হরিণাকুন্ডুতে সভাপতি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

বাচ্চু মিয়া, হরিণাকুন্ড থেকে
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ৭০৯ বার পঠিত

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভালকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগ বোর্ড গঠন করে অর্থের বিনিময়ে অনিযম-দুর্ণীতি, জালিয়াতি করে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য আনোয়ার হোসেন, নিয়োগ বি তরা ও সচেতন এলাকাবাসী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খালেদুজ্জামান খালেক ও সভাপতিকে অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে বৈধ ভাবে নিয়োগের জন্য দাবী জানান।

 

ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য সাবনুর বলেন, ৪ সেপ্টেম্বর রোববার ভালকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদে নিয়োগে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এলাকাবাসী ও অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, ভালকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খালেদুজ্জামান খালেক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইয়ামিন চৌধুরী ও শিক্ষক সোলাইমান হোসেনের যোগসাজসে ব্যাপক দূর্ণীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, অফিস সহায়ক, নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদে নিয়োগ কার্যক্রম শেষ হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য আনোয়ার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, গোপনে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তথ্য গোপন রেখে এই নিয়োগকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

 

৫ সদস্যের যে নিয়োগ বোর্ড গঠন করা হয়েছে তা সম্পুর্ন অবৈধ বলে দাবি করেন তিনি। নিয়োগ বোর্ডে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচিত অভিভাবক সদস্যদের বাদ দিয়ে কামাল হোসেন নামের এক প্রধান শিক্ষককে নিয়োগ বোর্ডের সদস্য করেছেন প্রধান শিক্ষক খালেদুজ্জামান খালেক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলুল হক। প্রধান শিক্ষক খালেক, সভাপতি চৌধুরী ও সোলাইমান নামের শিক্ষক মিলে চক্রটি প্রত্যেকের কাছ থেকে ৮ থেকে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়ে পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিয়েছেন এমন অভিযোগ করেন নিয়োগ বি ত একাধিক প্রার্থীরা।

 

নিয়োগে ৩০ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকার বাণিজ্য করেছেন খালেকসহ ওই চক্র। ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য আনোয়ার হোসেন আরো বলেন, প্রধান শিক্ষক আমাদের নিয়োগ বোর্ড ও নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ সর্ম্পকে কোন কিছুই অবগত করেনি। তিনি আরো বলেন, প্রতিষ্ঠানের সম্মান ক্ষুন্ন করে দুর্ণীতি অনিয়মের মাধ্যমে কৌশলে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির বিদ্যুৎসায়ী সদস্য শিপন আলী বলেন, নাইম নামের এক প্রার্থী নিরাপত্তাকর্মী পদে আবেদন করেন। তাকে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আরেক প্রার্থী খায়রুল ইসলাম একাই অফিস সহায়কসহ দুই পদে আবেদন করেন তাকে নিরাপত্তাকর্মী পদে নিযোগ দেয়া হয়েছে। খায়রুল একাই দুই পদে আবেদন করেন।

 

একই সময়ে লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষা নেয়ায় নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তমছের আলী নামের এক ব্যক্তি জানান, ছেলের চাকরীর জন্য গরু বিক্রি করে সভাপতির কাছে টাকা দিলেও শেষে চাকরী হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অধিদপ্তর তদন্ত পূর্বক চার কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্য বাতিল করে সুষ্ঠু নিয়মে নিয়োগ দিয়ে প্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষুন্ন রাখার দাবী জানান এলাকাবাসী। এ বিষয়ে এলাকাবাসী বলেন, এই নিয়োগের জন্যই নিজের পছন্দের লোকজন দিয়ে গোপনে নিয়োগ বোর্ড গঠন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এ বিষয়ে ভালকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়েরর প্রধান শিক্ষক খালেদুজ্জামান খালেক বলেন, আমি বৈধ ভাবেই নিয়োগ দিয়েছি। পরিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র দেখতে চাইলে, তিনি ম্যানেজিং কমিটির অনুমতি ছাড়া দেখানো যাবে না বলে জানিয়ে দেন। প্রার্থীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান। এ বিষয়ে ডিজির প্রতিনিধি ও হরিণাকুন্ডু সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা সামাওযাত বলেন, ভালকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চার কর্মচারী নিয়োগে আমি ওই বোর্ডের একজন সদস্য ছিলাম।

 

 

সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, সভাপতি তারাই মুলত প্রার্থী বাছাই করে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেন। দুইজন প্রার্থী একাধিক পদে আবেদন করলেও তাদের এক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, ‘সব কিছু বিধি মোতাবেক হয়েছে। স্বচ্ছভাবে প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’ হরিণাকুন্ডু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফজলুল হক বলেন, ভালকী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পায়নি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর