রংপুরের গংগাচড়ায় তামাক উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে বিড়ি সিগারেট কোম্পানি গুলো নানা উদ্যোগ গ্রহন করেছে। রংপুর তামাক এর জন্য বিখ্যাত আর রংপুরের গংগাচড়ায় ব্যাপক হারে উৎপাদন হতো এই তামাক এটা সবার জানা কিন্তুু তামাক চাষ ধীরে ধীরে অলাভজনক হওয়ায় এখানকার কৃষক দিনে দিনে তামাক চাষ কমায় দিয়ে অন্যান্য ফসল যেমন ভূট্টা গম বোরো ধান ইত্যাদি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছিল।

কৃষকের উৎপাদিত তামাক বড় বড় কোম্পানি,আকিজ ট্যোবাকো,আবুল
টোব্যাকো,বি টি সি টোব্যাকো নাসির টোব্যাকো কোম্পানি ছাড়াও ছোট ছোট আরও অনেক বিড়ি সিগারেট ফ্যাক্টরী ক্রয় করে থাকেন। কিন্তুু ধীরে ধীরে তামাক উৎপাদন কমায় এসব কোম্পানি চাষিদের মাঝে তামাকের আগাম মুল্য নির্ধারণ বীজ বিতরন ও তামাক ক্রয় কার্ড দেওয়া সহ নানা উদ্যোগ গ্রহন করেছে।

এ বিষয়ে গংগাচড়ার কোলকোন্দ ইউনিয়নের বেশ কিছু কৃষক আমাদের প্রতিবেদক কে জানান ধীরে ধীরে আমরা তামাক চাষ কমায় দিয়ে ভূট্রা,বোরো ধান ও অন্যান্য ফসল উৎপাদন করছিলাম কিন্তু বর্তমান তামাক চাষ করলে বেশি লাভবান হওয়া যায়। অন্যান্য কৃষকের ন্যায় কোলকোন্দ আলেকিশামত গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম (২৮)জানান আমি গত বছর বি টি সি কোম্পানির তামাক ক্রয় কার্ড করে তামাক উৎপাদন করে লাভজনক হয়েছি তাই এবার আর ও বেশি করে তামাক লাগাবো। এখানকার কৃষক নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে তামাকের চাষ করে থাকে তাই এটাকে মাথায় রেখে কোম্পানি গুলো বিভিন্ন ভাবে তৎপরতা শুরু করেছেন।

বি টি সি কোম্পানির প্রতিনিধি সুজন জানান আমাদের কোম্পানির তামাকের প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে আমরা কৃষকদের মাঝে অগ্রিম বিক্রয় কার্ড বীজ বিতরণ করছি যাতে কৃষকরা উৎসাহীত হয়ে তামাক উৎপাদন করে আমাদের কোম্পানিতে বিক্রি করে। এ বছর গংগাচড়ায় প্রায় ১০০০ কৃষকের মাঝে এ কার্ড বিতরন করা হবে।

স্থানীয় সচেতন জনগন মনে করেন সরকার যেখানে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাক মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় গ্রহন করেছেন সেখানে কোম্পানি গুলোর তৎপরতায় কতটুকু সফল হবে তা বিবেচ্য বিষয়।

গংগাচড়ায় তামাক উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে বিড়ি সিগারেট কোম্পানির নানা উদ্যোগ গ্রহন।

উলিপুরে সেলাই প্রশিক্ষণসহ আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও দারিদ্রতা দূরিকরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে হত-দরিদ্র নারীদের প্রশিক্ষণের নামে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছে করতোয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রকল্প নামের একটি ভূয়া প্রতিষ্ঠান। এ ব্যাপারে আজ সোমবার দুপুরে ভুক্তভোগী কর্মীসহ প্রতারিতরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, করতোয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রকল্প নামের একটি ভূয়া প্রতিষ্ঠান চলতি বছরের মে মাসে উপজেলার দূর্গাপুর বাজারের পার্শ্বে জনৈক আলহাজ্ব সৈয়দ আলীর বাড়ি ভাড়া নিয়ে অফিস খুলে বসেন। এরপর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতারনার ফাঁদ পেতে দর্জি প্রশিক্ষণ ও হস্তশিল্প আই. এইচ. আর. জে.এস সহযোগিতা ও রেজি নং ১০২৭২-২০০৯ ব্যবহার করে প্রশিক্ষক নিয়োগ দেন। পরে নিয়োগকৃত বেতনভোগি এসব প্রশিক্ষকের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় ২‘শ ৫০টি গ্রুপে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার উপকারভোগির তালিকা তৈরি করেন। এসব উপকারীভোগিদের কাছে থেকে প্রাথমিক সদস্য ভর্তি ফিসহ প্রতি ব্যক্তির কাছে ৩৩০ টাকা করে প্রায় ২৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। পরে পর্যায়ক্রমে এসব উপকারীভোগিদের কাছে প্রশিক্ষণ ও সেলাই-মেশিনসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেয়ার কথা বলে এক থেকে দেড় হাজার টাকা করে নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে প্রায় কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নেয়। হঠাৎ প্রকল্পটির দায়িত্ব প্রাপ্ত ম্যানেজারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের মোবাইল নাম্বার বন্ধ ও তাদের কথাবার্তার অসংলগ্নতা দেখা দিলে কর্মি ও প্রশিক্ষকদের মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় উপকারভোগীরা বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন করতোয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রকল্পটি ভূয়া।
সিনিয়র ট্রেইনার মনি আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ৪ মাস আগে প্রকল্পটির নিয়োগ পেয়ে আামি ৩৫ টি গ্রুপের মাধ্যমে ১ হাজারেরও বেশি উপকারভোগী তালিকা তৈরি করে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা নগদ ও বিকাশের মাধ্যমে তাদেরকে প্রদান করি। অপর এক ট্রেইনার হামিদা পারভীন বলেন, ২৩টি গ্রুপের মাধ্যমে ৬৯০ জন উপকারভোগির কাছ থেকে প্রায় আড়াই লাখ টাকারও বেশি তাদের প্রদান করি। কর্মী মাসুমা, মনিষা, সুমি, বিজলী বেগম, হাফিজা বেগম, মনিরা বেগম, রোজিনা, তাহমিনা, বাসনাসহ নিয়োগকৃত শতাধিক কর্মি জানান, তাদের মাধ্যমে প্রায় কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দেয় ওই প্রতারক চক্র। প্রকল্পটির ম্যানেজার মাহফুজার রহমান মিলনের সাথে একাধিকবার মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বাড়ির মালিক আলহাজ্ব সৈয়দ আলী জানান, মাহফুজার রহমান মিলন নামের এক যুবক আমার কাছে দর্জি প্রশিক্ষণের কথা বলে বাড়ি ভাড়া নেয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল কাদের বলেন, থানার অফিসার ইনচার্জকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

উলিপুরে করতোয়া কারিগরী প্রকল্পের নামে ভুয়া প্রতিষ্ঠান কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও।