ফাইল ফটো

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিত্যক্ত মালামালের স্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৬৪ কেজি স্বর্ণ।  যার আনুমানিক মূল্য ৩২ কোটি টাকা।

গতকাল ২৮ ডিসেম্বর, শনিবার সন্ধ্যার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমদানি কার্গোতে অভিযান চালিয়ে পরিত্যক্ত অবস্থায় ওই স্বর্ণ উদ্ধার করেন বিমানবন্দরের কাস্টমস কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, গতকাল বিকাল ৫টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে বাংলাদেশ বিমানের বিজি-০৮৫ ফ্লাইট। এরপর সন্ধ্যার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমদানি কার্গোতে অভিযান চালান কাস্টমস কর্মকর্তারা।

সেখান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় তারা প্রতিটি ১০০ গ্রাম ওজনের মোট ৬৪০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করেন। উদ্ধার করা স্বর্ণের বারের ওজন ৬৪ কেজি, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৩২ কোটি টাকা বলে জানা গেছে।

স্বর্ণগুলো কারা এনেছে, কার কাছে যাওয়ার কথা ছিল সেটি তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছে কাস্টমস সূত্র। তারা আরো জানান, এ বিষয়ে একটি নিয়মিত মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

শাহজালাল বিমানবন্দরে পরিত্যক্ত মালামালের স্তূপে ৩২ কোটি টাকার স্বর্ণের বার!

 

১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় যেতে জাতীয় পার্টি (জাপা) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলো বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (আইইবি) মিলনায়তনে জাপার নবমতম জাতীয় সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি এই কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আমাদের ক্ষমতায় যেতে কিছু আসন কম ছিলো। সেই সময় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জেলে বসে আমাদের সমর্থন দিয়েছিলো। এ কারণে আমরা সেদিন সরকার গঠন করতে পেরেছিলাম। আমরা চির কৃতজ্ঞ। তাদের সেদিনের কথা আমরা ভুলিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় পার্টির বিরোধী দলে আসার পর তাদের দলে নতুন মাত্রা আসে। তারা জাতীয় সংসদে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের রাজনীতি করেনি। দেশ গঠনে জাতীয় পার্টি ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। আগামীতে জাতীয় পার্টি দেশ গঠনে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

৯৬ সালে ক্ষমতায় যেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলো জাপা

মেহেরপুরের গাংনীতে অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির (কর্মসৃজন)  পর্যায়ের অনুমোদিত প্রকল্প সমূহের রাস্তায় মাটি কাটা,স্কুল, ঈদগাহ,গোরস্থান কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি চলছে।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস ও পিআইসিদের মধ্যে টাকা ভাগাভাগির চুক্তি করে কাগজে কলমে মাষ্টার রোল করে এই প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করলেও কেউ দেখার নেয়।ফলে উপজেলায় গৃহীত প্রকল্পে কর্মসংস্থান কর্মসূচির অর্থ লুটপাট হচ্ছে।প্রতিটা প্রকল্প থেকে কমপক্ষে ৫ জন করে শ্রমিকের টাকা অফিস কেটে নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা, চেয়ারম্যান, মেম্বর ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের  ম্যানেজ করে পিআইসি(প্রকল্প চেয়ারম্যানরা) লক্ষ লক্ষ টাকা ভাগাভাগি করার মত দুর্নীতি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।বিগত ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে গাংনী উপজেলায় কাজ শুরু হলেও বেশীর ভাগ প্রকল্পে সন্তোষজনক শ্রমিকের দেখা মেলেনি।

