নওগাঁর পত্নীতলার সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) বিরুদ্ধে ‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধা
সিদ্দিক প্রতাপ’ সেতুর নাম পরিবর্তন করার অভিযোগ উঠেছে। আকস্মিক
সেতুর দুই পাশের নতুন সাইনবোর্ডে ‘পতœীতলা সেতু’ লেখায়
মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুক্তিযোদ্ধা ও
এলাকাবাসীরা। দ্রুত সাইনবোর্ডটি অপসারণ করে সেতুর সঠিক নাম ব্যবহারের
দাবি জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভা এলাকা থেকে পার্শ্ববর্তী
সাপাহার উপজেলায় যাওয়ার একমাত্র সড়কের মধ্য দিয়ে বহমান আত্রাই নদের উপর ১৯৯৩
সালের ৩০ জুন সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
১৯৯৪ সালের ১১ জানুয়ারি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সেতুটি
উদ্বোধন করেন। সেই সময় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের দাবিতে উপজেলার কৃতি
সন্তান ‘শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক প্রতাপ’ এর নামে সেতুটির নামকরণ করা
হয়। সেতুটি নির্মাণের মাধ্যমে পত্নীতলা উপজেলার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী আম
উৎপাদনের বৃহৎ উপজেলা সাপাহারের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হয়।
সম্প্রতি জেলাজুড়ে স্থান শনাক্তকরণের সুবিধার্থে সড়ক ও জনপথ বিভাগের
আওয়াতাধীন সব সড়ক ও ব্রিজের পাশে সাইনবোর্ড বসানো হয়েছে। চলতি
বছরের জুলাই মাসে আত্রাই নদীর উপর নির্মিত ‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক
প্রতাপ’ সেতুর দুই পাশে ‘পত্নীতলা সেতু’ লিখে দুইটি সাইনবোর্ড
বসিয়েছে নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। সাইনবোর্ডটি স্থানীয়
মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসীদের নজরে এলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। দ্রুত
সাইনবোর্ডটি অপসারণ করতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করেন নওগাঁ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক
ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক উদ্দীন আহমেদসহ উপজেলার অন্যান্য
মুক্তিযোদ্ধারা।
পত্নীতলা উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম
বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ সিদ্দিক প্রতাপ আমাদের উপজেলার কৃতি সন্তান।
আমাদের দাবিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এই সেতুর নামকরণ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা
সিদ্দিক প্রতাপ সেতু করতে বাধ্য হয়েছিল। এর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক
স্মৃতি জড়িয়ে আছে। হঠাৎ সেতুর নাম পরিবর্তন করে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের
অবমাননা করেছে সড়ক বিভাগ। দ্রুত সাইনবোর্ডটি অপসারণ করা না হলে
আমরা কঠোর আন্দোলনে যাব।
নওগাঁ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা
সাদেক উদ্দীন আহমেদ বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) হঠাৎ করে শহীদ
মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক প্রতাপ সেতু নামের পরিবর্তে কেন পতœীতলা সেতু নামে
সাইনবোর্ড বসিয়েছে তা বোধগম্য নয়। অনতিবিলম্বে সাইনবোর্ডে পত্নীতলার সেতু নাম পরিবর্তন করে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক প্রতাপ সেতু যদি
না করা হয় তাহলে আমরা প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশসহ কঠোর পদক্ষেপ নেব।
নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) পত্নীতলার উপজেলার উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী
মোজাম্মেল হক বলেন, সাইনবোর্ডটিতে ভুলক্রমে ‘পত্নীতলা সেতু’ লেখা
হয়েছে। শিগগিরই সেখানে ভুল সংশোধন করে ‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিক
প্রতাপ’ সেতু লেখা হবে।
সুবীর দাস
২৯ ০৭ ২১
নওগাঁ।