সেনাবাহিনীর উপর হামলা ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার তীব্র নিন্দা সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের

বিশেষ প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১১৪ বার পঠিত

 

দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও সশস্ত্র সংগঠন নিষিদ্ধের দাবি পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় সেনাবাহিনীর উপর হামলা, মসজিদ ভাঙচুর, দোকানপাট লুটপাট, বাজারে অগ্নিসংযোগ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ঘটনাকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে “সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ”।

রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদবিবৃতিতে সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মো. মোস্তফা আল ইহযায এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বিবৃতিতে তিনি হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৬ সেপ্টেম্বর ইউপিডিএফ নামের সশস্ত্র সংগঠন একটি তথাকথিত ধর্ষণবিরোধী মহাসমাবেশের আড়ালে খাগড়াছড়ি সদরে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। এ সময় সেনাবাহিনীর উপরও হামলা চালানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করলেও উগ্রপন্থীরা দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট এবং স্থানীয় বাঙালি জনগোষ্ঠীর উপর হামলা চালায়। এতে শতাধিক মানুষ আহত হয় বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

গত (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে গুইমারায় ফের সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এতে ১১ সেনা সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন সাধারণ মানুষ আহত হন। একই সঙ্গে উপজেলায় বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার সিঙ্গিনালা এলাকায় এক অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মূল আসামি শয়ন শীল (১৯)কে দ্রুত গ্রেফতার করে পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়। তাকে আদালত ৭ দিনের রিমান্ডে পাঠায়। একই মামলায় আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

কিন্তু দুঃখজনকভাবে ইউপিডিএফ ও এর সহযোগী সংগঠন বৃহত্তর পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (বিপিএসসি) এ ঘটনাকে আড়াল করে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে। “পাহাড় থেকে সেনা হটাও” স্লোগান তুলে ধর্ষণের মতো মানবিক ইস্যুকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে বিবৃতিতে অভিযোগ আনা হয়।

সংবাদবিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাস্তবে সেনাবাহিনী বরাবরই পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করছে। জটিল ভৌগোলিক পরিবেশেও পাহাড়ি–বাঙালি নির্বিশেষে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। অপরাধ দমন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, দুর্যোগ মোকাবিলা, শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা—সব ক্ষেত্রেই সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।

সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মো. মোস্তফা আল ইহযায বলেন—বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের গর্ব ও অহংকার। তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার কোনভাবেই সহ্য করা হবে না। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি—হামলাকারী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার, ইউপিডিএফ-জেএসএসসহ সব উগ্র সংগঠনের কার্যক্রম স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ এবং কঠোরভাবে দমন করা হোক।”

তিনি আরও বলেন, অন্যথায় দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে উগ্র সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

 

 

চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানাধীন বন্দরটিলা কাঁচাবাজার এলাকা বহু বছর ধরেই কিশোর গ্যাং ও অপরাধচক্রের দৌরাত্ম্যের শিকার ছিল। সম্প্রতি এলাকাবাসীর সরাসরি সহযোগিতা ও পুলিশের কৌশলগত অভিযানে কুখ্যাত কিশোর গ্যাং সদস্য জিসান মির্জা (১৬) গ্রেফতার হয়েছেন।

অভিযানটি পরিচালনা করেন ইপিজেড থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জামির হোসেন জিয়া। সিএমপি’র বন্দর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ আমিরুল ইসলাম নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ জাহাঙ্গীর, সহকারী পুলিশ কমিশনার (বন্দর জোন) মাহমুদুল হাসান এবং এসআই মোঃ আরিফ হোসেন নেতৃত্বে বিশেষ ফোর্স অভিযান চালান।

জিসানের বিরুদ্ধে ইপিজেড থানায় মামলা নং–০৫ (ধারা ৩৯৯/৪০২ দণ্ডবিধি) চলছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগ—তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে এলাকায় ভয়ঙ্কর অপরাধচক্রকে সংগঠিত করেছিলেন; তার নেতৃত্বে কিশোর গ্যাংয়ের কার্যক্রম ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল।

তার বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার ইসাপুর/ভেন্ডারবাড়ি। পিতা মোঃ রাশেদ, মাতা সুমি বেগম—বর্তমানে পরিবারটি চট্টগ্রামের বিজয়নগরে বসবাস করেন।

তবে গ্রেফতারের পরও ভয়াবহ হুমকি থামেনি। যারা স্থানীয়ভাবে পুলিশের সাথে সরাসরি সহযোগিতা করেছেন—বিশেষত কয়েকজন বাড়িওয়ালা—তারা জিসানের প্রভাবশালী নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে খোলাখুলি হুমকির মুখে পড়েছেন। গ্রেফতার হওয়া সত্ত্বেও তার আশপাশের লোকজন ও শর্তসাপেক্ষ সহায়তাকারীর মাধ্যমে স্থানীয়দের উপর মানসিক চাপ ও আতঙ্ক সৃজিত করার চেষ্টা চলছে।

এলাকাবাসীর কণ্ঠে সংকেত “পুলিশ যদি অটল থাকে, অপরাধী চক্র ধ্বংস হবে; কিন্তু এখনো আমরা ভয়ে আছি—হুমকি থামেনি।”

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, গ্রেফতাকৃত আসামীকে যথাযথ পুলিশ স্কটের মাধ্যমে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে। সিএমপি’র বন্দর বিভাগ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—অপরাধী ও তাদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে এবার শাসনতান্ত্রিক ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অবশেষে পুলিশের জালে কুখ্যাত জিসান—বাড়িওয়ালাদের ওপর হুমকির তাণ্ডব