উপজেলায়  অতিদরিদ্রদের জন্য নেয়া কর্মসংস্থান কর্মসূচিতে দলীয় বিবেচনায় শ্রমিকদের নামের তালিকা করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, পূর্ব তালিকার প্রকৃত হতদরিদ্র শ্রমিকদের নাম বাদ দিয়ে পিআইসিগণ স্বজনপ্রীতি ও আত্নীয়করণের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে নিজেদের অনুগত বিত্তবান লোকজনকে শ্রমিকদের তালিকাভুক্ত  করেছেন।ক্ষমতাসীন দলের গ্রাম ও ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি-সম্পাদকদের নাম রয়েছে এই তালিকায়। শ্রমিকদের নাম পরিবর্তন করার নিয়ম না থাকলেও ১ম পর্যায়ের তালিকাভুক্ত অনেক অসহায় শ্রমিকদের নাম বাদ দিয়ে অনেক নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সরেজমিনে তেঁতুলবাড়ীয়া ইউপির ২ টি প্রকল্প ঘুরে স্থানীয় লোকজন ও শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে ।তেঁতুলবাড়ীয়া ইউপির মেম্বর হ্যাবা  জানান, আমাদের লেবার সব ঠিক আছে। ৩৭ জন লেবারের মধ্যে ১৯ জন লেবার পাওয়া গেছে। মেম্বর জানান,পিআইও অফিসে টাকা দিতে হয়।পাশাপাশি হ্যাবা মেম্বর আরও জানান, আমার ৩৭ জন লেবারের মধ্যে চেয়ারম্যানের ২ জন, স্থানীয় নেতাদের ২ জন এবং অফিসে ফাইলিং এর জন্য টাকা দিতে হয়। আমরা নিয়মিত কাজ করলেও মেম্বর আমাদের মাত্র ১শ’ টাকা ৫০ টাকা দেয়। বাদবাকী টাকা দেবেনা বলে জানিয়েছে।

এছাড়া কার্ড মেম্বররা তাদের নিজের কাছে রেখে মনগড়া হাজিরা করছেন।আরও জানা গেছে , চেয়ারম্যান ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সুপারিশে প্রতিটা প্রকল্পে ৫ থেকে ১০ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যারা কখনই কাজে হাজিরা দেন না।তালিকায় নাম থাকার কারনে ব্যাংক  থেকে ভূয়া স্বাক্ষর দেখিয়ে  টাকা তুলে নিচ্ছেন।

এব্যাপারে গাংনী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপ সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, মেম্বরদের অভিযোগ সত্য নয়। পিআইসিদের সাথে টাকা উৎকোচ হিসাবে গ্রহন করা হয় না । অনুপস্থিত লেবারের টাকা দেয়া হয় না। বিগত বছরের কত টাকা সরকারী ফান্ডে ফেরত দেয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান।

গাংনীতে কর্মসৃজন কর্মসূচিতে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি

মেহেরপুরের গাংনীতে ১ কেজি গাঁজাসহ কোহিনুর বেগম (৪২) নামের এক মহিলাকে আটক করেছে পুলিশ।

আটককৃত কোহিনুর বেগম কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ গ্রামের শুকচাঁদ মন্ডলের মেয়ে।

শনিবার বিকেল ৫ টার দিকে গাংনী উপজেলার কাজীপুর গ্রামের বুড়িপোতাপাড়া এলাকা থেকে কোহিনুর বেগমকে আটক করে স্থানীয় পীরতলা ক্যাম্প পুলিশ।

গাংনী থানার ওসি ওবাইদুর রহমান জানান,কাজীপুর বুড়িপোতা এলাকায় মাদক পাঁচার হচ্ছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্থানীয় পীরতলা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এস আই অজয় কুমার কুন্ডু ও সহকারী এএসআই আহমেদ আলী সেখানে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় কোহিনুর বেগমকে আটক করা হয়। পরে তার কাছে থাকা ১ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে গাংনী থানায় মাদক দ্রব্য আইনে মামলা দায়ের পূর্বক আদালতে সোপর্দ করা হবে।

গাংনীতে ১ কেজি গাঁজাসহ মহিলা আটক

 

 

রুশ সেনাবাহিনীতে যুক্ত হলো শব্দের চেয়ে ২৭ গুণ দ্রুতগতির আন্তঃমহাদেশীয় অত্যাধুনিক হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র। ‘অ্যাভানগার্ড’ নামের রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম এ ক্ষেপণাস্ত্র গতকাল শুক্রবার মোতায়েন করেছে দেশটি।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বিষয়টি অবহিত করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেরগেই শোইগু। এ ঘটনাকে ঐতিহাসিক অভিহিত করে তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ক্ষেপণাস্ত্র বহরের প্রথম ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে।

রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, আন্তঃমহাদেশীয় হাইপারসনিক ‘অ্যাভানগার্ড’ রাডার ফাঁকি এবং দুই মেগাটন পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে সক্ষম।

ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম ইউনিটটি দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় উরাল পর্বতশ্রেণির ওরেনবার্গ অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান স্ট্র্যাটেজিক মিসাইল ফোর্সেসের প্রধান সেরগেই কারাকায়েভ।

এর আগে ২০১৮ সালের মার্চে ‘অ্যাভানগার্ড’ ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়টি সামনে এনে পুতিন বলেছিলেন, রাডার ফাঁকি দিয়ে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে গতিপথে তীক্ষ্ণ পরিবর্তন করে উল্কার গতিতে আঘাত হানবে এ ক্ষেপণাস্ত্র।

ওই বছরের ডিসেম্বরে উরাল পর্বতশ্রেণির দম্বারোস্কি ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্রটির পরীক্ষা চালানো হয়। এটি প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটার দূরের কামচাতকার কুরা শুটিং রেঞ্জের নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি নিজেদের সেনাবাহিনীতে একই ধরনের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে চীন। চীন-রাশিয়ার এমন পদক্ষেপে অস্বস্তিতে থাকা নতুন সামরিক কৌশলের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া বিশ্বের ক্ষমতাধর অন্য পরাশক্তিগুলোরও রীতিমতো ঘুম হারাম করে দিয়েছে রাশিয়ার হাইপারসনিক এই ক্ষেপণাস্ত্র।

রুশ সেনাবাহিনীতে শব্দের চেয়ে ২৭ গুণ গতির ক্ষেপণাস্ত্র, ঘুম হারাম-বিশ্বের

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়ীয়া গ্রামের মসজিদ কমিটি নিয়ে বিরোধের জেরে ইমদাদুল হক (৪৯) নামের এক ব্যক্তি হামলার শিকার হয়ে মারাত্মক জখম হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ২ টায় উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া মোল্লাপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। জখম হওয়া ইমদাদুল হক তেঁতুলবাড়ীয়া মোল্লা পাড়ার মৃত দাউদ হোসেনের ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শী একই গ্রামের আঃ বারীর ছেলে ইকবাল হোসেন জানান, জুম্মার নামার পড়ে বাড়ীতে ফিরে এসে গ্রামের চৌরাস্তার ঘোনার মোড়ে সাবেক মেম্বর আমানুল্লাহ এর সাথে হযরত ও মনিরুল ইসলামের বাকবিতন্ডে এক পর্যায়ে এ সংঘর্ষের সূচনা হয়।

পরে মাসুম পক্ষের লোকজন এসে ইমদাদুল হককে দেশীয় অস্ত্র ও লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে মাথা, বাম চোঁখ ও বাম পায়েসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে জখম করে। স্থানীয়রা ইমদাদুল হককে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এছাড়াও মাসুমের নেতৃত্বে একই পাড়ার রফাত চৌকিদারের ছেলে চান্দু (৪০), মৃত আজিবার বাইনের ছেলে হযরত (৫০) ও সোনা (৪০) মোফার ছেলে নাজিমুদ্দিন (৩০), মৃত মারফত আলীর ছেলে আনারুল ইসলাম ((৩৮), মৃত কেরামত আলীর ছেলে আঃ বারী (৪০), সিরাজুল ইসলামের ছেলে মনিরুল ইসলামসহ দেশীয় অস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে প্রতিপক্ষের বাড়ী-ঘরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।

