সারাদেশেই ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রন) আইন অমান্য করেই চলেছে ধূমপায়ীরা। ধূমপায়ীদের কারণে সুরভী উদ্যান সহ মহানগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। ফলে নির্মল পরিবেশে আনন্দ উপভোগ করতে আসা বিনোদনপ্রেমিদের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। এসব স্থানে প্রতিনিয়তই আইন অমান্য করলেও সেসব ধূমপায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা এমন অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন বিনোদনপ্রেমিরা। একই সাথে ধূমপানের বিষাক্ত ধোঁয়া থেকে শিশুসহ সকলকে রক্ষা করতে মহানগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলো সার্বক্ষনিক আইনপ্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন বিনোদনপ্রেমিরা। নয়তো, অদূর ভবিষ্যতে যত্রতত্র ধূমপানের কারণে বিনোদন কেন্দ্রগুলো মানুষশূন্য হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন তারা। রংপুরে বিনোনদপ্রেমিদের বিনোদনের অন্যতম স্থানগুলো চিকলী পার্ক, চিড়িয়াখানা, শিশুপার্ক, সুরভি উদ্যান। রংপুর নগরীর পার্কগুলো নৈস্বর্গিক দৃশ্য যে কাউকে আকৃষ্ট করবেই। চিকলী পার্ক নয়নাভিরাম সৌন্দর্য্য অবলোকনে শিশু থেকে বৃদ্ধদের উপচেপড়া ভিড় যেন লেগেই থাকে। কিন্তু নির্মল চিকলী পার্কের ¯িœগ্ধ-কোমল বিশুদ্ধ বাতাস এখন ধূমপায়ীদের ধূমপানের ধোঁয়ায় বিষাক্ত হয়ে উঠেছে। ফলে প্রতিদিনই নির্মল বিনোদন নিতে আসা শিশুসহ হাজারো বিনোদনপ্রেমিরা ক্রমেই ধূমপায়ীদের বিষাক্ত নিকোটিনের ধোঁয়ার কবলে পড়ে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির দিকে ধাবিত হচ্ছে। কিছুদিন রংপুর মহানগরীর বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা গেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিনোদনপ্রেমিদের পদচারণায় মুখর রয়েছে। কিন্তু এখন নির্মল পরিবেশে থাকা হাজারো মানুষের ভিড়ের মধ্যেই ধূমপায়ীদের ধূমপানের দৃশ্য হতবাক। রীতিমত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত পোষাকেও (ইউনিফর্ম) ধূমপান করতে দেখা যাচ্ছে। যে দৃশ্য হতবাক হয়ে মূর্তির ন্যয় দাঁড়িয়ে পড়ছে সকলেই। চিকলী পার্কে বেড়াতে আসা বিনোদনপ্রেমিদের ভাবিয়ে তুলেছে। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে রংপুর চিড়িয়াখানায় বেড়াতে আসা মহানগরীর কামাল কাছনা এলাকার বাসিন্দা মোঃ আলতাফ হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চিড়িয়াখানায় নির্মল বিনোদনের জন্য অত্যন্ত সুন্দর একটি পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। এখানে শিশু থেকে বৃদ্ধ বয়সের বিভিন্ন শ্রেনি-পেশার মানুষের সমাগম বিরাজমান। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই পাবলিক প্লেসে কর্মজীবিদের সাথে পাল্লা দিয়ে স্কুল ড্রেসে থাকা কিশোর কিশোরীরাও দেদারছে ধূমাপান করছে, অথচ এ ব্যাপারে প্রশাসক সংশ্লিষ্টদেরও কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। সরেজমিনে দেখা গেছে, চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন বসার স্থান ও ফাস্টফূডের দোকানগুলোতে নানা বয়সের মানুষ আড্ডা দিচ্ছিলো। পাশেই বসে স্কুল-কলেজ পডুয়া শিক্ষার্থী, স্থানীয় টোকাইসহ নানা বয়সী ধূমপায়ীরা ধূমপান করছে। এখনই কয়েকজন কলেজপড়–য়া শিক্ষার্থীকে জনসমাগম স্থলে ধূমপান করতে দেখা গেছে। পাবলিক প্লেসে কেন ধূমপান করছেন এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে অনিক নামে তাদের একজন বলে উঠলেন, কিসের পাবলিক প্লেস। খোলামেলা জায়গায় বসে সিগারেট খাচ্ছি এতে আবার ক্ষতির কী হলো। তাদের মত অনেকেই দেদারছে ধূমপান করছে কিন্তু কেই তাদেরকে ধূমপান করতে নিষেধ করার সাহস পাচ্ছে না। শফিক নামে সেখানে বেড়াতে আসা এক বিনোদনপ্রেমী বলেন, চিড়িয়াখানা, সুরভি উদ্যান, চিকলীপার্ক কেন রংপুরের প্রেসক্লাব, সুপারমার্কেট, জেলা পরিষদ মার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স যেখানেই আপনি যাবেন এসব ধূমপায়ীদের দেখা মিলবে। এরা অধিকাংশই স্থানীয় কিশোর গ্যাং কিংবা লোকাল লোকজন।

