দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও সশস্ত্র সংগঠন নিষিদ্ধের দাবি পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় সেনাবাহিনীর উপর হামলা, মসজিদ ভাঙচুর, দোকানপাট লুটপাট, বাজারে অগ্নিসংযোগ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ঘটনাকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে “সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ”।
রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদবিবৃতিতে সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মো. মোস্তফা আল ইহযায এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বিবৃতিতে তিনি হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৬ সেপ্টেম্বর ইউপিডিএফ নামের সশস্ত্র সংগঠন একটি তথাকথিত ধর্ষণবিরোধী মহাসমাবেশের আড়ালে খাগড়াছড়ি সদরে ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। এ সময় সেনাবাহিনীর উপরও হামলা চালানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করলেও উগ্রপন্থীরা দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট এবং স্থানীয় বাঙালি জনগোষ্ঠীর উপর হামলা চালায়। এতে শতাধিক মানুষ আহত হয় বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
গত (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে গুইমারায় ফের সেনাবাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এতে ১১ সেনা সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন সাধারণ মানুষ আহত হন। একই সঙ্গে উপজেলায় বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার সিঙ্গিনালা এলাকায় এক অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মূল আসামি শয়ন শীল (১৯)কে দ্রুত গ্রেফতার করে পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়। তাকে আদালত ৭ দিনের রিমান্ডে পাঠায়। একই মামলায় আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে ইউপিডিএফ ও এর সহযোগী সংগঠন বৃহত্তর পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (বিপিএসসি) এ ঘটনাকে আড়াল করে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে। “পাহাড় থেকে সেনা হটাও” স্লোগান তুলে ধর্ষণের মতো মানবিক ইস্যুকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে বিবৃতিতে অভিযোগ আনা হয়।
সংবাদবিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বাস্তবে সেনাবাহিনী বরাবরই পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করছে। জটিল ভৌগোলিক পরিবেশেও পাহাড়ি–বাঙালি নির্বিশেষে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। অপরাধ দমন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, দুর্যোগ মোকাবিলা, শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবা—সব ক্ষেত্রেই সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মো. মোস্তফা আল ইহযায বলেন—বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের গর্ব ও অহংকার। তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার কোনভাবেই সহ্য করা হবে না। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি—হামলাকারী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার, ইউপিডিএফ-জেএসএসসহ সব উগ্র সংগঠনের কার্যক্রম স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ এবং কঠোরভাবে দমন করা হোক।”
তিনি আরও বলেন, অন্যথায় দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে উগ্র সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।