বিসিডিএস-এর অমানবিক ধর্মঘটের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ—আলমগীর নূরের ঘোষণা,“রোগীদের জিম্মি করে নাটক নয়”

বিশেষ সংবাদদাতাঃ
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৫
  • ২৭ বার পঠিত

 

 

বাংলাদেশ কেমিস্টস্ অ্যান্ড ড্রাগিস্টস্ সমিতি (বিসিডিএস) কর্তৃক আগামী ৩ নভেম্বর সারাদেশে ঘোষিত সকাল-সন্ধ্যা ঔষধের দোকান বন্ধ রাখার একতরফা কর্মসূচির বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। মানবিক দায়িত্ব ও জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে চট্টগ্রামের হাজারী লেইন ঔষধ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি দোকান খোলা রাখার ঘোষণা দিয়েছে।

সমিতির সহ-সভাপতি ও নন্দন ফার্মার প্রোপ্রাইটর আলমগীর নূর শনিবার (০২ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন—“ঔষধ শুধু ব্যবসা নয়, এটি মানুষের প্রাণরক্ষার সেবা। কোনো অজুহাতে অসুস্থ রোগীকে ঔষধ থেকে বঞ্চিত করা মানবতার পরিপন্থী অপরাধ। আমরা কোনো দল বা ব্যক্তির স্বার্থে নয়, মানুষের জীবনের স্বার্থেই দোকান খোলা রাখব।”

তিনি বলেন, “কিছু নেতৃত্বহীন মানুষ নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে সাধারণ জনগণকে জিম্মি করার ঘৃণ্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। দাবি আদায়ের নামে জনগণের কষ্টের ওপর রাজনীতি করা সম্পূর্ণ অন্যায়, অনৈতিক এবং অমানবিক। ঔষধের দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তটি কেবল জনগণের নয়, বরং সমিতির সুনাম ও অস্তিত্বের জন্যও আত্মঘাতী।”

অভিযোগ ও প্রতিবাদের মূল কারণসমূহঃ ১/আলোচনা নয়, একতরফা সিদ্ধান্ত: ৪৩ জন পরিচালকের মধ্যে মাত্র ১৩ জনের মতামতের ভিত্তিতে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে বোঝা যায়, কেন্দ্রীয় কমিটিতে কোনো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বা স্বচ্ছতা নেই। এমন অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত পুরো দেশের ব্যবসায়ীদের হেয় প্রতিপন্ন করছে।

২/ জনগণকে জিম্মি করে ‘নাটক’ রচনা:আলমগীর নূর বলেন, “ওষুধ শিল্প সমিতি ইতোমধ্যে ১৯% কমিশন দিতে রাজি ছিল। কিন্তু কিছু ব্যর্থ নেতা আলোচনায় ব্যর্থ হয়ে এখন ধর্মঘটের নামে নাটক করছে। নিজেদের আসন্ন নির্বাচন ও ব্যক্তিগত স্বার্থে দেশের অসুস্থ মানুষদের জিম্মি করছে।”

৩/ আইনগত দায় থেকে মুক্ত নয়:তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন,“এই ধর্মঘটের কারণে যদি কোনো রোগী সময়মতো ঔষধ না পেয়ে মৃত্যুবরণ করেন, তবে এর পূর্ণ দায়ভার নিতে হবে কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মইনুল হক চৌধুরী গংকে। এটি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।”

৪/ আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান সম্ভব:সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়, ঔষধ বিক্রয় কমিশন ১২% থেকে ২৫%-এ উন্নীত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ দাবি
আলাপ-আলোচনার টেবিলে বসেই সমাধান করা সম্ভব। চেয়ারে বসে যে সমস্যার সমাধান সম্ভব, সেখানে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত কেবল অযৌক্তিক নয়, জনগণবিরোধীও।

“আমরা আন্দোলন করব, তবে তা হবে দোকান খোলা রেখে—জনগণের কষ্ট না বাড়িয়ে। জীবনরক্ষাকারী ঔষধের সরবরাহ কখনও বন্ধ হবে না। আমরা রাজপথে, নীতিনিষ্ঠ ও সময়োপযোগী উপায়ে আন্দোলন চালাব। কিন্তু কোনোভাবেই রোগীর জীবন নিয়ে রাজনীতি হতে দেব না।”

তিনি কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের প্রতি অবিলম্বে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানান এবং চট্টগ্রামের সকল ঔষধ ব্যবসায়ীকে ০৩ নভেম্বর দোকান খোলা রাখার অনুরোধ করেন।

“জনগণের জীবনই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আমরা জনসেবার পক্ষে, জিম্মিদশার বিরুদ্ধে। ৩ নভেম্বর চট্টগ্রামের প্রতিটি ফার্মেসি খোলা থাকবে—রোগীর জীবন বাঁচাতে, মানবতার সেবায়।”

হাজারী লেইন ঔষধ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি জানিয়েছে, তারা সাধারণ জনগণের পাশে থেকে ন্যায্য দাবি আদায়ে দায়িত্বশীলভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবে। সমিতির নেতারা বলেন, “বাণিজ্য নয়, মানবসেবা—এই নীতিতেই আমরা ঐক্যবদ্ধ।”

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর