চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে হঠাৎ চালানো বিশেষ অভিযানে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের তিন প্রভাবশালী নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে উপজেলার জুলধা ও নগরীর রেয়াজুদ্দিন বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আটকরা হলেন—কর্ণফুলী উপজেলা যুবলীগের সংগঠক আমজাদ হোসেন টুটুল (৩৭), চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা হোসাইন মামুন (৩৫) এবং শিকলবাহা যুবলীগের সংগঠক মো. দিদার। তারা তিনজনই কর্ণফুলীর চরপাথরঘাটা ইছানগর ও শিকলবাহা এলাকার বাসিন্দা এবং দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে আসছিলেন।
পুলিশ জানায়, “ডেভিল” নামে বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে রেয়াজুদ্দিন বাজার থেকে টুটুল ও মামুনকে এবং জুলধার কেইপিজেট শিল্পাঞ্চল থেকে দিদারকে আটক করা হয়েছে। কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শরীফ ও কোতোয়ালী থানার ওসি আব্দুল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে তাদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ প্রকাশ করতে পারেনি পুলিশ।
ওসি শরীফ বলেন, “তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পূর্বের কোনো মামলা বা ওয়ারেন্ট ছিল কি না তা যাচাই করা হচ্ছে।”
স্থানীয়দের মতে, আটক তিন নেতা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে হস্তক্ষেপ এবং দলীয় কোন্দলে সক্রিয় ভূমিকার জন্য কুখ্যাত ছিলেন। অনেকের অভিযোগ, তারা রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিলেন। তবে এসব অভিযোগের প্রমাণ আগে কোনো মামলায় গড়ায়নি।
এ ঘটনায় কর্ণফুলীসহ নগর রাজনীতিতে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে—এটি কি শুধুই আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পদক্ষেপ, নাকি ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে শক্তি প্রদর্শনের অংশ? বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সম্প্রতি চট্টগ্রামে সন্ত্রাস ও নাশকতা দমনে পুলিশের বিশেষ অভিযান জোরদার করা হয়েছে। এ গ্রেপ্তার সেই অভিযানেরই একটি অংশ হতে পারে। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাব ও দলীয় ভারসাম্য বজায় রাখতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে—এমন ধারণাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
~ সবশেষে কর্ণফুলীর রাজনীতির মাঠে বড় প্রশ্ন একটাই—এই গ্রেপ্তার কি সত্যিকারের অপরাধ দমন, নাকি ভেতরের রাজনৈতিক শক্তি-সংঘর্ষের ইঙ্গিত?