কুষ্টিয়ার শিল্পপতির স্ত্রীর লাখ টাকার আমগাছ উধাও, থানায় অভিযোগ

কে এম শাহীন রেজা কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়া কুমারখালীর শিল্পপতি দানবীর
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১২০ বার পঠিত

 

 

 

কুষ্টিয়া কুমারখালীর শিল্পপতি দানবীর আলাউদ্দিনের বাড়ী থেকে চুরি হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ‘মিয়াজাকি’ জাতের একটি আমগাছ। এটা ‘সূর্যডিম’ নামেও পরিচিত বিশেষ এই আম। দেড় থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয় মিয়াজাকি আম। সেই আমের চারা নিজ বাড়িতে রোপণ করেছিলেন কুষ্টিয়ার কুমারখালীর শিল্পপতি আলাউদ্দিন আহমেদ ও তার সহধর্মীনি। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুমারখালী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ব্যবস্থাপক সাইফুর রহমান।

নিরাপত্তার চাদরে ঘেরা বাড়িটির নাম ‘প্যারেন্ট লজ’। এটি উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন নগরে অবস্থিত। বাড়িটির মালিক হেলথকেয়ার ফার্মাসিটিক্যালের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আহমেদ। গাছটির দাম প্রায় লক্ষাধিক টাকা। প্রায় এক বছর আগে আলাউদ্দিন আহমেদ গাছটি জাপান থেকে নিয়ে এসে তার স্ত্রী সুরাইয়া বিলকিসের জন্মদিনে উপহার দিয়েছিলেন। আলাউদ্দিন আহমেদ ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক মো. সাইফুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আলাউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী গাছটি প্লাস্টিকের ড্রামে বিলাসবহুল বাড়ি প্যারেন্ট লজের দক্ষিণ পাশে লাগিয়েছিলেন গত ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে, কিন্তু ড্রামসহ গাছটি উধাও হয়ে যায়। সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও গাছটির সন্ধান না পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ব্যবস্থাপক সাইফুর রহমান।
বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আলাউদ্দিন নগরে অবস্থিত বিলাসবহুল সাদা রঙের বহুতল ভবন ‘প্যারেন্ট লজ’। বাড়িটির চারদিকে পাকা প্রাচীর। একাধিক প্রবেশ পথের বাড়িটি সিসিটিভি ক্যামেরা দারা আবৃত। গেটে ২৪ ঘন্টাই পাহারায় থাকেন বেশ কয়েকজন। প্রাচীরের ভেতরে সবুজায়নে ঘেরা রয়েছে দেশি-বিদেশি ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। তবে মিয়াজাকি জাতের আমগাছটি নেই। এসময় বাড়ির পাহারাদার আসাদুল ইসলাম বলেন, আমি ছয় মাস হলো যোগদান করেছি। গাছের বিষয় কিছু জানি না।

সবুজায়নের লক্ষ্যে প্যারেন্ট লজসহ শিক্ষাপল্লীর ভিতর সহ আশপাশের এলাকায় প্রায় ২ হাজারের বেশী বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে বলে জানান আলাউদ্দিন আহমেদ ফাউন্ডেশনের জ্যেষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক গোলাম হাফিজ। তিনি বলেন, গতবছর জন্মদিনে স্যার জাপান থেকে মিয়াজাকি আমগাছটি ম্যাডামকে উপহার দিয়েছিলেন। মূল্যবান গাছটির দাম লক্ষাধিক টাকা। কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও হঠাৎ গাছটি পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় আজ ব্যবস্থাপক থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জিয়াউর রহমান বলেন, মূল্যবান ও উপহারের গাছ হারানোর ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, একটি গাছ হারানোর এমন অভিযোগ, এই এলাকায় হয়তো এটিই প্রথম, তবে গাছটি উদ্ধারের জন্য ইতিমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

 

 

চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানাধীন বন্দরটিলা কাঁচাবাজার এলাকা বহু বছর ধরেই কিশোর গ্যাং ও অপরাধচক্রের দৌরাত্ম্যের শিকার ছিল। সম্প্রতি এলাকাবাসীর সরাসরি সহযোগিতা ও পুলিশের কৌশলগত অভিযানে কুখ্যাত কিশোর গ্যাং সদস্য জিসান মির্জা (১৬) গ্রেফতার হয়েছেন।

অভিযানটি পরিচালনা করেন ইপিজেড থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জামির হোসেন জিয়া। সিএমপি’র বন্দর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ আমিরুল ইসলাম নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ জাহাঙ্গীর, সহকারী পুলিশ কমিশনার (বন্দর জোন) মাহমুদুল হাসান এবং এসআই মোঃ আরিফ হোসেন নেতৃত্বে বিশেষ ফোর্স অভিযান চালান।

জিসানের বিরুদ্ধে ইপিজেড থানায় মামলা নং–০৫ (ধারা ৩৯৯/৪০২ দণ্ডবিধি) চলছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগ—তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে এলাকায় ভয়ঙ্কর অপরাধচক্রকে সংগঠিত করেছিলেন; তার নেতৃত্বে কিশোর গ্যাংয়ের কার্যক্রম ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল।

তার বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার ইসাপুর/ভেন্ডারবাড়ি। পিতা মোঃ রাশেদ, মাতা সুমি বেগম—বর্তমানে পরিবারটি চট্টগ্রামের বিজয়নগরে বসবাস করেন।

তবে গ্রেফতারের পরও ভয়াবহ হুমকি থামেনি। যারা স্থানীয়ভাবে পুলিশের সাথে সরাসরি সহযোগিতা করেছেন—বিশেষত কয়েকজন বাড়িওয়ালা—তারা জিসানের প্রভাবশালী নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে খোলাখুলি হুমকির মুখে পড়েছেন। গ্রেফতার হওয়া সত্ত্বেও তার আশপাশের লোকজন ও শর্তসাপেক্ষ সহায়তাকারীর মাধ্যমে স্থানীয়দের উপর মানসিক চাপ ও আতঙ্ক সৃজিত করার চেষ্টা চলছে।

এলাকাবাসীর কণ্ঠে সংকেত “পুলিশ যদি অটল থাকে, অপরাধী চক্র ধ্বংস হবে; কিন্তু এখনো আমরা ভয়ে আছি—হুমকি থামেনি।”

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, গ্রেফতাকৃত আসামীকে যথাযথ পুলিশ স্কটের মাধ্যমে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে। সিএমপি’র বন্দর বিভাগ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—অপরাধী ও তাদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে এবার শাসনতান্ত্রিক ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অবশেষে পুলিশের জালে কুখ্যাত জিসান—বাড়িওয়ালাদের ওপর হুমকির তাণ্ডব