চট্টগ্রাম–১১ বদলের প্রহরগণনা: ইসরাফিল খসরুর ভাষণে জনমতের কেন্দ্রবিন্দুতে ধানের শীষ”

মোঃ শহিদুল ইসলাম বিশেষ প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৪৪ বার পঠিত

 

চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানাধীন ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত কেন্দ্রভিত্তিক মেগা মতবিনিময় সভা গত শুক্রবার দক্ষিণ হালিশহর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে রূপ নেয় এক ব্যতিক্রমী রাজনৈতিক সমাবেশে। আলীশাহ পাড়া, হোন্দল পাড়া ও ফকির আহমদ পাড়া—এই তিনটি কেন্দ্রের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এই সভা শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়; বরং এলাকাবাসী ও রাজনৈতিক কর্মীদের প্রত্যাশা–আকাঙ্ক্ষার এক মিলনমেলা। মিছিল, শ্লোগান, ব্যানার আর উৎসাহে ভরপুর জনসমাগমে পুরো মাঠ যেন তরুণ প্রজন্মের প্রত্যাশার প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠে।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম–১১ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ইসরাফিল খসরু মাহমুদ চৌধুরী। নিজের বক্তব্যে তিনি চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতা, তরুণ ভোটারদের আগ্রহ এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত দৃঢ় ভাষায় তুলে ধরেন। তিনি বলেন,“বিগত দুঃশাসনের অন্ধকার পর্ব পেরিয়ে জনগণ আজ নতুন পরিবর্তনের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। তরুণ সমাজ এখন ধানের শীষকে শুধু একটি প্রতীক নয়, বরং গণমানুষের অধিকার রক্ষার আশ্রয় মনে করছে। আগামী বাংলাদেশ তরুণ প্রজন্মই গড়বে এবং তারা BNP–কে তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।”

ইসরাফিল খসরু আরও বলেন,“শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার আদর্শ ছাড়া এই দেশ কখনোই গণতন্ত্রের নিরাপদ পথে ফিরতে পারবে না। আমাদের প্রথম কাজ—ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো, তাদের কথা শোনা এবং তাদের প্রাপ্য ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। এখন আর পেছনে তাকানোর সময় নেই; সামনে এগোতেই হবে।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন মোঃ আশরাফ উদ্দিন এবং সঞ্চালনা করেন মোঃ মুজিবুর রহমান। সংগঠনের তৃণমূল নেতাদের মধ্যে সরফরাজ কাদের রাসেল, নূরুজ্জামান কন্ট্রাক্টর, মাহাবুব এলাহী, রোকন উদ্দিন মাহমুদ খলিল, মোঃ জাবেদ আনসারী, মোঃ শাহজাহানসহ যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। তাদের বক্তব্যে উঠে আসে বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, মানুষের দুঃখ–বেদনা, জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার লড়াই এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দলের কৌশলগত প্রস্তুতির নানা দিক।

বক্তারা বলেন,“দেশের মানুষ আজ নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। রাজনৈতিক স্থবিরতা, মূল্যবৃদ্ধি, বেকারত্ব—সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষ বিকল্প শক্তি হিসেবে বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। মানুষের আস্থা ধরে রাখতে প্রতিটি কেন্দ্রে শক্তিশালী টিম গঠন করতে হবে এবং নেতাকর্মীদের সচেতন থাকতে হবে।”তারা আরও বলেন,“সংগঠনকে নতুন করে উজ্জীবিত করতে হলে তৃণমূলকে গুরুত্ব দিতে হবে। আন্দোলন–সংগ্রামে যারা জীবন বাজি রেখে মাঠে ছিল, তাদের সম্মান ও মূল্যায়ন করতে পারলেই বিজয়ের পথ সহজ হবে।”

মতবিনিময় সভাকে ঘিরে বন্দরটিলা এলাকায় তৈরি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ। তরুণ–যুবকদের বিশাল অংশগ্রহণ, সুশৃঙ্খল মিছিল ও স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো এলাকা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের তৃণমূলকেন্দ্রিক সভা আসন্ন নির্বাচনে জনগণের মনোভাব বোঝা ও সাংগঠনিক শক্তি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দলীয় সূত্র জানায়, আগামী কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ শনিবার সন্ধ্যায় সিমেন্ট ক্রসিং সি–ড্যাফোডিল স্কুলের পিছনের মাঠে সি–ইউনিট কেন্দ্রভিত্তিক আরও একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে নির্বাচনী প্রস্তুতি ও মাঠ পরিচালনা বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।

এদিনের সভা শুধু রাজনৈতিক বক্তব্যে সীমাবদ্ধ ছিল না—এটি ছিল পরিবর্তনের প্রত্যাশা ধরে রাখার একটি অঙ্গীকার। নেতৃবৃন্দের আশা, এই ধারা অব্যাহত থাকলে দক্ষিণ হালিশহরসহ পুরো চট্টগ্রাম নগরীতে বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি আরও শক্ত ভিত্তিতে দাঁড়াবে এবং তরুণদের আস্থা আগামী রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণ করবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর