হত্যা মামলার আসামী কুষ্টিয়ার কাউন্সিলর কৌশিক গ্রেফতার

কে এম শাহীন রেজা কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ॥
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১২২ বার পঠিত

২৪.০৯.২৫
হত্যা মামলার আসামী কুষ্টিয়ার কাউন্সিলর কৌশিক গ্রেফতার
কে এম শাহীন রেজা কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি ॥
কুষ্টিয়ায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে বাবু হত্যা মামলার আসামি কুষ্টিয়া পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর কৌশিক আহমেদ ওরফে বিচ্ছুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কুষ্টিয়া শহরের আড়য়াপাড়া রফরশাহের মাজারের কাছে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। বিচ্ছুর বাবার নাম মো: মিজানুর রহমান (মুন্না), তিনি কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়া পাড়ার বাসিন্দা ও টাইগার আলমের ভাস্তে।
প্রশাসনের একাধিক গোয়েন্দা সূত্রে যানা যায়, এই কৌশিক আহমেদ ওরফে বিচ্ছু শীর্ষ চরমপন্থী থেকে আওয়ামী লীগ নেতা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চরমপন্থি সংগঠন জাসদ গণবাহিনী কালুর মাস্টারমাইন্ড কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইবি থানার দুর্বাচারা গ্রামের জাহাঙ্গীর কবির লিপটনের একান্ত ঘনিষ্ঠজন। দীর্ঘ ১৫/১৬ বছর ধরে লিপ্টন তার ক্যাডার বাহিনী ও দলীয় ক্ষমতার প্রভাবে তার বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলতে পারেনি। গত ৬ জুন তিন সহযোগী সহ একাধিক অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রসহ লিপটনকে আটক করে কুষ্টিয়ার সেনাবাহিনীর একটি আভিযানিক দল। তবে সেনা বাহিনী তার অস্ত্র ভান্ডারের ৫% অস্ত্রও উদ্ধার করতে পারে নাই বলে তারা জানান। এই লিপটন ও কালুর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া শহর নিয়ন্ত্রনের দায়িত্ব পেয়েছিল কৌশিক আহমেদ ওরফে বিচ্ছু। যে কারনে বিচ্ছু এত বেশী বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল যে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তার অত্যাচারে ভোগান্তির শিকার হলেও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তিনি গ্রেফতার এড়াতে সক্ষম হন। অবশেষে সোমবার বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে রফরশাহের মাজারের কাছ থেকে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি (তদন্ত) জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃত কাউন্সিলর কৌশিক আহমেদ বিচ্ছুর বিরুদ্ধে পূর্বের মামলাগুলো পুনরায় তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে নতুন করে একাধিক অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উলেখ্য, কৌশিক আহমেদ বিচ্ছু দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়া পৌর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল ও আধিপত্য বিস্তার করে আসছিলেন। আ’লীগ নেতা ও পৌর কাউন্সিলরের পরিচয়কে ঢাল বানিয়ে তিনি নানা অপকর্ম চালিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত আইনের জালে ধরা পড়লেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর

 

 

চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানাধীন বন্দরটিলা কাঁচাবাজার এলাকা বহু বছর ধরেই কিশোর গ্যাং ও অপরাধচক্রের দৌরাত্ম্যের শিকার ছিল। সম্প্রতি এলাকাবাসীর সরাসরি সহযোগিতা ও পুলিশের কৌশলগত অভিযানে কুখ্যাত কিশোর গ্যাং সদস্য জিসান মির্জা (১৬) গ্রেফতার হয়েছেন।

অভিযানটি পরিচালনা করেন ইপিজেড থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জামির হোসেন জিয়া। সিএমপি’র বন্দর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ আমিরুল ইসলাম নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ জাহাঙ্গীর, সহকারী পুলিশ কমিশনার (বন্দর জোন) মাহমুদুল হাসান এবং এসআই মোঃ আরিফ হোসেন নেতৃত্বে বিশেষ ফোর্স অভিযান চালান।

জিসানের বিরুদ্ধে ইপিজেড থানায় মামলা নং–০৫ (ধারা ৩৯৯/৪০২ দণ্ডবিধি) চলছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগ—তিনি দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে এলাকায় ভয়ঙ্কর অপরাধচক্রকে সংগঠিত করেছিলেন; তার নেতৃত্বে কিশোর গ্যাংয়ের কার্যক্রম ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল।

তার বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার ইসাপুর/ভেন্ডারবাড়ি। পিতা মোঃ রাশেদ, মাতা সুমি বেগম—বর্তমানে পরিবারটি চট্টগ্রামের বিজয়নগরে বসবাস করেন।

তবে গ্রেফতারের পরও ভয়াবহ হুমকি থামেনি। যারা স্থানীয়ভাবে পুলিশের সাথে সরাসরি সহযোগিতা করেছেন—বিশেষত কয়েকজন বাড়িওয়ালা—তারা জিসানের প্রভাবশালী নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে খোলাখুলি হুমকির মুখে পড়েছেন। গ্রেফতার হওয়া সত্ত্বেও তার আশপাশের লোকজন ও শর্তসাপেক্ষ সহায়তাকারীর মাধ্যমে স্থানীয়দের উপর মানসিক চাপ ও আতঙ্ক সৃজিত করার চেষ্টা চলছে।

এলাকাবাসীর কণ্ঠে সংকেত “পুলিশ যদি অটল থাকে, অপরাধী চক্র ধ্বংস হবে; কিন্তু এখনো আমরা ভয়ে আছি—হুমকি থামেনি।”

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, গ্রেফতাকৃত আসামীকে যথাযথ পুলিশ স্কটের মাধ্যমে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে। সিএমপি’র বন্দর বিভাগ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে—অপরাধী ও তাদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে এবার শাসনতান্ত্রিক ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অবশেষে পুলিশের জালে কুখ্যাত জিসান—বাড়িওয়ালাদের ওপর হুমকির তাণ্ডব