এ বিষয়ে মাসুম জানান, মসজিদ কমিটির সভাপতি গত সাত বছরের হিসাব দেন না। তিনি কমিটির অন্যান্য সদস্যদের সাথে আলাপ না করে আদালতে মসজিদের জমি নিয়ে মামলা করেছে। তাছাড়া মসজিদের কমিটি নতুন ভাবে গঠনের বার বার দিন দেওয়ার পরেও বিভিন্ন অজুহাতে পূর্বের কমিটিকে বহাল রাখার পায়তারায় অতিষ্ঠ হয়ে মুসল্লিরা এ ধাওয়া পাল্লা ধাওয়ার ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে ইমদাদুলকে জখমের বিষয়ে তিনি জানান, আমি বা আমার কোন লোজজন তাকে আঘাত করেনি তাদের লোকজনের আঘাতে তিনি জখম হয়েছেন।
এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। দ্রত সমস্যা নিরসন করা না হলে যে কোন সময় বড় ধরনের সহিংসতা ঘটতে পারে। শেষ সংবাদ পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল।

গাংনী থানার ওসি ওবাইদুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন, তিনি জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। হামলার ঘটনায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গাংনীর তেঁতুলবাড়ীয়া গ্রামে মসজিদের কমিটি গঠন নিয়ে সংঘর্ষ-আহত দুই জন

 

নিখোঁজের ১০ দিন পর হারাগাছ থেকে এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার বিকেলে হারাগাছ পৌরসভার সারাইবাজার সংলগ্ন বায়তুল আমান জামে মসজিদের সেফটি ট্যাংক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত মঙ্গা মিয়া পার্শ্ববর্তী নিউ কাজিপাড়া এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে। সে ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতো। দুই মাস আগে চাকরি ছেড়ে বাড়িতে চলে যায় সে।

মঙ্গার মা শাহানা বেগমের অভিযোগ, গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে সারাই আমবাগান এলাকায় ইসলামী জলসা থেকে তার ছেলে মঙ্গাকে প্রতিবেশী লিয়ন ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে সে নিখোঁজ।

সেদিনের পর বহু খোজাখুজি করে তার সন্ধান না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে হারাগাছ থানায় জিডি করা হয়। শুক্রবার বিকেলে ব্যাডমিন্টন খেলতে গিয়ে মাদ্রাসা ছাত্ররা একটি মরদেহ দেখতে পায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তেন জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ এর উপ কমিশনার মুত্তাকি ইবনু মিনান জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত করলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

হারাগাছে নিখোঁজের ১০ দিন পর কিশোরের মরদেহ উদ্ধার

 

মেহেরপুরে গাংনীতে হিন্দা গ্রামের এইচ এম এইচ ভি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ‘গ্রন্থাগারিক’ পদের নিয়োগ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা রহমানের হস্তক্ষেপে বন্ধ হয়ে গেল। আজ শুক্রবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে চলমান নিয়োগ পরীক্ষাটি নিয়মতান্ত্রিকভাবে সংগঠিত না হওয়ায় নিয়োগের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিশেষসুত্রে জানা গেছে, লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে অনিয়তান্ত্রিকভাবে এ নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল।

আজ বেলা ১২ টার দিকে উপজেলা শিক্ষা অফিসে গিয়ে শিক্ষা অফিসার মীর হাবিবুল বাসার’র নিকট থেকে জানা গেছে, এইচ এম এইচ ভি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ”গ্রন্থাগারিক” পদে নিয়োগ পরীক্ষা ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। তবে তাঁর সাথে সাক্ষাৎকালে জানা গেছে, পরীক্ষা বোর্ডের ডিজির প্রতিনিধি এখনও এসে পৌঁছাননি। তাহলে পরীক্ষা কিভাবে নেওয়া হলো ? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, “তিনি আমাকে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য মৌখিকভাবে অনুমতি দিয়েছেন”।

উপজেলার সহড়াতলা গ্রামের আজগর আলীর ছেলে পরীক্ষার্থী মফিজুর রহমান অভিযোগ তুলে বলেন, “এইচ এম এইচ ভি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষার জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে যায়। সেখানে গিয়ে দুইজন পরীক্ষার্থী যারা অন্য স্কুলে চাকুরীরত আছে, তাদের পরীক্ষার্থী হিসাবে দেখতে পেয়ে আমি আশ্চর্য হই! এবং পরীক্ষা না দিয়ে বের হয়ে আসি। আমি তাদেরকে দেখে বুঝতে পেরেছি এখানে দুর্নীতি করা হচ্ছে। সে কারনে আমি পরীক্ষা বর্জন করেছি”।

