গাংনীতে পাখিভ্যান ভাঙতে নিষেধ করায় আহত হলেন ছানোয়ারা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ৮৬ বার পঠিত

 

মেহেরপুরের গাংনীতে পাখিভ্যান ভাঙতে নিষেধ করায় ছানোয়ারা খাতুন (২৫) নামের এক গৃহবধূকে মেরে আহত ও হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন সৌদি আরব ফেরত মিজানুর রহমান মিজান। এবিষয়ে গাংনী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর), বিকেলে গাংনী থানায় উপস্থিত হয়ে অভিযোগ দায়ের তার স্বামী তারিকুল ইসলাম।
ঘটনাটি ঘটেছে গাংনী উপজেলার কাজীপুর ইউনিয়নের সাহেবনগর পইলা মাঠে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ১০ সেপ্টেম্বর ইউনিয়নের হাড়াভাঙ্গা তাগাদগিরি পাড়ার সৌদি আরব ফেরত মিজান ও তার ভাই সুজন জমি চাষের জন্য পাওয়ার টিলার নিয়ে যায় পইলার মাঠে। এসময় পাওয়ার টিলারের চাকায় কাচা মরিচ ক্ষেতের কিছু অংশ বিনষ্ট হয় সাহেবনগর চুড়িওয়ালা পাড়ার তারিকুল ইসলামের বোন জামাই কামরুলের। এনিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরদিন শনিবার বিকেল মাঠে এসে বেশ কয়েকটি মরিচের গাছ ওপড়ানো পেয়ে সুজনকে গাছ ওপড়ানোর কথা জিজ্ঞেস করে তারিকুল। এসময় সুজন তা কে উপড়িয়েছে জানেনা বলে জানায় এবং দু’পক্ষে আবারও কথা কাটাকাটি হয়। পরক্ষণে সুজন বাড়ি থেকে হাঁসুয়া নিয়ে তারিকুলকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধাওয়া করে ভারতীয় বর্ডার এলাকা পর্যন্ত নিয়ে যায়। এবং তারিকুল কে ধরতে না পারায় ফিরে আসে মরিচের জমিতে। সেখানে গ্যামা বোঝায় তারিকুলের পাখিভ্যান পেলে তা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং ভাংচুরের চেষ্টা করে সুজনের ভাই মিজান। এদিকে তারিকুল কে হত্যার উদ্দেশ্যে তাড়া করার খবর পেয়ে তার স্ত্রী ছানোয়ারা ছুটে আসে স্বামীকে বাঁচাতে। এসময় পাখিভ্যান ভাংচুরে বাঁধা প্রদান করলে তাকে গ্যামা দিয়ে বেদম প্রহার করতে থাকে মিজান এবং গলা টিপে ধরে হত্যার চেষ্টা করে। এতে ছাবোয়ারা অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। সে বর্তমানে চিকিৎসাধিন রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীর অনেকেই জানান, মিজান গলা টিপে ধরে উঁচু করে মাটিতে ফেলে দেয়। গ্যামা দিয়ে প্রহারও করে। ঘটনায় এলাকায় শতশত মানুষের সমগম ঘটে। তারা জানান, মিজান বিদেশ থেকে এসে টাকাওয়ালা লোক হয়ে এভাবে মহিলার শরীরে হাত উঠিয়ে অন্যায় করেছে। এর বিচার হওয়া জরুরি।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য হাবিব জানান, মিজান ও সুজন দু’ভাই মিলে ছানোয়ারাকে মারধর করেছে এবং গলা টিপে ধরে হত্যার চেষ্টা করেছে। পরে বাড়ি ফিরে গলা ফুলে যায় এবং প্রচন্ড ব্যাথা অনুভূত হলে শনিবার রাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পূর্বে তারিকুলের পাখিভ্যানে থাকা গ্যামা ফেলে দেয় এবং তা ভাংচুরে বাঁধা প্রদানে ছানোয়ারাকে মারধর করা হয়।
ছানোয়ারার স্বামী তারিকুল ইসলাম জানান, উগ্র মেজাজের মিজান আমার পাখিভ্যানে থাকা গ্যামা ফেলে দেয় এবং বাঁধা প্রদানে আমি না থাকায় আমার স্ত্রী কে গলা টিপে হত্যার চেষ্টা করে। এর পূর্বে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ওরা দু’ভাই হাঁসুয়া ও মাছ ধরা কুচ নিয়ে আমাকে ধাওয়া করে। আমি প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে গপলে আমার স্ত্রী’র উপর আক্রমণ করে।
তারিকুলের মা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ছেলে ভালো ছেলে। পাড়ায় কেউ আমার ছেলে খারাপ বকতে পারবেনা। অন্যায় ভাবে আমার ছেলেকে তাড়া ও ছেলের বউকে মারধর করেছে এবং পাখিভ্যান ভাংচুর করেছে মিজান। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
মিজান জানায়, এসব মিথ্যা কথা। আমি ওর শরীরে হাতই লাগায়নি। এনিয়ে কথা কাটাকাটি হলেও তার সমাধান হয়েছে। তিনি রাগান্বিত হয়ে বলেন, দীর্ঘদিন বিদেশ শেষে বাড়ি ফিরেছি। বিদেশে ওটায় করতাম। দেখে নেবো ওদের। আমিও কাহিনী সাজিয়ে মামলা করবো ওদের নামে।
এলাকাবাসীর অনেকেই জানান, হ্যাঁ শুনেছি মাঠে মারামারি হয়েছে। তারিকুলের বউকে নাকি মারধর করা হয়েছে। গলা টিপে হত্যার চেষ্টাও করেছে। রাগের বশে পাখিভ্যান ভাংচুর ও তার কেটে দেওয়ার তীব্র নিন্দা করেন তারা। এটা মিজানের ভুল হয়েছে বলেও জানান তিনারা।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর