি কিনা তাও বিবেচনা করতে হবে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার কারণে যে কোন রাজনৈতিক দলও প্রকৃত গণতান্ত্রিক চর্চা করতে পারেনা। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি সংবিধান সংরক্ষণ করতে সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে আমরা আজীবন কাজ করে যাবো। জাতীয় পার্টির বড় অর্জন অন্য কোন কায়দায় ক্ষমতায় থাকতে না চেয়ে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সংবিধানকে সমুন্নত রেখে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ক্ষমতা হস্থান্তর করেছেন। অন্যায়-অবিচারের মধ্যেও জাতীয় পার্টি সংবিধান সমুন্নত রাখতে রাজনীতি করে যাচ্ছে। জাতীয় পার্টি কাজ করছে গণতন্ত্র বজায় রাখতে এবং গণতন্ত্র বিকশিত করতে।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, দেশের মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময় দেশে তুলনা মূলক ভাবে বেশি সুশাসন বজায় ছিলো। জনগণের কল্যাণের কাজে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলের তুলনা হয়না। কিন্তু এখনো জাতীয় পার্টির শাসনামলের কুৎসা রটনো হচ্ছে, যেটা সম্পর্ণ অন্যায়। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিতে নব-জাগরণ শুরু হয়েছে। দেশ ও জাতির প্রত্যাশিত দেশ উপহার দেবে জাতীয় পার্টি।
সময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি বলেন, দেশে বিশ^জিৎ হত্যা হয়, আবরার হত্যা হয়। সারের জন্য কৃষককে হত্যা হতে হয়, এটাকে আমরা গণতন্ত্র বলতে পারিনা। এরশাদকে যারা স্বৈরাচার বলেন, তাদের লজ্জা করা উচিৎ কারণ, রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য তাদের সবাইকে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কাছে যেতে হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের ৮৯ ভাগ উন্নয়ন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে হয়েছে। জেলখানায় থেকে ৫টি করে আসনে নির্বাচিত হয়ে প্রমাণ করেছেন পল্লীবন্ধু কতটা জনপ্রিয় ছিলেন।
বক্তব্য রাখেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য- জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, এ্যাড. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান- নুরুল ইসলাম নুরু, যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আহসান শাহজাদা, প্রচার সম্পাদক খোরশেদ আলম খুশু, রামপুরা থানা সভাপতি- কাজী আবুল খায়ের, যুগ্ম মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, ছাত্রসমাজের সাধারণ সম্পাদক- আল মামুন।
উপস্থিত ছিলেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য আলমগীর সিকদার লোটন, সৈয়দ দিদার বখ্ত, নাজমা আখতার এমপি, উপদেষ্টা- নুরুল আজহার, যুগ্ম-মহাসচিব- শেখ আলমগীর হোসেন, আশরাফ সিদ্দিকী, আমির উদ্দিন ডালু, সুলতান আহমেদ সেলিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক ভূঁইয়া, জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, সম্পাদকমন্ডলী- দফতর সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, যুগ্ম দফতর সম্পাদক এম.এ. রাজ্জাক, আনিস উর রহমান খোকন, শারমিন পারভীন লিজা, ডাঃ সেলিমা খান, হাফেজ ক্বারী মোঃ ইসাহরুহল্লাহ আসিফ, রেজাউল করিম।
কেন্দ্রীয় নেতা মোঃ মোহিবুল্লাহ, নাজমুল খান, এ্যাড. আবু তৈয়ব, তাসলিমা আকবর রুনা, জেসমিন নূর প্রিয়াংকা, মিনি খান, আব্দুস সাত্তার, মামুনুর রহমান, ফারুক শেঠ, সোলায়মান সামী, জি.এম. বাবু, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, দ্বীন ইসলাম শেখ, ফারুক আহমেদ, মাহফুজ মোল্লাহ, হাজী সিরাজ, আনোয়ার হোসেন তোতা, নুরুল ইসলাম নুরু, আরিফুল ইসলাম রুবেল।
জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সম্মেলন
আগামীকাল বেলা ১১টায় ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি।
বার্তা প্রেরক,
মিঠু বিশ্বাস
ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক জাতীয় সাইবার পার্টি।
০১৭৬৮৯০৮১৯১