নতুন ব্রজপুর গ্রামের পরীক্ষার্থী মহাসিন আলীর স্ত্রী শাহানাজ পারভীন পরীক্ষা কেন্দ্রে এক প্রশ্নের জবাবে জানায়, আমি কোথাও চাকুরী করি না। বিভিন্ন মারফতে জানা যায় যে, সে কাজিপুর মধ্যপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চাকুরীরত আছে। পরবর্তীতে তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে সে চাকুরী করার সত্যতা স্বীকার করে এবং সকালে মিথ্যা বলার জন্য অনুতপ্ত হয়।

হাড়াভাঙ্গা গ্রামের পরীক্ষার্থী আজিজুল হকের ছেলে মেহেদী হাসান সাহেবনগর বহুমূখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এমপিওভুক্ত হয়ে বহাল তবিয়তে চাকুরীরত আছে। সে জানায় আমি ভেবেছিলাম গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ হবে সে জন্য আমি পরীক্ষা দিতে এসেছিলাম। তাহলে তিনি দরখাস্ত করার সময় কি স্কুলের নাম দেখেননি ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।

নিয়োগ বোর্ডের ডিজির প্রধান হিসেবে মেহেরপুর সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সামস আরা বেগম উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তিনি অসুস্থ এবং ডাক্তার দেখানোর অজুহাতে অনুপস্থিত থাকেন। এসময় তিনি তাঁর উচ্চমান সহকারী আবুল কালাম আজাদকে দায়িত্ব দেন বলে জানা গেছে। তবে উচ্চমান সহকারী আবুল কালাম আজাদ জানান, “আমিও একটি বিশেষ কারণে পরীক্ষার সময় উপস্থিত হতে পারি নাই, তাই প্রধান শিক্ষককে পরীক্ষাটি স্থগিত করে দেওয়ার জন্য বলেছি। পরে কোন একদিন পরীক্ষাটি নিয়ে নেওয়া হবে”।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা রহমান জানান, “ এ নিয়োগের বিষয়টি আমি জানতাম না। তবে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে নিয়োগ পরীক্ষাটি নেওয়ায় তা স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে”।

তথ্যঃ গাংনীর সংবাদ

গাংনীতে নিয়োগ বানিজ্যে ইউএনও’র হস্তক্ষেপ

 

অর্থের অভাবে পড়াশোনা বন্ধ হওয়া এক শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নিয়েছেন রংপুরের পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার। তাপস সরকার নামে ওই শিক্ষার্থী এবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সি’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় ২৯তম স্থান অর্জন করেছেন। আর্থিক দীনতায় পরিবারের পক্ষে তার পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি পুলিশ সুপার বিপ্লবের নজরে আসে।

বৃহস্পতিবার তাপসের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য নগদ অর্থ তুলে দেন বিপ্লব। এসময় তিনি তাপসের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সবধরনের সহায়তা দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

জানা যায়, রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার রহিমাপুর খিয়ারপাড়া গ্রামে বাড়ি তাপস সরকারের। লেখাপড়ার পাশাপাশি কাজ করেন কৃষি ক্ষেতে। বাবা পুতুল চন্দ্র সরকার রংপুর শহরে রিকশা চালাতেন। কিন্তু তিন বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে তিনি এখন কর্মোক্ষম। মা মালতী রানী অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। অভাবের সংসারে পড়াশোনার হাল ছাড়েননি তাপস। ২০১৬ সালে তারাগঞ্জের ঘনিরামপুর বড়গোলা উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৪.৮৩ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। এছাড়া ২০১৮ সালে বাণিজ্য বিভাগে থেকে একই পয়েন্ট পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। শত কষ্টেও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে ভর্তি ফরম তোলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ‘সি’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা মেধা তালিকা ২৯তম স্থান লাভ করেন। ৫ জানুয়ারির মধ্যে ভর্তির সুযোগ থাকলেও অর্থ সংকটে তাতে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। পরিবারের সদস্যরাও চেষ্টা করেও ভর্তির টাকা জোগাড়ে ব্যর্থ হয়। এ নিয়ে জাতীয় একটি দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে বিষয়টি নজরে আসে পুলিশ সুপার বিপ্লব সরকারের।

