আলমডাঙ্গার পীরের মাজারে গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৪ মে, ২০২১
  • ১৬৭ বার পঠিত

পীরের মাজারে গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যা চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার এরশাদপুর গ্রামের একটি ভণ্ড পীরের আশ্রমে মুক্তা মালা (৩২) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এবং ওই আশ্রমের ভণ্ড পীরসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আলমডাঙ্গা উপজেলার এরশাদপুর গ্রাম থেকে রোববার রাত ১১টার দিকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এর আগে ওই রাতেই বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত গৃহবধূ মুক্তা মালার বাবা।

 

গ্রেপ্তারকৃতদের সোমবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মামলা সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর গাংনী উপজেলার বাথানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। লোকমুখে শুনে মেয়ে মুক্তা মালাকে নিয়ে তিনি আলমডাঙ্গার এরশাদপুর গ্রামের ভণ্ড পীর পান্টু হুজুরের আশ্রমে যান চিকিৎসা নিতে। এক পর্যায়ে পান্টু হুজুরের খাদেম এরশাদপুর গ্রামের জহুরুল ইসলামের সাথে মুক্তা মালার প্রেম সম্পর্ক তৈরি হয়।

 

গত ৬-৭ মাস আগে তারা বিয়েও করেন। বিয়ের পর থেকে মুক্তা মালা তার স্বামীর সাথে পান্টু হুজুরের আশ্রমেই থাকতেন। হুজুরের খাদেম হিসেবে ওই আশ্রমে অনেক মেয়ে ও পুরুষ বসবাস করে। বিয়ের পর থেকেই জহুরুল ইসলামের মা জহুরা বেগম পুত্রবধূ মুক্তা মালাকে মেনে নেননি। তিনি তাকে নানা অত্যাচার করতেন। খেতে দিতেন না।

 

ঘরের ভেতর আটকে রাখতেন। পুত্রবধূ মুক্তা মালার ব্যাপারে তিনি তার ছেলে জহুরুল ও পান্টু হুজুরকে ফুঁসলাতেন। তারা সবাই মিলে মুক্তা মালার ওপর অমানসিক অত্যাচার শুরু করতেন। এক পর্যায়ে গতকাল রোববার সকাল ৮টার দিকে মুক্তা মালাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে তারা। পরে লাশের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে পান্টু হুজুরের ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রাখে তারা। কয়েক ঘন্টা পর লাশ দরবারের নিজস্ব ভ্যানে করে মুক্তা মালার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ঘটনাটি কাউকে না বলতে তার বাবাকে হুমকিও দেয়া হয়। পরে দুপুরে লাশ নিয়ে আলমডাঙ্গা থানায় হাজির হন নিহতের বাবা আব্দুর রশিদ।

 

পরে রাত ১০টার দিকে মুক্তা মালার পিতা আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে জহুরুল ইসলাম ও পান্টু হুজুরসহ ৪ জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে অভিযান চালিয়ে জহুরুল ইসলাম, তার মা জহুরা বেগম ও আশ্রমের ভণ্ড পীর সালাউদ্দীন ওরফে পান্টু হুজুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর কবীর বলেন, নিহত মুক্তা মালার লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।

 

নিহতের গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। গ্রেপ্তারকৃতদের সোমবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, পান্টু হুজুরকে এর আগেও বেশ কয়েকবার ইসলাম ধর্মকে বিকৃত করা, মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করাসহ নানা অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর