কুষ্টিয়ায় বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ও ছানি অপারেশন ক্যাম্প অনুষ্ঠিত

কে এম শাহীন রেজা কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়া কুমারখালীর শিল্পপতি দানবীর
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১০০ বার পঠিত

 

 

কুষ্টিয়ার কুমারখালীর আলাউদ্দিন নগরের তহিরন নেছা হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রতিবছরের ন্যয় এবারও অসহায় ও দরিদ্র মানুষের জন্য বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা ও ছানি অপারেশন ক্যাম্পের আয়োজন করেছে আলাউদ্দিন আহমেদ ফাউন্ডেশন ও তহিরন নেছা হাসপাতাল। রবি ও সোম (২৮ ও ২৯) তারিখ দু’দিন ধরে সকাল ৯টায় কুমারখালীর আলাউদ্দিন নগরে অবস্থিত তহিরন নেছা হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে শুরু হয় এ চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর প্রায় ৪ হাজার মানুষকে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে এক হাজার রোগীর ছানি অপারেশন সম্পন্ন করা হবে। গত ২১ বছর ধরে এ ধরনের সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে হাসপাতালটি। এ সময়ের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন এবং ১৫ হাজারেরও বেশি রোগীর ছানি অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে।
২৯ তারিখ দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতাল চত্বরে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের উপচে পড়া ভিড়। অনেকে এসেছেন দূর-দূরান্ত থেকে। স্বেচ্ছাসেবকেরা তাদের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন এবং খুলনার বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল থেকে আগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। চাপড়া ইউনিয়নের লাহিনীপাড়া গ্রামের ফজিলা খাতুন বলেন, চোখে ছানি পড়েছে। আমরা গরিব মানুষ বাইরে অপারেশন করাতে ২৫ হাজার টাকা চেয়েছে। ফ্রি শুনে এখানে এসেছি। জিয়ারখী ইউনিয়নের কমলাপুরের বৃদ্ধা ছলেমান বলেন, কয়েক বছর আগে এখান থেকে এক চোখের অপারেশন করিয়েছিলাম। এবার মাইকে শুনে অন্য চোখের জন্য এসেছি। ফ্রি সেবা পেয়ে খুব ভালো লাগছে। স্থানীয় বাসিন্দা রিগ্যান বলেন, বাইরে ছানি অপারেশন করাতে ২০-২৫ হাজার টাকা লাগে, যা অনেকের সামর্থ্যের বাইরে। তহিরন নেছা হাসপাতালের এ উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।
আলাউদ্দিন আহমেদ ফাউন্ডেশন ও তহিরন নেছা হাসপাতাল কর্তপক্ষ জানান, শিল্পপতি সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী আলাউদ্দিন আহমেদের উদ্যোগে ২০০৪ সাল থেকে খুলনা বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের সহযোগিতায় শুরু হয় এ ক্যাম্প। স্থানীয় মানুষদের জন্য এটি এখন একটি নিয়মিত ও আস্থার জায়গা হয়ে উঠেছে। তবে ২০২৫ সাল থেকে হাসপাতালটিতে চালু হওয়া আধুনিক ভিশন সেন্টারের মাধ্যমে নিয়মিত চোখের পরীক্ষা, ছানি রোগী বাছাই ও ফলোআপ সেবা চালু রয়েছে। নির্বাচিত রোগীদের নিরাপদ পরিবহনের মাধ্যমে খুলনা বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে অপারেশন করানো হয়।
তহিরন নেছা হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের লক্ষ্য, অর্থাভাবে কেউ যেন দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে না ফেলে। হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালের লি: এর কর্ণধর আলাউদ্দিন আহমেদের অর্থায়নে ও খুলনা বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের সহযোগিতায় গেল ২১ বছরে ৫০ হাজারের বেশি মানুষকে বিনামূল্যে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন যার মধ্যে ১৫ হাজারের বেশি ছানি অপারেশন করা হয়েছে। এই দুদিনে প্রায় এক হাজারেরও বেশী ছানি অপারেশনের জন্য দুস্থ রোগীদের পেয়েছি তাদের পাঠানোর জন্য প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

 

 

চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানাধীন বন্দরটিলা কাঁচাবাজার এলাকা বহু বছর ধরেই কিশোর গ্যাং ও অপরাধচক্রের দৌরাত্ম্যের শিকার ছিল। সম্প্রতি এলাকাবাসীর সরাসরি সহযোগিতা ও পুলিশের কৌশলগত অভিযানে কুখ্যাত কিশোর গ্যাং সদস্য জিসান মির্জা (১৬) গ্রেফতার হয়েছেন।

অভিযানটি পরিচালনা করেন ইপিজেড থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জামির হোসেন জিয়া। সিএমপি’র বন্দর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ আমিরুল ইসলাম নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ জাহাঙ্গীর, সহকারী পুলিশ কমিশনার (বন্দর জোন) মাহমুদুল হাসান এবং এসআই মোঃ আরিফ হোসেন নেতৃত্বে বিশেষ ফোর্স অভিযান চালান।

জিসানের বিরুদ্ধে ইপিজেড থানায় মামলা নং–০৫ (ধারা ৩৯৯/৪০২ দণ্ডবিধি) চলছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগ—তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে এলাকায় ভয়ঙ্কর অপরাধচক্রকে সংগঠিত করেছিলেন; তার নেতৃত্বে কিশোর গ্যাংয়ের কার্যক্রম ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল।

তার বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার ইসাপুর/ভেন্ডারবাড়ি। পিতা মোঃ রাশেদ, মাতা সুমি বেগম—বর্তমানে পরিবারটি চট্টগ্রামের বিজয়নগরে বসবাস করেন।

তবে গ্রেফতারের পরও ভয়াবহ হুমকি থামেনি। যারা স্থানীয়ভাবে পুলিশের সাথে সরাসরি সহযোগিতা করেছেন—বিশেষত কয়েকজন বাড়িওয়ালা—তারা জিসানের প্রভাবশালী নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে খোলাখুলি হুমকির মুখে পড়েছেন। গ্রেফতার হওয়া সত্ত্বেও তার আশপাশের লোকজন ও শর্তসাপেক্ষ সহায়তাকারীর মাধ্যমে স্থানীয়দের উপর মানসিক চাপ ও আতঙ্ক সৃজিত করার চেষ্টা চলছে।

এলাকাবাসীর কণ্ঠে সংকেত “পুলিশ যদি অটল থাকে, অপরাধী চক্র ধ্বংস হবে; কিন্তু এখনো আমরা ভয়ে আছি—হুমকি থামেনি।”

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, গ্রেফতাকৃত আসামীকে যথাযথ পুলিশ স্কটের মাধ্যমে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে। সিএমপি’র বন্দর বিভাগ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—অপরাধী ও তাদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে এবার শাসনতান্ত্রিক ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অবশেষে পুলিশের জালে কুখ্যাত জিসান—বাড়িওয়ালাদের ওপর হুমকির তাণ্ডব