বৃহস্পতিবার বিকালে রংপুর জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ডেকে আনেন তাপসকে। ভর্তি বাবদ তুলে দেন নগদ ১৫ হাজার টাকা। এসময় পুলিশ সুপার তার পড়াশোনার সব দায়িত্ব নেন।

পুলিশ সুপারের কাছ থেকে এমন সহযোগিতায় খুশি তাপস। পুলিশ কর্মকর্তাকে কৃতজ্ঞতা জানাতেও ভুলেননি। তাপস বলেন, ‘আমার পরিবারের সামর্থ্য ছিল না বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করার। এখন আমি ভর্তি হতে পারব। … আমি অনেক খুশি।’

মেধাবী শিক্ষার্থীর পড়াশোনা চালাতে এগিয়ে আসায় প্রশংসা কুড়িয়েছে রংপুরের পুলিশ সুপার। এ ঘটনায় ছবিসহ একটি পোস্ট ফেসবুকে ছাড়েন তিনি। বর্তমানে তিনি সোস্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছায় ভাসছেন। অনেকে লিখেছেন, ‘প্রতিটি জেলায় বিপ্লব কুমারের মতো একজন পুলিশ কর্মকর্তা দরকার। তাহলে পুলিশের প্রতি মানুষের ধারণা পাল্টাবে।’ কেউ লিখেছেন- পুলিশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করলেন বিপ্লব কুমার সরকার স্যার।

তাপসের কাছ থেকে তার জীবনের কষ্টের গল্প শুনে ব্যর্থিত হয়েছে পুলিশ সুপার নিজেও। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন রাতে অনলাইনে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা পড়ি। হঠাৎ বুধবার বিষয়টি আমার নজরে আসে। সংবাদটি পড়ার পর আমার খুবই খারাপ লাগছিল। ভাবলাম মাত্র কিছু টাকার জন্য পড়াশোনা করতে পারবে না, তা তো হবে না। রাতেই স্থানীয় থানা তারাগঞ্জের ওসিকে বিষয়টি নিয়ে এসএমএম করি। পরের দিন ওসি সাহেব তাকে নিয়ে আমার অফিসে আসেন। তাপসের মুখ থেকে তার কষ্টের কথা শুনে আমি নিজেও আবেগ ধরে রাখতে পারিনি।’

‘আমি তাপসের ভর্তির জন্য যা প্রয়োজন ছিল দিয়েছি। পড়াশোনা চালিয়ে যেতে যে সহযোগিতা প্রয়োজন তা দেব। আমি চাই তার স্বপ্ন পূরণ হোক।‘

সমাজের অনেকের সামর্থ্যবান লোক আছে তাদেরকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বিপ্লব। বলেন, ‘একটু একটু করে যদি আমরা ভালো কাজে জড়িয়ে যাই তাহলে সমাজ পরিবর্তন হয়ে যাবে; মানুষের কষ্টও পরিবর্তন হয়ে যাবে। ২০৪১ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন, তা গড়বে তাপসের মতো মেধাবীরা। দোয়া করি তাপস সেই উন্নত বাংলাদেশ একজন কারিগর হিসেবে গড়ে উঠুক।’

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর রেকর্ডসংখ্যক ২৩ বার শ্রেষ্ঠ উপ-কমিশনার (ডিসি) হিসেবে পুরস্কৃত হন তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার। ১৩ জুন তাকে রংপুর জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে বদলি করা হয়। তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জে।

(ঢাকাটাইমস/২৭ডিসেম্বর/এসএস/জেবি)

তাপসের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিলেন- এসপি বিপ্লব