রংপুরে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ধূমপায়ীদের কারনে স্বাস্থ্যরঝুঁকি

রংপুরের গংগাচড়ায় তামাক উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে বিড়ি সিগারেট কোম্পানি গুলো নানা উদ্যোগ গ্রহন করেছে। রংপুর তামাক এর জন্য বিখ্যাত আর রংপুরের গংগাচড়ায় ব্যাপক হারে উৎপাদন হতো এই তামাক এটা সবার জানা কিন্তুু তামাক চাষ ধীরে ধীরে অলাভজনক হওয়ায় এখানকার কৃষক দিনে দিনে তামাক চাষ কমায় দিয়ে অন্যান্য ফসল যেমন ভূট্টা গম বোরো ধান ইত্যাদি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছিল।

কৃষকের উৎপাদিত তামাক বড় বড় কোম্পানি,আকিজ ট্যোবাকো,আবুল
টোব্যাকো,বি টি সি টোব্যাকো নাসির টোব্যাকো কোম্পানি ছাড়াও ছোট ছোট আরও অনেক বিড়ি সিগারেট ফ্যাক্টরী ক্রয় করে থাকেন। কিন্তুু ধীরে ধীরে তামাক উৎপাদন কমায় এসব কোম্পানি চাষিদের মাঝে তামাকের আগাম মুল্য নির্ধারণ বীজ বিতরন ও তামাক ক্রয় কার্ড দেওয়া সহ নানা উদ্যোগ গ্রহন করেছে।

এ বিষয়ে গংগাচড়ার কোলকোন্দ ইউনিয়নের বেশ কিছু কৃষক আমাদের প্রতিবেদক কে জানান ধীরে ধীরে আমরা তামাক চাষ কমায় দিয়ে ভূট্রা,বোরো ধান ও অন্যান্য ফসল উৎপাদন করছিলাম কিন্তু বর্তমান তামাক চাষ করলে বেশি লাভবান হওয়া যায়। অন্যান্য কৃষকের ন্যায় কোলকোন্দ আলেকিশামত গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম (২৮)জানান আমি গত বছর বি টি সি কোম্পানির তামাক ক্রয় কার্ড করে তামাক উৎপাদন করে লাভজনক হয়েছি তাই এবার আর ও বেশি করে তামাক লাগাবো। এখানকার কৃষক নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে তামাকের চাষ করে থাকে তাই এটাকে মাথায় রেখে কোম্পানি গুলো বিভিন্ন ভাবে তৎপরতা শুরু করেছেন।

বি টি সি কোম্পানির প্রতিনিধি সুজন জানান আমাদের কোম্পানির তামাকের প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে আমরা কৃষকদের মাঝে অগ্রিম বিক্রয় কার্ড বীজ বিতরণ করছি যাতে কৃষকরা উৎসাহীত হয়ে তামাক উৎপাদন করে আমাদের কোম্পানিতে বিক্রি করে। এ বছর গংগাচড়ায় প্রায় ১০০০ কৃষকের মাঝে এ কার্ড বিতরন করা হবে।

স্থানীয় সচেতন জনগন মনে করেন সরকার যেখানে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাক মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় গ্রহন করেছেন সেখানে কোম্পানি গুলোর তৎপরতায় কতটুকু সফল হবে তা বিবেচ্য বিষয়।

গংগাচড়ায় তামাক উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে বিড়ি সিগারেট কোম্পানির নানা উদ্যোগ গ্রহন।