কুড়িগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের কাছে পাঁচ টাকার স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করে স্কুলে যোগ দিলেন প্রধান শিক্ষক। সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে জেলার রাজিবপুর উপজেলার রাজিবপুর মডেল সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে।
উক্ত প্রধান শিক্ষকের নাম আজিম উদ্দিন। তিনি উপজেলা আ.লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক। ৯টি শর্তে তিনি বিদ্যালয়ে যোগ দেন।
রাজিবপুর উপজেলার সমন্বয়কারী সদস্য মাহমুদ আহামাদী নেজাত জানান, সারাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচার হাসিনার পতন ঘটেছে। তার দোসরদের পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু আজিম উদ্দিন যেহেতু আমাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন সেহেতু আমরা তাকে ৯ দফা দিয়ে একটি স্টাম্পে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর নিয়েছি। সেখানে বলা আছে- যদি তিনি এই ৯ দফার একটিও ভঙ্গ করেন তাহলে তাকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে হবে।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দিন জানান, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা করে দফাগুলো পড়ে অঙ্গীকারনামায় আমি স্বেচ্ছায় স্বাক্ষর করেছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য আমি তাদের সহযোগিতা চেয়েছি।
জানা যায়, রাজিবপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দিন উপজেলা আ.লীগের সঙ্গে যুক্ত থাকায় বিদ্যালয় চলাকালে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। ফলে নিয়মিত বিদ্যালয়ে সময় দিতেন না। এর ফলে ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবকরা তার ওপর অসন্তষ্ট ছিলেন। এসব কারণে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করে সমন্বয়করা এ সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজিবপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
অঙ্গীকারনামায় ৯টি দফার মধ্যে রয়েছে- তিনি কোনো প্রকার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত বা রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। সময়মতো শিক্ষকদের ক্লাসে উপস্থিত নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি বিধি মোতাবেক প্রতিষ্ঠান পরিচালনাসহ শিক্ষার্থীদের ৭৫ শতাংশ উপস্থিতি, ড্রেসকোড এবং আইডি কার্ড বাধ্যতামূলক করতে হবে। সরকারি নির্দেশনা ছাড়া ভর্তি ফি, মাসিক ফি, পরীক্ষা ফি, রেজিস্ট্রেশন ফি, সার্টিফিকেট নিতে টাকা এবং অতিরিক্ত কোনো অর্থ নেওয়া যাবে না। এমন আরও বেশ কয়েকটি শর্ত জুড়ে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীদের সব শর্ত মেনে নিয়ে পাঁচ টাকার স্টাম্পে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেন প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দিন।